ফেনীতে সংযোগ সড়ক ছাড়াই নদীর ওপর চার সেতু
Published: 19th, June 2025 GMT
ফেনীতে সংযোগ সড়ক ছাড়াই নদীর ওপর দাঁড়িয়ে আছে চারটি সেতু। জেলার তিনটি উপজেলায় চারটি নদীর ওপর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উদ্যোগে এসব সেতু নির্মিত হয়। তবে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও জমি অধিগ্রহণ–সংক্রান্ত জটিলতায় তৈরি হয়নি সংযোগ সড়ক।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ফেনী জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ফেনী জেলার দাগনভূঞা, সোনাগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলায় প্রায় ৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি সেতু নির্মাণ করছে এলজিইডি। এর মধ্যে ডাকাতিয়া এবং পাহালিয়া নদীর ওপর সেতু নির্মাণের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স হক ট্রেডার্স এবং ছোট ফেনী নদীর ওপর সেতু নির্মাণের কাজ করে মেসার্স ছালেহ আহমদ, মুহুরী নদীর ওপর সেতু নির্মাণকাজ করে মেসার্স গ্রিনল্যান্ড সালেহ জেবি।
নির্মিত সেতুগুলোর বর্তমান অবস্থাডাকাতিয়া নদীর ওপর দাগনভূঞার সিলোনিয়ায় ৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮১ মিটার দৈর্ঘ্যের যে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে, তার কাজ শুরু হয়েছিল ২০২১ সালের ২৬ জানুয়ারি। তিন বছর পর সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০২৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর। সেতুটি নির্মাণের দেড় বছর অতিবাহিত হলেও সংযোগ সড়ক এখনো না থাকায় চলাচলের উপযোগী হয়ে ওঠেনি।
ছোট ফেনী নদীর ওপর দাগনভূঞার মাতুভূঞায় ৯ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের যে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে, তার কাজ শুরু হয়েছিল ২০২৪ সালের ১১ জানুয়ারি। পাঁচ মাস পর একই বছরের ৩০ মে কাজটি স্থগিত করা হয়। তত দিনে মূল সেতু নির্মাণকাজ হয়ে যায়।
মুহুরী নদীর ওপর ছাগলনাইয়ার পাঠাননগরে ৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের যে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে, তার কাজ শুরু হয়েছিল ২০২১ সালের ২৯ জানুয়ারি। সাড়ে চার বছর পর সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয় চলতি বছরের ৫ জুন। সেতুটি নির্মাণকাজ শেষ হলেও সংযোগ সড়ক এখনো না থাকায় চলাচলের উপযোগী হয়ে ওঠেনি।
কালিদাস পাহালিয়া নদীর ওপর সোনাগাজীর নবাবপুরে ৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৯৬ মিটার দৈর্ঘ্যের যে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে, তার কাজ শুরু হয়েছিল ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর। তিন বছর পর সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০২৩ সালের ২৯ নভেম্বর। সেতুটি নির্মাণের দেড় বছরেরও বেশি সময় অতিবাহিত হলেও সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক না হওয়ায় এখনো চলাচলের উপযোগী হয়ে ওঠেনি।
ফেনীর দাগনভূঞার মাতুভূঞায় ছোট ফেনী নদীর ওপর নির্মিত এই সেতুটিরও নেই কোনো সংযোগ সড়ক.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: নদ র ওপর স ন র ম ণ কর র দ গনভ ঞ স য গ সড়ক পর স ত হয় ছ ল
এছাড়াও পড়ুন:
রাকসু সম্পন্ন করতে সক্রিয় অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত শিক্ষক পরিষদের
শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ডাকা কমপ্লিট শাটডাউনের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট প্রতিনিধি নির্বাচনে শিক্ষকদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পরিষদ।
পরিষদ জানিয়েছে, রাকসু সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে শিক্ষকদের সক্রিয় অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরো পড়ুন:
নিখোঁজের ২ দিন পর নদীতে মিলল কলেজছাত্রের লাশ
রাবি উপ-উপাচার্যসহ শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পরিষদের জরুরি সভা শেষে এক সংবাদ বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
পরে সিদ্ধান্তের বিষয়ে বাংলাদেশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পরিষদ রাবি শাখার সভাপতি অধ্যাপক ড. জে এ এম সাকিলউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পরিষদের রাবি শাখার উদ্যোগে একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে শিক্ষার্থীদের বহুল প্রত্যাশিত রাকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে এ সংক্রান্ত অফিসিয়াল কার্যক্রমে শিক্ষকদের সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
একইসঙ্গে বিজ্ঞপ্তিতে গত ২০ সেপ্টেম্বর ক্যাম্পাসে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় জড়িত দোষীদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জোর দাবি জানানো হয়।
গণমাধ্যমের সামনে সিদ্ধান্তের বিষয়ে সংবাদ বিবৃতি প্রদানের সময় অন্তত ১০ জন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় কতজন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন এবং এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষকের মতামত কি না- এমন প্রশ্ন করলে কোনো উত্তর মেলেনি।
এর আগে, রাবিতে কর্মরতদের সন্তানদের ভর্তির জন্য আগে থেকেই ৪ শতাংশ পোষ্য কোটা ছিল। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে চলতি বছরের ২ জানুয়ারি পোষ্য কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব। এরপর থেকেই শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পোষ্য কোটাকে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা দাবি করে একের পর এক আন্দোলন শুরু করেন।
সর্বশেষ গত ১৭ সেপ্টেম্বর এক চিঠিতে ১৮ তারিখের মধ্যে দাবি আদায় না হলে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ঘোষণা দেন তারা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে জরুরি অ্যাকাডেমিক কমিটির সভা ডাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সভায় ১০ শর্তে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু এর বিরুদ্ধে আবার টানা আন্দোলনে নামেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) মাঈন উদ্দিনসহ প্রশাসনে থাকা তিনজন কর্মকর্তা জুবেরী ভবনে শিক্ষার্থীদের হাতে লাঞ্ছিত হন। পরে জুবেরী ভবনে উপ-উপাচার্যসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে সেখানে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ করতে থাকেন। রাতে জুবেরী ভবনের সামনে থেকে অবরোধ উঠিয়ে নিয়ে শিক্ষার্থী উপাচার্যের বাসভবনের সামনে জড়ো হন। পরে গভীর রাতে হল থেকে বের হয়ে এসে ছাত্রীরাও তাদের সঙ্গে যোগ দেন। তারা মাঝরাত পর্যন্ত উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
পরে উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব মধ্যরাতে বাসার প্রধান ফটকের সামনে এসে ঘোষণা দেন, প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় ভর্তি আপাতত স্থগিত। এ নিয়ে রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হবে।
এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শনিবার রাতেই কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। ঘোষণা অনুযায়ী রবিবার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেন তারা। এদিন তারা ঘোষণা দেন, প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় সন্তানদের ভর্তির সুযোগ না দিলে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) থেকে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে যাচ্ছেন তারা। তবে ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য রাকসু নির্বাচন এ কর্মসূচির বাইরে থাকবে।
এ ঘোষণা পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত আছে।
অন্যদিকে, সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ, রাকসু ফর র্যাডিকাল চেঞ্জ, সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ ও ইউনাইটেড ফর রাইটস প্যানেলের প্রার্থীরা দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মাকেটে সংবাদ সম্মেলন করে। সেখানে তারা পোষ্য কোটা ইস্যুতে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চলমান আন্দোলন কর্মসূচির মধ্যে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে পারে না দাবি করে নির্বাচনের তারিখ পেছানোর দাবি জানিয়েছেন।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী