নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তরুণদের অংশগ্রহণে উদ্দীপ্ত হয়ে চলমান ‘তারুণ্যের উৎসব’-এর সময়সীমা আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক বৈঠক শেষে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এ তথ্য জানান।

এর আগে, যুব উপদেষ্টার সভাপতিত্বে জাতীয় পর্যায়ে উৎসবের বাস্তবায়ন বিষয়ক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উৎসব বাস্তবায়নে সম্পৃক্ত ২৫টি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

বঙ্গীয় বদ্বীপের মানুষের সংকটকালে তুরস্ক পাশে দাঁড়িয়েছে: যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা

‘শিল্পী দেবাশিস চক্রবর্তীর আঁকা পোস্টারে ফুটে উঠবে জুলাইয়ের অনিবার্যতা’

সভায় উপদেষ্টা উৎসবের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন এবং এর বিস্তৃত ও সফল বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন।

তিনি জানান, এই উৎসবকে আন্তর্জাতিক পরিসরে ছড়িয়ে দিতে সার্কসহ অন্যান্য আঞ্চলিক সংগঠনকে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ‘গ্লোবাল ইয়ুথ সামিট’ আয়োজনেরও নীতিগত সিদ্ধান্ত  হয়।

২০২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ প্রতিপাদ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়া এই উৎসব দেশজুড়ে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মাধ্যমে উদযাপিত হচ্ছে। তরুণদের মধ্যে ঐক্য, সহযোগিতা এবং আত্মকর্মসংস্থানের অনুপ্রেরণা জাগাতে উৎসবটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

প্রথম পর্যায়ে দেশের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন ৭১ লাখ ৬৬ হাজার ৪৭৩ জন তরুণ-তরুণী, যার মধ্যে ২৭ লাখ ৪২ হাজার ১৭১ জন নারী।

এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৩ হাজার ৭১১টি ইভেন্ট, যার মধ্যে নারীদের জন্য ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ইভেন্ট ছিল ২ হাজার ৯৩১টি। ক্রীড়া পরিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ইউনিয়ন থেকে বিভাগীয় পর্যায় পর্যন্ত অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবল টুর্নামেন্টও আয়োজন করা হয়েছে।

‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের একটি বিশেষ উদ্যোগ, যা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে এবং ২৬টি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। জাতীয় ঐক্য, তরুণদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা এবং স্থানীয় উদ্ভাবনী উদ্যোগগুলোকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরাই এর মূল লক্ষ্য।

উৎসব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ও অংশগ্রহণে আগ্রহীদের https://youth.

cao.gov.bd এই লিঙ্কে ভিজিট করতে বলা হয়েছে।

ঢাকা/এএএম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

স্বর্ণ জয়ের লক্ষ্যে অস্ট্রেলিয়ায়

বিশ্বসেরার মঞ্চে মেধার লড়াইয়ে স্বর্ণ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছে দেশের ছয় নবীন গণিতবিদ। ১৪ জুলাই অস্ট্রেলিয়ার সানশাইন কোস্ট শহরে উদ্বোধনী পর্বের মাধ্যমে শুরু হচ্ছে ৬৬তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড (আইএমও)। শেষ হবে ১৯ জুলাই।

‘গণিত অলিম্পিয়াড’ আমাদের দেশে স্কুল-কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের কাছে গণিতের ভয় কাটিয়ে একটি আনন্দঘন উৎসবে পরিণত হয়েছে। ২৩ বছর ধরে ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো এই গণিত উৎসব আয়োজন করে আসছে। এবারের আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে অংশ নিতে যাওয়া বাংলাদেশ দলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে গতকাল বুধবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ লিখিত বক্তব্যে বিগত বছরগুলোতে গণিত অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের সাফল্য ও এবারের বাংলাদেশ দলের সদস্যদের পরিচিতি তুলে ধরেন।

মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, প্রথম আলোর বিজ্ঞান প্রজন্ম পাতায় ২০০১ সালে শুরু হওয়া ‘নিউরনে অনুরণন’ পরে গণিত অলিম্পিয়াডে পরিণত হয়। আইএমওর সদস্যপদ পাওয়া যায় ২০০৪ সালে। পরের বছর ২০০৫ সাল থেকে বাংলাদেশ অংশ নিচ্ছে এই অলিম্পিয়াডে। আমাদের দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে এখন পর্যন্ত ১টি স্বর্ণ, ৭টি রৌপ্যপদক, ৩৭টি ব্রোঞ্জপদক ও ৪৪টি সম্মানজনক স্বীকৃতি লাভ করেছে। তিনি এবারের দলের সাফল্য কামনা করেন।

ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক এহতেশামুল হক খান বলেন, তারা ইতিমধ্যে দেশসেরা হয়ে একটা বিজয় অর্জন করেছে। চূড়ান্ত পরীক্ষায় তাদের কোনো মানসিক চাপ না নিয়ে ধীরস্থিরভাবে পরীক্ষা দেওয়ার পরামর্শ দেন। প্রথম আলোর সঙ্গে এই আয়োজনে থাকতে পেরে তাঁরা আনন্দিত বলে মন্তব্য করেন।

প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হক শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘তোমাদের সাফল্যে দেশ গৌরবান্বিত হয়। যেখানেই থাকো, দেশের কথা স্মরণে রাখবে সব সময়।’

বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান জানান, ‘শতাধিক দেশ অংশগ্রহণ করে, এমন কোনো প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ কেবল গণিত অলিম্পিয়াড থেকেই স্বর্ণপদক জয় করেছে। এটা আমাদের দেশের তরুণ গণিতবিদদের যেমন অসামান্য অর্জন, তেমনি দেশের জন্যও অনন্য গৌরব।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন গণিত অলিম্পিয়াডের সহসভাপতি অধ্যাপক আবদুল হাকিম খান, সদস্য অধ্যাপক উজ্জ্বল কুমার দেব ও আজমত ইকবাল।

এই দলে রয়েছে ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের এসএসসি পরীক্ষার্থী মনামী জামান, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের এসএসসি পরীক্ষার্থী জাওয়াদ হামীম চৌধুরী, রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী এম জামিউল হোসেন, চট্টগ্রাম বাকলিয়া সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী জিতেন্দ্র বড়ুয়া, চট্টগ্রাম কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. রায়হান সিদ্দিকী এবং ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী তাহসিন খান।

বাংলাদেশ দল এবার ২১তম বারের মতো আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে অংশ নিচ্ছে। দলনেতা বাংলাদেশ গণিত দলের কোচ মাহবুবুল আলম মজুমদার গতকাল অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। উপদলনেতা মুনির হাসান এবং পর্যবেক্ষক বায়েজিদ ভূঁইয়া ছয় প্রতিযোগীকে সঙ্গে নিয়ে ১২ জুলাই মধ্যরাতে রওনা দেবেন।

এ বছর আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশসহ ১০০টির বেশি দেশের প্রায় ৬০০ প্রতিযোগী অংশ নিচ্ছে। অলিম্পিয়াডে প্রাক্-বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়ুয়াদের পরপর দুই দিনে ছয়টি অঙ্ক করতে দেওয়া হয়। এই ছয় অঙ্ক হয় একেবারে মৌলিক ও নতুন। বিজয়ীদের মেধা অনুসারে সোনা, রুপা ও ব্রোঞ্জের মেডেল দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়।

আয়োজকেরা জানান, এবার গণিত অলিম্পিয়াডের জন্য সারা দেশের ১৮ হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৭৫ হাজার ৫৯৬ শিক্ষার্থী অনলাইনে নিবন্ধন করে। তাদের নিয়ে প্রথমে অনলাইনে বাছাই অলিম্পিয়াড হয়। বাছাই থেকে বিজয়ীদের নিয়ে ১৫টি শহরে আঞ্চলিক গণিত উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। আঞ্চলিক গণিত অলিম্পিয়াডের বিজয়ী ১ হাজার ২০০ শিক্ষার্থীকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় গণিত উৎসব। এতে বিজয়ী হয় ৮৫ জন। সেখান থেকে সেরা ৪১ জন নিয়ে প্রথমে জাতীয় গণিত ক্যাম্প আয়োজন করা হয়। পরে এশিয়ান-প্যাসিফিক ম্যাথমেটিক্যাল অলিম্পিয়াড ও আইএমও নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ৬৬তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের জন্য বাংলাদেশ গণিত দলের ছয় সদস্যের দল নির্বাচন করে গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • স্বর্ণ জয়ের লক্ষ্যে অস্ট্রেলিয়ায়
  • বিএআরএফের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
  • চর্যাপদ পুনর্জাগরণ উৎসব শুরু
  • লাঙ্গলবন্দে মন্দিরের কমিটি দখলে সন্ত্রাসী হামলা, মামলায় আসামী ১৭
  • ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও দগদগে ব্রাজিলের সেই ক্ষত
  • একুশ বছরে বাতিঘর, উৎসবে সাজবে কাল