বাংলাদেশে চলে আসা কোচের জায়গা নিলেন ব্রাভো
Published: 20th, June 2025 GMT
ক্যারিবীয়ান প্রিমিয়ার লিগের (সিপিএল) গত আসরে ট্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের কোচ ছিলেন ফিল সিমন্স। তবে গত বছর বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব নেন তিনি। আগামী মৌসুমের জন্য তাঁর জায়গায় ডোয়াইন ব্রাভোকে দায়িত্ব দিয়েছে ট্রিনবাগো।
নতুন এই দায়িত্ব পাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে সিমন্সের প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছেন ব্রাভো। বলেছেন, ‘ট্রিনবাগো আমার হৃদয়ের খুব কাছে থাকা একটি দল, এমন একটা দলের প্রধান কোচ হওয়ার সুযোগ পাওয়ায় আমি সম্মানিত বোধ করছি। ফিল সিমন্স গত কয়েক বছর এই দলে যেভাবে কাজ করেছেন, সে জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে তাঁকে ধন্যবাদ জানাই। আমি এখন নতুন চ্যালেঞ্জের জন্য মুখিয়ে আছি।’
ট্রিনবাগোর হয়ে সিপিএলে লম্বা সময় খেলোয়াড়ও ছিলেন ব্রাভো। ২০১৩ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মোট ১১টি আসরে খেলে পাঁচবার শিরোপা জিতেছেন তিনি। এর মধ্যে ৯ বারই মাঠে নেমেছেন ট্রিনবাগোর হয়ে।
২০২২ সালে আইপিএল থেকে অবসর নেওয়ার পর থেকেই কোচিং শুরু করেন ব্রাভো। ২০২৩ ও ২০২৪ সালে চেন্নাই সুপার কিংসের বোলিং পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন। আইপিএলের গত আসরে ছিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের মেন্টর। আইএল টি–টোয়েন্টিতে একই ফ্র্যাঞ্চাইজির দল আবুধাবি নাইট রাইডার্সের প্রধান কোচের দায়িত্বও পালন করেছেন।
এর মধ্যে জাতীয় দলেও কাজ করেছেন ব্রাভো। ২০২৪ সালের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বোলিং পরামর্শক ছিলেন। এই টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছেছিল আফগানরা।
আগামী ২৪ আগস্ট থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হবে এবারের সিপিএল। গত আসরে পয়েন্ট টেবিলের ৩ নম্বরে ছিল ট্রিনবাগো। পরে এলিমেনটরে তারা হেরে যায় বার্বাডোজ রয়্যালসের কাছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে তেল চোর সিন্ডিকেটের প্রধান আওয়ামী লীগ নেতা মেহেদী গ্রেপ্তার
সিদ্ধিরগঞ্জে তেল চোর সিন্ডিকেটের প্রধান এবং আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে পরিচিত আনোয়ার হোসেন মেহেদীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
সাম্প্রতিক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত সহিংসতা ও হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় দীর্ঘ সময় পলাতক থাকার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হলো।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে র্যাব-১১ এর একটি বিশেষ দল তাকে আটক করে। পরে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে তাকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়। দুপুরে পুলিশ তাকে আদালতে সোপর্দ করেছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহীনূর আলম রোববার দুপুরে এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
থানা সূত্রে জানা যায়, আনোয়ার হোসেন মেহেদীর বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দুটি হত্যা মামলা ও একটি হত্যাচেষ্টার মামলাসহ মোট তিনটি মামলা রয়েছে। এই মামলাগুলোতে তিনি এজাহার ভুক্ত আসামি এবং দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন।
মামলা গুলো হলো সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এফআইআর নং-২৫ (তাং- ২৬/৮/২০২৪), এফআইআর নং-২৭ (তাং- ২৭/৮/২০২৪) এবং এফআইআর নং-২৫ (তাং- ২২/১০/২০২৪)। এর পাশাপাশি ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে জালিয়াতিসহ আরও একাধিক মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, মেহেদী হত্যা মামলার পলাতক আসামি ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের একটি চৌকস দল তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আনোয়ার হোসেন মেহেদী সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল বর্মাস্ট্যান্ড এলাকার আফির উদ্দিন মাদবরের ছেলে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, মেহেদী ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট তৈরি করে গোদনাইলের পদ্মা অয়েল ডিপো থেকে তেল চুরি করে আসছিল। অভিনব কৌশলে তেল চুরি করে তারা কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তুলেছে।
তার এই অবৈধ কর্মকাণ্ডের কারণে রাষ্ট্র যেমন বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে, তেমনি এলাকায় একটি অপরাধী চক্রও গড়ে উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, মেহেদী তার রাজনৈতিক পরিচয়কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে এলাকায় এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। তার তেল চোর সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পেত না।
প্রতিবাদ করলে হুমকি-ধমকি ও নির্যাতনের শিকার হতে হতো। তেল চুরির পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে ভূমি দখল ও চাঁদাবাজির মতো গুরুতর অভিযোগও রয়েছে।
স্থানীয়রা আরও জানান, দেশব্যাপী কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আনোয়ার হোসেন মেহেদী ও তার বাহিনী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সহিংস অবস্থান নেয়।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি তার দলবল নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালান, যা পরে হত্যা ও হত্যাচেষ্টার মতো ঘটনায় রূপ নেয়। এই সহিংসতাকে কেন্দ্র করেই তার বিরুদ্ধে মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছিল, যার ভিত্তিতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হলো।
তার গ্রেপ্তারের খবরে এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। সাধারণ মানুষ এই শীর্ষ তেল চোর ও তার সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্যদেরও আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে।