জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ‘পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে’ গুলি করে পুলিশ: সপ্রানের গবেষণা
Published: 9th, July 2025 GMT
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে পুলিশসহ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা হত্যার উদ্দেশে ‘পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে’ (কাছ থেকে) আন্দোলনকারী ও সাধারণ মানুষদের গুলি করে বলে ‘সকল প্রাণের নিরাপত্তা’ (সপ্রান) নামে একটি অধিকারভিত্তিক সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে। অভ্যুত্থানে ৫৪টি হেডশটের (মাথায় গুলি করা) ঘটনা বিশ্লেষণ করে সপ্রান।
সংস্থাটি বলছে, এসব ঘটনা বিশ্লেষণ করে ভয়াবহ তথ্য সামনে উঠে আসে। দেখা যায়, কোনো ধরনের সতর্ক করা ছাড়াই আন্দোলনকারী ও সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে হত্যার উদ্দেশে ‘পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে’ (কাছ থেকে) গুলি করা হয়েছিল। রিয়া গোপ ও নাঈমা সুলতানাসহ আবাসিক এলাকায় হত্যাকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য ছিল মানুষকে আতঙ্কগ্রস্ত করে তোলা।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর বাংলামটরে অবস্থিত বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে ‘দ্য অ্যানাটমি অব হেডশট: স্টেট-স্পন্সরড ভায়োলেন্স অ্যান্ড দ্য লিথাল সাপ্রেশন অব প্রোটেস্টরস ডিউরিং দ্য জুলাই আপরাইজিং’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘সপ্রান’। অনুষ্ঠানে সপ্রানের গবেষক জেবা সাজিদা সারাফ উপস্থাপিত গবেষণাপত্রে এই তথ্য উঠে আসে।
গবেষণাপত্রে বলা হয়, ঢাকায় ৫১টি, চট্টগ্রামে দুইটি ও রাজশাহীতে একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ৩১টি হত্যাকাণ্ড পুলিশের গুলিতে হয়েছে। এছাড়া তিনটিতে র্যাব এবং একটিতে সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততা লক্ষ্য করা যায়। বাকি হত্যাকাণ্ডগুলো আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ঘটিয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৩৩ জন ছিলেন আন্দোলনকারী। অন্যরা ছিলেন আশেপাশের লোকজন কিংবা উৎসুক মানুষ।
সপ্রানের গবেষক নুসরাত জাহান নিসুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের অধ্যাপক ড.
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক বখতিয়ার আহমেদ বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ অধিষ্ঠিত শাসনতন্ত্র ক্রমাগত খুনি হয়ে উঠছিল, তা আমি নিজের মতো করে খেয়াল রাখছিলাম, লিখে রাখছিলাম। এ জন্য বিষয়টি আমাকে অবাক করেনি। কেননা এটা আওয়ামী লীগ সরকার প্রথমবারের মতো ঘটায়নি। গত ১৫ বছরে একদিনে ৫০–এর অধিক খুন করার অভিজ্ঞতা এই সরকারের ছিল। তিনি বলেন, পুলিশ আমাদের কখন কীভাবে কতটুকু দরকার, তা নতুন করে ভাবতে হবে।
রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা বলেন, রাষ্ট্র মানুষের মাথাকে লক্ষ্য করে গুলি করার মাধ্যমে শুধুমাত্র ব্যক্তির মৃত্যু নিশ্চিত করে না, বরং এর মাধ্যমে রাষ্ট্র ব্যক্তির চিন্তাচেতনা ও আদর্শকে খুন করতে চায়। এ সময় তিনি ‘নেক্রপলিটিক্স’ (মৃত মানুষকে রাজনৈতিক উদ্দেশে ব্যবহার করা) ও শ্রেণী বৈষম্যের কথা তুলে ধরেন।
সিরাজুল ইসলাম তার ভাইয়ের স্মৃতিচারণ করে বলেন, এখনও আম্মু ওমরের কথা চিন্তা করে কান্না করেন। কীভাবে ছেড়ে গেলো আমাদের! এ সময় তিনি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিচারের দাবি জানান।
আলোচনার শেষ পর্যায়ে প্রশ্নোত্তর পর্বের আয়োজন করা হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ল ই অভ য ত থ ন জ ল ই গণঅভ য ত থ ন হত য ক ণ ড
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন আইফোন কেনার মতো টাকা আয় করতে যুক্তরাষ্ট্রে লাগবে ৫ দিন, বাংলাদেশে কত দিন
ছবি: অ্যাপল