গাজা যুদ্ধ চলমান থাকায় টানা দ্বিতীয় বছরের মতো শিশুদের বিরুদ্ধে গুরুতর সহিংসতার কারণে ইসরায়েলকে ‘কালো তালিকাভুক্ত’ করেছে জাতিসংঘ। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২৪ সালে যুদ্ধপীড়িত অঞ্চলে শিশুদের ওপর সহিংসতা ‘চরম মাত্রায়’ পৌঁছেছে। এর মধ্যে গাজা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে সবচেয়ে বেশি সহিংসতা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

‘সশস্ত্র সংঘাতে শিশু’বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের তুলনায় গত বছর বিশ্বব্যাপী শিশুদের বিরুদ্ধে গুরুতর সহিংসতার ঘটনা ২৫ শতাংশ বেড়েছে। ২০২৪ সালে মোট ৪১ হাজার ৩৭০টি গুরুতর সহিংসতা যাচাই করে দেখা গেছে, এর মধ্যে শিশুদের হত্যা, শারীরিকভাবে আহত করা, যৌন সহিংসতা এবং স্কুল-হাসপাতালে হামলার মতো ঘটনা রয়েছে।

এর মধ্যে শুধু ফিলিস্তিন ভূখণ্ড ও ইসরায়েলে ২ হাজার ৯৫৯ শিশুর বিরুদ্ধে ৮ হাজার ৫৫৪টি গুরুতর সহিংসতার ঘটনা নিশ্চিত করেছে জাতিসংঘ। এই সংখ্যা অনুযায়ী, গাজায় গত এক বছরে  ১ হাজার ২৫৯  ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে এবং ৯৪১ জন আহত হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, নিহত শিশুর সংখ্যা আরও অনেক বেশি। জাতিসংঘ জানিয়েছে, ২০২৪ সালে গাজায় আরও ৪ হাজার ৪৭০ শিশু নিহতের তথ্য যাচাই চলছে। অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ৯৭ ফিলিস্তিনি শিশুর মৃত্যুর তথ্যও নিশ্চিত করেছে জাতিসংঘ। সেখানে ৩ হাজার ৬৮৮টি শিশু অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। খবর আলজাজিরার

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

শিশুদের ওপর মারাত্মক সহিংসতার জন্য আবারও জাতিসংঘের কালোতালিকায় ইসরায়েল

জাতিসংঘ দ্বিতীয় বছরের মতো ইসরায়েলকে ‘কালোতালিকায়’ অন্তর্ভুক্ত করেছে। বিশ্ব সংস্থার এই তালিকায় এমন দেশগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যারা সশস্ত্র সংঘর্ষে শিশুদের ওপর গুরুতর নির্যাতন চালিয়েছে। এমন এক সময় ইসরায়েলকে কালো তালিকাভুক্তির ঘোষণা এসেছে, যখন গাজায় প্রায় ২০ মাস ধরে নৃশংস হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।

গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত নতুন প্রতিবেদনে জাতিসংঘ বলেছে, ২০২৪ সালে সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে শিশুদের ওপর সহিংসতা ‘নজিরবিহীন মাত্রায়’ পৌঁছেছে। আর শিশুদের অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে গাজা উপত্যকা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে। ইসরায়েলি বাহিনীই এসব ঘটনার জন্য দায়ী।

‘চিলড্রেন ইন আর্মড কনফ্লিক্ট’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের তুলনায় গত বছর বিশ্বব্যাপী শিশুদের ওপর গুরুতর সহিংসতা ২৫ শতাংশ বেড়েছে। এতে বলা হয়েছে, ১৮ বছরের কম বয়সী শিশুদের বিরুদ্ধে ৪১ হাজার ৩৭০টি গুরুতর সহিংসতার তথ্য যাচাই করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হত্যা ও অঙ্গহানি, যৌন সহিংসতা, স্কুল ও হাসপাতালের ওপর হামলার ঘটনা।

এসব ঘটনার মধ্যে শুধু অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড ও ইসরায়েলে ২ হাজার ৯৫৯ শিশুর ওপর ৮ হাজার ৫৫৪টি গুরুতর সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এগুলোর মধ্যে ২ হাজার ৯৪৪টি ফিলিস্তিনি শিশু ও ১৫টি ইসরায়েলি শিশু।

জাতিসংঘ নিশ্চিত করেছে, গাজায় ১ হাজার ২৫৯ ফিলিস্তিনি শিশু নিহত ও ৯৪১ শিশু আহত হয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর এই সহিংসতা শুরু হয়েছিল। ওই দিন থেকে ইসরায়েল গাজায় টানা নৃশংস ও নির্বিচার বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা আরও অনেক বেশি। জাতিসংঘ বলেছে, ইসরায়েলের অধিকৃত এলাকায় ২০২৪ সালে নিহত আরও ৪ হাজার ৪৭০ শিশুর তথ্য যাচাইয়ের কাজ চলছে।

জাতিসংঘ বলেছে, পূর্ব জেরুজালেমসহ অধিকৃত পশ্চিম তীরে ৯৭ ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হওয়ার তথ্যও তারা পেয়েছে। সেখানে শিশুদের ওপর সহিংসতার মোট ৩ মোট ৬৮৮টি ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে লেবাননে ইসরায়েলের চালানো হামলার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে গত বছর পাঁচ শতাধিক শিশু নিহত বা আহত হয়েছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেছেন, ‘অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড ও ইসরায়েলে শিশুদের ওপর এত মাত্রায় গুরুতর সহিংসতার ঘটনায় আমি মর্মাহত।’ তিনি বলেন, জনবহুল এলাকায় বিস্ফোরক অস্ত্রের ব্যাপক ব্যবহার ভয়াবহ ছিল।

গুতেরেস আবারও আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যেখানে শিশুদের সুরক্ষার জন্য বিশেষ নিয়ম রয়েছে, স্কুল ও হাসপাতাল রক্ষার কথা বলা হয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। যেকোনো সামরিক হামলায় সাধারণ জনগণের ক্ষতি এড়াতে হবে।

ইসরায়েলের জাতিসংঘ মিশন এখনো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-কাসেম ব্রিগেডস এবং ইসলামিক জিহাদের আল-কুদস ব্রিগেডসকেও দ্বিতীয়বারের মতো এই কালোতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

গাজা ছাড়াও ২০২৪ সালে যেসব দেশে শিশুদের ওপর সবচেয়ে বেশি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে সেগুলো হচ্ছে—কঙ্গো প্রজাতন্ত্র (প্রায় ৪ হাজার), সোমালিয়া (প্রায় ২ হাজার ৫০০), নাইজেরিয়া (প্রায় ২ হাজার ৫০০), হাইতি (প্রায় ২ হাজার ২০০)।

শতকরা হারে সবচেয়ে বেশি সহিংসতা বেড়েছে—লেবাননে (৫৪৫ শতাংশ), মোজাম্বিকে (৫২৫ শতাংশ), হাইতিতে (৪৯০ শতাংশ), ইথিওপিয়ায় (২৩৫ শতাংশ) ও ইউক্রেনে (১০৫ শতাংশ)।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা অব্যাহত, শুক্রবারের হামলায় আরও ৮২ ফিলিস্তিনি নিহত
  • বাংলাদেশে চলে আসা কোচের জায়গা নিলেন ব্রাভো
  • ইরান–ইসরায়েলের অর্থনীতি এই সংঘাত কত দিন চালিয়ে নিতে পারবে
  • কক্সবাজারে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু
  • শিশুদের ওপর মারাত্মক সহিংসতার জন্য আবারও জাতিসংঘের কালোতালিকায় ইসরায়েল
  • যুক্তরাষ্ট্রে অর্থপাচারের দায়ে ভারতীয় শিক্ষার্থীর কারাদণ্ড  
  • জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মরণে নির্মাণ হবে গণমিনার
  • চট্টগ্রামে সাবেক এমপি ফজলে করিম নতুন ২ মামলায় গ্রেপ্তার
  • সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের নামে জমায় উল্লম্ফন