ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনে ডিসেম্বরের মধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। স্বচ্ছতা নিশ্চিতে গত তিন নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের যথাসম্ভব বাদ দেওয়া, সব ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, পুলিশের শরীরে ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশনা দিয়েছেন সরকারপ্রধান। 

নির্বাচনের আগে সব ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসি বদল করা এবং নির্বাচনে লটারির মাধ্যমে দায়িত্ব দেওয়ার আলোচনাও করেছেন ড.

ইউনূস। 

বুধবার সরকারপ্রধানের বাসভবন যমুনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত বৈঠক থেকে তিনি এ নির্দেশনা দিয়েছেন। নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর হতে বলেছেন সরকারপ্রধান। 

বৈঠকের পর গতকাল রাতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অগ্রগতি সম্পর্কে জানান। 

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক যত প্রস্তুতি রয়েছে, তা ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা’। নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং সংস্কারের অগ্রগতি হলে আগামী রমজানের আগে ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হতে পারে বলে আবারও সরকারের বার্তা তুলে ধরেছেন প্রেস সচিব। 

এ প্রসঙ্গে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু সমকালকে বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে সরকারের ঘোষণা কিংবা সিদ্ধান্ত অবশ্যই ইতিবাচক। এখন দেখতে হবে এটা কতটুকু বাস্তবায়ন করা হয়।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, অবশ্যই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। সংস্কার এবং বিচারের অগ্রগতিও করতে হবে নির্বাচনের আগে। 

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন সমকালকে বলেন, নির্বাচনকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরাপত্তা দিতে  সক্ষম কিনা– তা নিশ্চিত করতে হয়। এ ছাড়া কীভাবে নির্বাচন হবে? প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের কথায় নির্বাচন দিয়ে চলে যেতে চাইছেন। শুধু নির্বাচন দেওয়ার জন্য কিংবা তাঁর মামলা খালাসের জন্য তাঁকে বসানো হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংস্কার করতে হবে। 

গত ১৩ জুন লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, সংস্কার এবং বিচারের অগ্রগতি সাপেক্ষে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহে নির্বাচন হতে পারে। 

এর আগে প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছিলেন, আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন হবে। তাঁর প্রথম ঘোষণা ছিল, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে পরের বছর জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। বিএনপির দাবি ছিল, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন। তবে দলটি ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনে ঘোষণা মেনে নিয়েছে। 

এদিকে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যেসব সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে ইসির দ্বিমত রয়েছে, সেগুলো নিয়েও কথা হয়েছে। 

ঐকমত্যের সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলো সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে বিশেষজ্ঞদের যুক্ত করে বিশেষায়িত কমিটি গঠনে একমত হয়েছে। তবে ইসি নিজস্ব কর্মকর্তাদের নিয়ে ইতোমধ্যে সীমানা পুনর্নির্ধারণ কমিটি করেছে। সংবিধান অনুযায়ী, সীমানা নির্ধারণ ইসির এখতিয়ার হলেও, কমিটিতে কীভাবে বিশেষজ্ঞদের যুক্ত করা যায়, তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয় বলে সূত্র জানিয়েছে। 

প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে যমুনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী, পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, আনসারের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ ও কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. জিয়াউল হক উপস্থিত ছিলেন। 

বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল আলম বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অনেক পাঁয়তারা হয়, তাই আগামী মাসগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর হতে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৮ লাখ সদস্য নিয়োজিত থাকবেন জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব সদস্যের প্রশিক্ষণ আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। 

শফিকুল আলম জানান, পুলিশ পর্যালোচনা করে দেখেছে, ৪৭ হাজার ভোটকেন্দ্রের ১৬ হাজার ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এসব কেন্দ্রে কীভাবে শান্তিপূর্ণ ভোট করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক বিবেচনা করা হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে– পুলিশের বডি ক্যামেরা রাখা এবং প্রতিটি কেন্দ্র সিসিটিভির আওতায় আনা। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে ভোটের জন্য প্রস্তুত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রেস সচিব জানান, চার দিনের পরিবর্তে নির্বাচনে সাত দিনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের কথা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, কর্মকর্তাদের নম্বর ধরে লটারির মাধ্যমে দায়িত্ব দেওয়া যায় কিনা, তা ভেবে দেখতে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। যাতে কেউ কোনো প্রভাব খাটাতে না পারে। 

ভোট সুষ্ঠু না হলে তা বাতিলের ক্ষমতা ইসিকে ফিরিয়ে দেওয়া যায় কিনা, তা খতিয়ে দেখতে প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আজাদ মজুমদার। তিনি বলেন, বিগত নির্বাচনে যেসব পোলিং ও প্রিসাইডিং অফিসার দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের বাদ দিয়ে এবার কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া যায় কিনা, তাও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় এবং কেন্দ্রীয় পর্যায়েও মনিটরিং সেল গঠন হবে জানিয়ে উপ-প্রেস সচিব বলেন, অনিয়ম দেখা গেলে, এতে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। 

ভোটের দিন ইন্টারনেট সচল রাখার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, নির্বাচনের পর্যবেক্ষকদের নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রায় ২ লাখ পর্যবেক্ষক এই নির্বাচনে সম্পৃক্ত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে। পর্যবেক্ষকের নামে যাতে কেউ দলীয় কর্মীকে নির্বাচনী কেন্দ্রে পাঠাতে না পারে– এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন। 

নির্বাচন পর্যন্ত সেনাবাহিনী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা নিয়ে থাকবে কিনা– এ প্রশ্নে প্রেস সচিব বলেন, নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে। তিনি বলেন, ১৮ থেকে ৩৩ বছর বয়সীদের জন্য পৃথক  তালিকা এবং বুথ কীভাবে নিশ্চিত করা যায়, তা খতিয়ে দেখতে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। যারা প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন, তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে, যাতে  প্রথম ভোটে ভালো স্মৃতি হয়। 

বৈঠকের বিষয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম সমকালকে বলেন, নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালনে ডিসেম্বরের মধ্যে পুলিশ সদস্যদের প্রস্তুত করে তোলা হবে। আগস্ট থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রশিক্ষণ শুরু হবে।  কীভাবে একটি কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে হয়, কোন ধরনের বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে– তা হাতেকলমে শেখাব। এ ছাড়া প্রযুক্তিগত বিষয়গুলোও থাকবে। ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভোট হবে– এটা ধরে নিয়ে পুলিশ সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করবে। 

আইজিপি জানান, প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে সব বাহিনীর জনবল ব্যবস্থাপনার ওপর আলোচনা হয়েছে। নিখুঁত নির্বাচন মূল লক্ষ্য। কোনো কেন্দ্রে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে সমন্বয়ের মাধ্যমে তা মোকাবিলার পদ্ধতি ও কৌশল সম্পর্কে বাহিনীর সদস্যদের প্রায়োগিক ধারণা দেওয়া হবে। 

ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে মঙ্গলবারের বৈঠকে ইসির তরফে বলা হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে সংলাপ হতে পারে। ঐকমত্য কমিশনের সদস্য এবং নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সভাপতি বদিউল আলম মজুমদার সমকালকে বলেছেন, সংস্কারের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে আলোচনা হয়েছে। 
সংস্কারে ইসির দ্বিমত নেই। সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের কমিটিতে বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্তে রাজনৈতিক ঐকমত্য রয়েছে। ইসি ইতোমধ্যে কমিটি করেছে। কমিটির সদস্যদেরও দক্ষতা রয়েছে বলে ইসি জানিয়েছে। কীভাবে সমন্বয় করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। 
বৈঠকে ঐকমত্য কমিশনের  সহসভাপতি আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন, মো. আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার অংশ নেন। ছিলেন সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন, নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ও নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর মকর ত দ র র প রস ত প রস ত ত ব যবস থ ন র আগ বল ছ ন র জন য সরক র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

২৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দক্ষ হাতে পরিচালনা  করছেন সদর ইউএনও জাফর সাদিক

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী শত ব্যস্ততার মধ্যেও দক্ষতার সঙ্গে একাই পরিচালনা করছেন সদর উপজেলার ২৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা।

একইসাথে বক্তাবলী ইউনিয়নের প্রশাসকের দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি।গত ১১ সেপ্টেম্বর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ইউএনও জাফর সাদিক অনিয়ম ও দুর্নীতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। 

পূর্ববর্তী সভাপতিদের আমলে যে দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য ও কোচিং নির্ভরতা ছিল, তা নির্মূল করে শিক্ষার পরিবেশ ফেরাতে নিরলস কাজ করছেন তিনি।

তিনি ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নীতিমালা-২০২৩’ বাধ্যতামূলকভাবে প্রয়োগ করেন। অনিয়ম তদন্তে গঠন করেন ভিন্ন ভিন্ন কমিটি। ফান্ডের অর্থ অপব্যবহার ঠেকাতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

পুনর্জন্ম পেয়েছে পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়

পূর্বে সাবেক এমপি শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠদের দ্বারা পরিচালিত পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ে দুর্নীতি, ৮ মাসের শিক্ষক বেতন বকেয়া, জমির রেজিস্ট্রি জটিলতা ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে গত বছর ১৫ আগস্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন।

ইউএনও জাফর সাদিক যোগদানের পর মাত্র ছয় মাসে ১৭টি সভা করে ফান্ড স্বচ্ছতা, শিক্ষক বেতন পরিশোধ, প্রভিডেন্ট ফান্ড ঋণ শোধ, জমির রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে নেতৃত্ব দেন।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সেলিনা সুলতানা বলেন, “স্যার দুইবার বিদ্যালয় পরিদর্শন করে বাস্তব পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছেন। এখন নিয়মিত বেতন হচ্ছে, ড্রেন নির্মাণ চলছে।”

দখলদার উচ্ছেদ ও অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযান

ফতুল্লা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে সাবেক প্রধান শিক্ষক ও কর্মচারীর আর্থিক অনিয়মের তদন্তে সরাসরি মাঠে নামেন ইউএনও। বিদ্যালয়ের ২০ শতক জমি দখলমুক্ত করে ইটের দেয়াল অপসারণের নির্দেশ দেন। ঘুষের মাধ্যমে দেয়া পুকুর ইজারাও বাতিল করেন।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আফরোজা বলেন, “ইউএনও স্যারের উদ্যোগে জমি উদ্ধার ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনও প্রক্রিয়াধীন।”
বক্তাবলীর কানাইনগর সোবহানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের জমি দখলমুক্ত করতেও সরাসরি পুলিশি সহায়তায় দখলদার উচ্ছেদ করেন ইউএনও।

শিক্ষা সফর ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে নতুন প্রাণ

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা শিক্ষা সফর, বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পুনরায় চালু করে শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করেছেন ইউএনও জাফর সাদিক। দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য বিনা বেতনে ও অর্ধ-বেতনে পড়ার সুযোগও তৈরি করেছেন।

প্রশংসিত হচ্ছেন সর্বত্র

সদর উপজেলার ৫১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগের সভাপতির দায়িত্বে থেকে ইউএনও জাফর সাদিক যে স্বচ্ছতা, দৃঢ়তা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছেন, তা এলাকায় প্রশংসিত হচ্ছে। সচেতন মহলের মতে, যেখানে পূর্ববর্তী সভাপতিরা শিক্ষা ফান্ডের অর্থ আত্মসাতে ব্যস্ত ছিলেন, সেখানে কোনো আর্থিক সুবিধা ছাড়াই এতগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দক্ষভাবে পরিচালনা একজন প্রকৃত কর্মবীরের পরিচয় বহন করে।

ইউএনও নির্বাহী অফিসার জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় যোগদানের পর থেকেই নিজ দায়িত্বের পাশাপাশি উপজেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছি।

নিজ কাজের অতিরিক্ত এতগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালনে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে এটা যেমন সত্যি, তেমনি নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনে আমি অঙ্গীকারবদ্ধ। সরকার যখন যে দায়িত্ব আমাকে অর্পণ করবেন সেটাকেই জনকল্যাণমুখী করে ভবিষ্যতেও কাজ করে যেতে চাই।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দক্ষ হাতে পরিচালনা  করছেন সদর ইউএনও জাফর সাদিক
  • ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত
  • পাবনায় তীব্র নদী ভাঙনে বিলীনের ‍মুখে ফেরি ঘাট
  • ফেনীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৪ স্থানে ভাঙন, পানির নিচে ৩০ গ্রাম
  • ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু, রেলপথ অবরোধ
  • ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোর স্থলে হচ্ছে কাঠের সেতু
  • নবজাতক  শিশুকে চারাগাছ উপহার দিয়ে শুভেচ্ছা জানালেন ইউএনও ফারজানা
  • কক্সবাজারে বন্যার পানি নামছে, বাড়ছে দুর্ভোগ
  • হবিগঞ্জে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের সংঘর্ষে নিহত ১