ফরিদা পারভীনের চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড, আশাবাদী চিকিৎসরা
Published: 9th, July 2025 GMT
লালনসংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী ফরিদা পারভীন কয়েক দিন ধরে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কালেজ ও হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বুধবার মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। রাত সাড়ে ১০টা থেকে পৌনে ১২ টা পর্যন্ত ইউনিভার্সেল হাসপাতালে বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ফরিদা পারভীনের ছেলে ইমাম জাফর নোমানী সমকালকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বোর্ডের সভায় বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, জাতীয় কিডনি রোগ ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউট, ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।
বোর্ড সভা শেষে চিকিৎসরা বলেন, ‘ফরিদা পারভীনের বিষয়ে আমরা আশাবাদী। শিল্পীর শারীরিক অবস্থা ক্রমেই উন্নতির দিকে। তবে তার শরীরে কিছু ইনফেকশন আছে, আমরা তা দূর করার চেষ্টা করছি। তিনি শিগগিরই সুস্থ হয়ে উঠবেন।’
.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে বর্ষা এলেই বাড়ে টিলা কাটা
কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না সিলেটে টিলা কাটা। প্রতিনিয়ত পাহাড়-টিলা কেটে ক্ষতবিক্ষত করা হচ্ছে। কোথাও এক্সক্যাভেটর লাগিয়ে, আবার কোথাও শাবল দিয়ে কাটা হচ্ছে টিলা। বর্ষায় কাটলে সহজে ধসে পড়ে, এ কারণে টিলা কাটার পরিমাণও বেড়ে যায়। পরে এসব মাটি বিক্রি করে চলে ব্যবসা।
এদিকে বন্ধ হচ্ছে না টিলার পাদদেশে বসবাস। প্রায় প্রতিটি টিলায় গড়ে উঠছে বসতি। এ অবস্থায় ভয়াবহ ঝুঁকি নিয়ে বাস করছে লোকজন। সিলেট জেলার পাহাড়-টিলা কাটা রোধে সার্বক্ষণিক তদারকির ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টের নির্দেশনা থাকলেও মানা হচ্ছে না।
গত কয়েক দিন সিলেটের মেজরটিলা, টিলাগাঁও, বালুচর, মলাইটিলা, ব্রাক্ষ্মণশাসন, হাওলাদারপাড়া, মজুমদারপাড়া, আখালিয়া, ডলিয়া, সাহেববাজারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে টিলা কেটে বসতি নির্মাণ করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া খাদিম টি এস্টেট, বুরজান, তারাপুর, মালনীছড়া, লাক্কাতুরা, দলদলি, আলীবাহারসহ নগরীর আশপাশের সব চা বাগানেই নির্বিচারে পাহাড়-টিলা ধ্বংস করা হচ্ছে।
খাদিমনগর ও খাদিমপাড়া এলাকায় বেশি বিক্রি হচ্ছে খাস জমি। এ ছাড়া সরকারের কাছ থেকে লিজ নেওয়া চা বাগানের জমিও বিক্রি করা হচ্ছে। এসব কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে টিলাগাঁও এলাকায় গত রোববার গিয়ে দেখা যায়, বিশাল টিলা সাবাড় করার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। আগে যেখানে টিলা ছিল, এখন সমতল ভূমি। খবর পেয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর টিলা পরিদর্শন করে টিলার মালিকসহ পাঁচজনকে শোকজ করে।
স্থানীয় বাসিন্দা মইনুল হোসেন জানান, ১৩ বছর ধরে তিনি এ এলাকায় বাস করছেন। টিলায় পাঁচ শতক জায়গা কিনে ঘর বানিয়েছেন কয়েক বছর আগে। কম দামে জমি পেয়ে কিনেছেন। টিলায় ঝুঁকি থাকলেও কিছু করার নেই বলে জানান তিনি।
সিলেট সদরের টুকেরবাজার ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত লন্ডনি টিলা। সবাই এখন এটিকে চেনে জাহাঙ্গীরনগর আবাসিক এলাকা নামে। স্বল্প মূল্যে জায়গা কিনে সেখানে বাড়ি বানাচ্ছে নিম্নআয়ের লোকজন। সরেজমিন দেখা গেছে, এরই মধ্যে প্রায় ১৫ একর আয়তনের টিলার বেশির ভাগ স্থানে গড়ে উঠেছে ঝুঁকিপূর্ণ টিনশেডের ঘর। এগুলোতে বাস করছে শতাধিক পরিবার। কয়েকটি পাকা বাড়িও রয়েছে টিলার পাদদেশে। গত ছয়-সাত বছরে স্থানীয় ও বাইরে থেকে আসা মানুষ এসব বাড়ি গড়ে তুলেছেন। স্থানীয় প্রশাসনের কোনো নজরদারি নেই এসব ব্যাপারে।
শুধু ‘লন্ডনি টিলা’ নয়, আইন অমান্য করে গত দুই যুগে কেটে ফেলা হয়েছে সিলেটের অনেক টিলা। নগরীর আশপাশ এখন অনেকটা টিলাশূন্য। প্রভাবশালী একটি চক্র এসব টিলা কাটায় জড়িত। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয়।
কী পরিমাণ টিলা সিলেটে ছিল, এর সুনির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান কোথাও নেই। তবে পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সিলেট বিভাগের চার জেলায় বর্তমানে ১ হাজার ৮৭৫টি টিলা রয়েছে। এসব টিলার আয়তন ৪ হাজার ৮১১ একর। এর বাইরে আড়াই দশকে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ টিলা কেটে ফেলা হয়েছে।
টিলা কাটা বন্ধে তারা মাঠে রয়েছেন বলে জানান পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক ফেরদৌস আনোয়ার। টিলা কাটা বন্ধ না হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা সাধ্যমতো কাজ করছি। আমরা সবসময়ই তদারকি করছি। রাতে গোপনে টিলা কেটে ফেলে অনেকেই। যখনই কোনো সংবাদ পাই, আমাদের লোকজন ছুটে যায়। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কিন্তু লোকজন সচেতন না হওয়ার কারণে টিলার পাদদেশে অনেকে বাস করছে।