রাজধানীর বকশীবাজারে বাসের ধাক্কায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর বাবা নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে ১০টি বাস আটকে রেখেছেন একদল শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রিফাত বিন জুহুর বাবা বকশীবাজারে বাসের চাপায় নিহত হন। এই ঘটনায় ক্ষতিপূরণের দাবিতে আজ বুধবার বিকেলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচলকারী মৌমিতা পরিবহনের ১০টি বাস বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এনে আটকে রাখেন শিক্ষার্থীরা।

রিফাতের সহপাঠীরা বলেন, গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে বকশীবাজার এলাকায় যাত্রী ওঠানোর প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে রিফাতের বাবাকে চাপা দেয় মৌমিতা পরিবহনের বাস। পরে তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনা ক্যাম্পাসে জানাজানি হলে একদল শিক্ষার্থী আজ বিকেলে মৌমিতা পরিবহনের বাসগুলো আটক করে ক্যাম্পাসে নিয়ে যান।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শামসুজ্জামান সায়েম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, রিফাতের বাবাকে মৌমিতা পরিবহনের ধাক্কা দিয়ে মেরে ফেলেছে। রিফাতের একটি ১১ বছর বয়সী ছোট ভাই রয়েছে, যে ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত। মূলত তার চিকিৎসার জন্য ঈশ্বরদী থেকে তার বাবা ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। রিফাতের পরিবারের একমাত্র উপর্জনক্ষম ব্যক্তি তাঁর বাবা। তাঁকে এভাবে হত্যা করা হলো। এই পরিবারের দায়িত্ব এখন কে নেবে? আমরা চাই, মৌমিতা পরিবহন এই হত্যাকাণ্ডের ক্ষতিপূরণ দিয়ে বাসগুলো নিয়ে যাবে।’

এ বিষয়ে একটি বাসের চালক মো.

জাহাঙ্গীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘কয়েকজন শিক্ষার্থী আমাদের বাসগুলো আটক করে ক্যাম্পাসে নিয়ে এসেছেন। ছাত্ররা বলছেন, একজন ছাত্রের বাবাকে ঢাকায় আমাদের একটি বাস চাপা দিয়ে মেরে ফেলেছে। বিষয়টি আমাদের মালিকদের জানানো হয়েছে।’

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। ঘটনাটি ঘটেছে ক্যাম্পাসের বাইরে। তবে তাঁর বন্ধুবান্ধবেরা আবেগের জায়গা থেকে বাসগুলো আটক করে থাকতে পারে। মালিকপক্ষ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা বসে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করব।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর বহন র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক। 

 এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”

বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।” 

চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”

ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।” 

হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে। 

গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।

কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”

ঢাকা/রাঙামাটি/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে নোয়াখালীতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
  • ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব