ঘুমের সঙ্গে খাবারের একটি সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। বলা হয়ে থাকে যে, ‘‘বাংলাদেশে ঘুমানোর উপযুক্ত সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি।’’ অথচ উন্নতজীবন যাপনের জন্য ঘুমের সময়সূচি ঠিক রাখা যেমন জরুরি তেমনি ঘুমানের কত সময় আগে খাবার গ্রহণ করা উচিত, তা নির্ধারণ করাও জরুরি। কেননা ঘুমানোর সময়টুকুতে শরীর কোষ মেরামত হতে থাকে। 

ভারতীয় কার্ডিয়োলজিস্ট অলোক চোপড়া বলেন, ‘‘ঘুমোতে যাওয়ার অন্তত ৩ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার গ্রহণ করা উচিত।’’

শারীরিকভাবে ফিট থাকার জন্য বেশিরভাগ বলিউড অভিনেতা, অভিনেত্রীরা সন্ধ্যা৭টার মধ্যেই ডিনার সেরে ফেলেন। তাদের মধ্যে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করেন, তারাও ঘড়ি ধরে সন্ধ্যার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে নেন। এই অভ্যাস স্বাস্থ্যের জন্যই ভালো বলে জানিয়েছেন ডা.

চোপড়া। 

আরো পড়ুন:

থাইরয়েড হলে কীভাবে বুঝবেন

হেড অ্যান্ড নেক ক্যান্সারের লক্ষণ

মোট কথা শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য আপনি ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করুন বা না করুন, রাতে ঘুমোতে যাওয়ার অন্তত ৩ ঘণ্টা আগে ডিনার শেষ করার চেষ্টা করুন।

ঘুমের মধ্যে শরীরে যা যা ঘটে
ডা. চোপড়ার ভাষ্য, ‘‘ঘুমের মাধ্যমে শরীর বিশ্রাম পায়। এই সময়টুকু হচ্ছে শরীর মেরামত, পুনরুদ্ধার এবং পুনরুজ্জীবিত করার সময়। খাবার খেয়েই ঘুমিয়ে পড়লে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। আর শরীর ঠিকমতো বিশ্রাম নিতে পারে না। তখনও তাকে ওই খাবার হজম করার কাজ করে যেতে হয়।’’

ঘুমানোর ৩ ঘণ্টা আগে খাবার গ্রহণ করার উপকারিতা

ঘুমনোর ৩ ঘণ্টা আগে খাবার খেলে খাবার ভালোভাবে হজম হয়। বদহজম, বুকজ্বালা, গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা দূর হয়।

স্বাভাবিকভাবে ঘুম ভালো হয়।

কোষ মেরামতের ভালো হয়। 

সব মিলিয়ে ঘুম এবং হজমের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে এই অভ্যাস।

উল্লেখ্য, বিকালের পর চা-কফি, অতিরিক্ত মিষ্টি ও লবণযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। সুস্থ থাকার জন্য মদ্যপান থেকেও দূরে থাকুন।

ঢাকা/লিপি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

বাগেরহাটে চিংড়ি ঘেরে বাগদায় মড়ক

দেশের সাদা সোনা খ্যাত বাগেরহাটে বাগদা চিংড়ি ঘেরে ভয়াবহ মড়ক দেখা দিয়েছে। ভাইরাস, অস্বাভাবিক তাপমাত্রা এবং টানা বৃষ্টির কারণে ভরা মৌসুমেই দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা। উৎপাদন অর্ধেকে নেমে আসায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা।

চাষিদের অভিযোগ, মানসম্মত পোনা সঙ্কটের পাশাপাশি প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে ঘেরে চিংড়ি মারা যাচ্ছে আশঙ্কাজনক হারে।

রামপালের চাকশ্রী বাজার এলাকার মৎস্য চাষি মো. শাহজাহান বলেন, “গত বছর এ সময় ঘের থেকে প্রতিদিন ৪০-৫০ কেজি চিংড়ি ধরতাম। এখন পানিতে জাল ফেললে তা খালি উঠে আসে। লাখ টাকার বাগদার পোনা ছেড়েছি, ঘেরে এখন শূন্য অবস্থা।”

আরো পড়ুন:

সাগরে ভাসছিল ২২ কেজির কোরাল, ধরা পড়ল জালে  

যশোরে অতিবর্ষণে ভেসে গেছে ১৩৪ কোটি টাকার মাছ

এই উপজেলার অপর চাষি সেলিম হোসেন বলেন, “আমাদের ঘেরে এখন যা অবস্থা, তাতে ঋণ শোধ করাই মুশকিল হবে। এই অবস্থা চলতে থাকলে আগামী মৌসুমে বাগদা চাষ করা কঠিন হবে।”

এ বিষয়ে জেলা চিংড়ি চাষি সমিতির সভাপতি ফকির তৌহিদুর রহমান সুমন বলেন, “বাগদা চিংড়ি মারা যাওয়ার সঠিক কারণ উদঘাটনে আমরা চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্রের সহযোগিতা চাচ্ছি। বিজ্ঞানভিত্তিক রোগ নির্ণয় ছাড়া সমাধান সম্ভব নয়।”

বাগেরহাট চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্রের সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার ড. মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, “ঘেরের পানি ও মাটি সংগ্রহ করে পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা হবে। দ্রুত ফলাফল জানানো হবে, যাতে মৎস্য চাষিরা সঠিক ব্যবস্থা নিতে পারেন।”

বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, “ভাইরাসের পাশাপাশি পানি স্বল্পতা, অস্বাভাবিক তাপমাত্রা ও লাগাতার বৃষ্টির কারণে নোনা পানির চিংড়ি মারা যাচ্ছে। চাষিদের পরিকল্পিতভাবে পোনা নির্বাচন, ঘের প্রস্তুত এবং পানি ব্যবস্থাপনা করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”

জেলা মৎস্য অফিসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জেলায় ৫১ হাজার ১৫৯ হেক্টর জমিতে ৪৬ হাজার ৩১৩টি বাগদা চিংড়ির ঘের রয়েছে। গত অর্থ বছরে এ জেলায় উৎপাদিত বাগদা চিংড়ির পরিমাণ ছিল ২০ হাজার ৯৪০ মেট্রিক টন। তবে, এবার উৎপাদন গত বছরের তুলনায় অনেক কম হওয়ার শঙ্কা করছেন চাষিরা।

ঢাকা/শহিদুল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ