হামলায় শিক্ষার্থীর পা কেটে ফেলার ঘটনায় বিক্ষোভ
Published: 23rd, June 2025 GMT
শেরপুরের নকলায় হামলায় শিক্ষার্থীর পা কেটে ফেলার ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করা হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বারইকান্দি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে বের হয়। প্রায় ৬ কিলোমিটার সড়ক প্রদক্ষিণ করে নকলা পৌর শহরে আসে পৌঁছায়। মিছিলে অংশ নেন কয়েকশ প্রতিবাদকারী। কর্মসূচির আয়োজন করে বারইকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে পুরাতন হলপট্টি এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করা হয়। এ সময় পা
হারানো শাকিলের বাবা আমির হোসেন কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, ‘আমরা গরিব, তাই বাড়িতে ঢুইক্কা ছেলেরে কোপাইছে। সারা জীবনের জন্য ছেলেটা পঙ্গু হইয়া গেল! এখন ওরে কে দেখবে? আমরা ন্যায় বিচার চাই।’
ভুক্তভোগী শাকিলের মা ভানু বেগম চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বলতে থাকেন, ‘ছেলের পা গেছে, বিচার তো দূরের কথা! অহন বাড়িতে থাকবার পারতাছি না। মাইরা ফেলবার চায়। আসামিরা বুক ফুলাইয়া কয়, একজনের এক পা গেছে। এর পর যারা বেশি কথা বলবে, মামলা করবে তাদের দুই পা যাবে। আমরা কী দোষ করছি? আমগরে ওপর এত অত্যাচার কেন?’
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন শাকিলের ফুফু ময়না বেগম, বড় বোন কোকিলা বেগমসহ বন্ধু-বান্ধব ও এলাকাবাসী। এ সময় ঢাকা-শেরপুর মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
উল্লেখ্য, সহপাঠীর সঙ্গে কথাকাটাকাটির জেরে নবম শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থী শাকিল মিয়াকে গত ১৫ জুন তার সহপাঠী হাসিবুল রাম দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। পরে তার বাঁ পায়ের হাঁটুর নিচ থেকে কেটে ফেলা হয়। এ ঘটনায় হাসিবুল, তার ভাই মো.
এ ব্যাপারে নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান সমকালকে বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যে কোনো সময় ধরা পড়বে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের ডিপিপি অনুমোদনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) দ্রুত অনুমোদন ও বাস্তবায়নের দাবিতে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা-বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কের হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় তাঁরা দাবি বাস্তবায়নে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন।
মানববন্ধনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, স্থায়ী ক্যাম্পাসের ডিপিপি দ্রুত অনুমোদনের জন্য যদি সরকারের কাছে থেকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কোনো আশ্বাস না পাওয়া যায়, তাহলে নির্ধারিত সময়ের পর ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।
শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপিপির অনুমোদন নিয়ে ক্রমাগত অবহেলা ও কালক্ষেপণে তাঁরা চরমভাবে হতাশ ও ক্ষুব্ধ। এ জন্য ২৪ জুলাই থেকে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পৃথক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অংশ হিসেবে মানববন্ধন, মহাসড়কে প্রতীকী ক্লাস, প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। তবে সরকারের তরফ থেকে এ পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
এর আগে আজ সকাল থেকে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অর্ধবেলা প্রশাসনিক কর্মবিরতি দিয়ে বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে প্রকল্পটি প্রস্তাবিত হয় ৯ হাজার ২০০ কোটি টাকায়। এরপর সাতবার সংশোধনের পর সবশেষ ৫১৯ কোটি ১৫ লাখ টাকায় নেমে আসে। প্রকল্প মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৫ সালের মার্চ থেকে ২০২৯ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির বাংলা, সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি, সংগীত ও ব্যবস্থাপনা নামে পাঁচটি বিভাগে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ২০০ জন। সেই সঙ্গে আছেন ৩৪ জন শিক্ষক, ৫৪ কর্মকর্তা ও ১০৭ জন কর্মচারী। পৌর শহরের শাহজাদপুর মহিলা কলেজ, সাইফুদ্দিন ইয়াহিয়া ডিগ্রি কলেজসহ ভাড়া করা দুটি বাড়িতে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম।