খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ কার্যালয়ের তালাবদ্ধ কক্ষ থেকে প্রায় ৯ লাখ টাকা উদ্বার করা হয়েছে। পরিষদের চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরাকে অপসারণের দুই দিন পর বুধবার (৯ জুলাই) দুপুরে তার কক্ষ থেকে টাকাগুলো উদ্বার করা হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পার্বত্য জেলা পরিষদের দুই জন সদস্য জানান, পরিষদ কার্যালয়ের চেয়ারম্যানের অফিস কক্ষ সংলগ্ন আরেকটি খাস কক্ষ রয়েছে। সেই কক্ষের তালা খুলে এক কর্মচারী ৮ লাখ ৮২ হাজার টাকা পান। পরে তিনি নতুন চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরাকে বিষয়টি জানান। পরে পরিষদ চেয়ারম্যান, কর্মকর্তা ও সদস্যদের উপস্থিতিতে টাকাগুলো জব্দ করা হয়। 

সম্প্রতি দুর্নীতির অভিযোগে জিরুনা ত্রিপুরার চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণের আদেশ জারির পর মঙ্গলবার (৯ জুলাই) পরিষদের সদস্য শেফালিকা ত্রিপুরাকে অস্থায়ী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছে মন্ত্রণালয়। সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরার বিরুদ্ধে আনা আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে নেমেছে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ জানান, পরিষদ চেয়ারম্যানের খাস কামরায় বিপুল পরিমাণ টাকা রাখার সুযোগ নেই। এ সব নগদ অর্থের উৎস সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।

নবাগত পরিষদ চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা টাকা উদ্বারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, টাকা উদ্বারের ঘটনায় থানায় জিডি করা হয়েছে। টাকাগুলো যথাযথ প্রক্রিয়ায় সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হবে। 

এ বিষয়ে জানতে সদ্য অপসারিত চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরার মুঠোফোনে বার বার চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, ৮ লাখ ৮২ হাজার টাকা উদ্ধারের বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়ার আগপর্যন্ত টাকাগুলো থানা হেফাজতে থাকবে।
 

ঢাকা/রূপায়ন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ