ইন্টারনেটে নতুন একটি ভিডিও প্রকাশিত হওয়ার পর ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন উঠেছে। ভিডিওটির মধ্য দিয়ে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, সম্প্রতি তেল আবিবের মধ্যাঞ্চলে ইসরায়েলের চালানো আত্মঘাতী হামলার ঘটনাটি ভুলবশত হয়নি; বরং অভ্যন্তরীণভাবে নাশকতা চালানো হয়েছে।

ভিডিওটি অনলাইনে প্রকাশ করেছে ‘দ্য সন্স অব রুহুল্লাহ’ নামের একটি সংগঠন। ১৭ জুন ভোরে ইসরায়েলে ইরানের দশম দফায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চলাকালে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাব্যবস্থার এক নিয়ন্ত্রণকক্ষের ভেতরকার দৃশ্য দেখা গেছে ওই ভিডিওতে। ‘দ্য সন্স অব রুহুল্লাহ’ দাবি করছে, এটি ইসরায়েলের ওই নিয়ন্ত্রণকক্ষের তাৎক্ষণিক কার্যক্রমের দৃশ্য।

ভিডিওতে দেখা যায়, নিয়ন্ত্রণকক্ষে থাকা স্ক্রিনগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করার নির্ধারিত লক্ষ্যপথ বদলে যেতে দেখা গেছে। তা ছাড়া দূর থেকে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় অনুপ্রবেশের কার্যকলাপও দেখা গেছে।

‘দ্য সন্স অব রুহুল্লাহ’ নামে পরিচয় দেওয়া সংগঠনটির সদস্যরা ভিডিওতে বলছিলেন, ‘আমরা হামলার সময় নিয়ন্ত্রণকক্ষে ছিলাম। ভেতর থেকেই ওই প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পরিচালনা করেছি। ওই আত্মঘাতী হামলাটি কোনো ভুল ছিল না, এটা আমাদের নেওয়া সিদ্ধান্ত ছিল।’

স্বাধীন বিশ্লেষকেরা ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেছেন। তাঁরা বলছেন, ভিডিওতে দেখা যাওয়া ইন্টারফেসের নকশা, সরাসরি সম্প্রচারের ফুটেজ এবং কমান্ড লাইন সবকিছু ইসরায়েলের আসল প্রতিরক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে মিলে গেছে। যদি তা সত্যি প্রমাণিত হয়, তাহলে এটি হবে ইসরায়েলের সবচেয়ে সুরক্ষিত সামরিক স্থাপনায় এক বড় অনুপ্রবেশের ঘটনা।

ইসরায়েলে ইরানের বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সময় এই ঘটনা ঘটেছে। ইরানি ওই হামলার লক্ষ্য ছিল তেল আবিব ও আশপাশের সামরিক ঘাঁটি। গত ১৩ জুন ইরানে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলার জবাবে ওই হামলা চালাচ্ছিল তেহরান। ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের বেসামরিক পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় এবং দেশটির জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীদের হত্যা করে। এরপর দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা শুরু হয়।

ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রকে প্রতিহত করতে ইসরায়েল আয়রন ডোম এবং ডেভিডস স্লিং প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে সক্রিয় করেছিল। তবে এর মধ্যেই একটি প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যচ্যুত হয়ে তেল আবিব শহরের ভেতরেই আঘাত হানে।

প্রথম দিকে বিভিন্ন ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছিল, ক্ষেপণাস্ত্রের পথ বিশ্লেষণসংক্রান্ত উপাত্তে ভুল থাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। অন্য কিছু সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছিল, ‘সংকেতে বিঘ্ন ঘটা’ বা ‘ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থায় অস্বাভাবিক’ কোনো কিছুর কারণে এমনটা ঘটে থাকতে পারে।

তবে নতুন ভিডিও প্রকাশের পর পরিস্থিতি পুরোপুরি বদলে গেছে। এখন অনেকেই মনে করছেন, ওই হামলার ঘটনাটি ভুলবশত হয়নি। প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় অনুপ্রবেশকারীরা অভ্যন্তরীণভাবেই এ নাশকতা চালিয়েছে।

শুধু এ ঘটনাই নয়। এখন বিশ্লেষকেরা ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার আগের কিছু ব্যর্থতার ঘটনাও নতুন করে খতিয়ে দেখছেন।

২০২৩ সালের মে মাসে গাজা থেকে ছোড়া ৪০টির বেশি রকেট ইসরায়েলের প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে ঢুকে পড়েছিল। একটি ইসরায়েলের নিজেদেরই একটি প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র দেশটির এক বেসামরিক এলাকায় পড়েছিল। তখন বলা হয়েছিল, ‘নিশানা নির্ধারণে ভুল হয়েছে।’

ওই ঘটনার এক মাস পর ২০২৩ সালের জুনে ইসরায়েলের অ্যারো ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা ভুল করে নিজেদের একটি নজরদারি ড্রোনকে গুলি করে গোলান মালভূমিতে ফেলে দিয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল ‘বন্ধু নাকি শত্রু’র জিনিস, তা শনাক্তের ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি হয়েছে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা বলছেন, এসব ঘটনা হয়তো ইসরায়েলের প্রতিরক্ষাব্যবস্থার ভেতরে দীর্ঘদিনের অনুপ্রবেশ বা অন্তর্ঘাতের চিত্রকেই ফুটিয়ে তুলছে। সব ঘটনাকে একসঙ্গে বিবেচনা করলে বোঝা যায়, একসময় যে আয়রন ডোম ইসরায়েলিদের গর্বের প্রতীক ছিল, সেটিকে আসলে অনেক আগেই ভেতর থেকেই দুর্বল করে ফেলা হয়েছে।

এ তথ্য প্রকাশিত হওয়ার পর ইতিমধ্যে ইসরায়েলিদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ইসরায়েলিদের আশঙ্কা, তাদের প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে তাদের নিজেদের মানুষের বিরুদ্ধেই ব্যবহার করা হতে পারে।

এ ঘটনায় এখনো তদন্ত চলছে। কিছু প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হচ্ছে। সেগুলো হচ্ছে:

এই অনুপ্রবেশের পরিকল্পনা কে করেছে? কত দিন ধরে প্রতিরক্ষাব্যবস্থাটি দুর্বল অবস্থায় আছে? এমন ঘটনা কি আবারও ঘটতে পারে?

এ মুহূর্তে আয়রন ডোম সচল থাকলেও পর্যবেক্ষকদের অনেকে আর এটিকে ভরসার চোখে দেখছেন না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র হয় ছ ল প রক শ ইসর য র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে কী আছে, এটা কি গাজায় যুদ্ধ থামাতে পারবে

গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রসঙ্গটি কিছুদিন ধরে আবারও জোরালোভাবে সামনে এসেছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে বলেছেন, ইসরায়েল ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির শর্তে রাজি হয়েছে এবং আলোচকেরা স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধের পথ বের করতে আলোচনায় বসতে পারেন।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস বলেছে, তারা মধ্যস্থতাকারীদের ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে কিছু সংশোধনী আনার প্রস্তাব দিয়েছে তারা। আর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসের কিছু দাবি ‘অগ্রহণযোগ্য’। তবে এরপরও তিনি কাতারের রাজধানী দোহায় আলোচনার জন্য প্রতিনিধিদের পাঠিয়েছেন।

আজ সোমবার ওয়াশিংটন ডিসিতে ট্রাম্পের সঙ্গে নেতানিয়াহুর সাক্ষাৎ করার কথা আছে। বিভিন্ন স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্প চাইছেন যেন একটি চুক্তি হয়।

গত শনিবার সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, আগামী সপ্তাহেই গাজার ব্যাপারে একটি চুক্তি হতে পারে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, হামাস পাল্টা কী প্রস্তাব দিয়েছে, সে ব্যাপারে এখনো পুরোপুরি জানেন না। তবে তাদের সাড়া দেওয়ার বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন তিনি।

হামাস কী চাইছে?

বিভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, হামাসের মূল দাবি তিনটি। এর একটি হলো, গাজা উপত্যকায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল–সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) কার্যক্রম বন্ধ করা। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে গাজায় জিএইচএফের ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রগুলোতে ত্রাণ নিতে গিয়ে কমপক্ষে ৭৪৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

জুনের শেষ দিকে ইসরায়েলি সংবাদপত্র হারেৎজের প্রতিবেদনে বলা হয়, খাবারের জন্য অপেক্ষমাণ নিরস্ত্র মানুষের ওপর ইচ্ছাকৃতভাবে গুলি চালানোর জন্য ইসরায়েলি সেনাদের আদেশ দেওয়া হয়েছিল। মানবিক সহায়তাকর্মীরা বারবার বলছেন, তাঁরা গাজায় ফিলিস্তিনিদের জন্য ত্রাণ ও খাদ্য বিতরণে সক্ষম। তাঁরা জিএইচএফের সমালোচনা করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, জিএইচএফ ইসরায়েলের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণের জন্য কাজ করছে।

যুক্তরাষ্ট্র–সমর্থিত প্রস্তাবে গাজায় আটক থাকা ইসরায়েলিদের মুক্তির বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, হামাসের হাতে আটক থাকা ১০ জন জীবিত ইসরায়েলি ও ১৮ জন জিম্মির মরদেহ ধাপে ধাপে হস্তান্তর করা হবে। এর বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দেওয়া হবে।

গত মে মাসে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার বলেন, ‘এটি (জিএইচএফ) ত্রাণকে রাজনৈতিক ও সামরিক লক্ষ্য পূরণের শর্তে পরিণত করেছে। এটি অনাহারকে দর-কষাকষির অস্ত্রে পরিণত করে। এটি একধরনের ঠগবাজি…সহিংসতা ও বাস্তুচ্যুতি আড়াল করার পর্দামাত্র।’

হামাসের মূল তিন দাবির আরেকটি হলো, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহার করা। হামাস চায়, গত মার্চ মাসে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের আগে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী যে অবস্থানে ছিল, সেখানেই যেন তারা ফিরে যায়।

গত মে মাসে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় নতুন করে ব্যাপক স্থল অভিযান শুরু করে। তারা শত শত ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে এবং গাজা উপত্যকার বড় একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ নেয়।

ইতিমধ্যে ইসরায়েলি বাহিনী নেতজারিম করিডর তৈরি করেছে, যা গাজা উপত্যকাকে উত্তর ও দক্ষিণে ভাগ করেছে। এরপর গত এপ্রিল মাসে নেতানিয়াহু দক্ষিণাঞ্চলীয় গাজায় মোরাগ করিডর তৈরির ঘোষণা দেন।

তৃতীয় দাবিটি হলো, আন্তর্জাতিকভাবে যুদ্ধ বন্ধের নিশ্চয়তা।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও মার্চ মাসে ইসরায়েল একতরফাভাবে সেই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে। অথচ ফিলিস্তিনি পক্ষ যুদ্ধবিরতির সব শর্ত মেনে চলছিল। এ কারণে এবার হামাস ও অন্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে নিশ্চয়তা চাইছে যে ভবিষ্যতে এমনটা আর ঘটবে না।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, হামাস চায়, যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিত করুক, যুদ্ধবিরতি শেষ হয়ে গেলেও যদি স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধ না-ও হয়, তবু ইসরায়েল যেন আর বোমা হামলা বা স্থল অভিযান চালাতে না পারে। এসব হামলায় ইতিমধ্যে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

হামাস চাইছে, যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চয়তা দিক যে স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধ না হওয়া ছাড়াই যদি যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, তবু যেন ইসরায়েল আবার বিমান হামলা বা স্থল অভিযান শুরু না করে।

যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত মূল প্রস্তাবে কী আছে

যুক্তরাষ্ট্র–সমর্থিত প্রস্তাবে গাজায় আটক থাকা ইসরায়েলিদের মুক্তির বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, হামাসের হাতে আটক থাকা ১০ জন জীবিত ইসরায়েলি ও ১৮ জন জিম্মির মরদেহ ধাপে ধাপে হস্তান্তর করা হবে। বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দেওয়া হবে।

এখনো ৫০ জন জিম্মি গাজায় আছেন। এর মধ্যে প্রায় ২০ জন জীবিত আছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

ত্রাণ বিতরণ নিয়ে প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক রেডক্রস গাজায় পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য ও ত্রাণ সরবরাহের কাজে সহায়তা করবে।

সবশেষ প্রস্তাবে ইসরায়েলি সেনাদের ধাপে ধাপে গাজার কিছু অংশ থেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ইসরায়েল কী বলছে

বিভিন্ন সংবাদসূত্রে জানা গেছে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত মূল প্রস্তাবে রাজি হয়েছেন। তবে হামাস যে সংশোধনী দিয়েছে, তাকে তিনি ‘অগ্রহণযোগ্য’ উল্লেখ করে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

নেতানিয়াহু বলেন, সব জিম্মি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত এবং হামাস পুরোপুরি ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত তিনি যুদ্ধ বন্ধ করবেন না।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, হামাসকে পুরোপুরি ধ্বংস করার লক্ষ্য বাস্তবে অসম্ভব এবং এটি নেতানিয়াহুর একটি রাজনৈতিক কৌশল, যাতে তিনি নিজের স্বার্থে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করতে পারেন।

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে বিচার চলছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা ঠেকাতে ব্যর্থতার জন্য ইসরায়েলিদের অনেকে তাঁকেই দায়ী করে থাকেন। ওই হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হন এবং প্রায় ২৫০ জনকে বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হয়।

বিশ্লেষকদের মতে, রাজনৈতিক সুবিধার আওতায় মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়া এবং ইসরায়েলের ক্ষমতায় টেকার মতো জনসমর্থন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত নেতানিয়াহু গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চান।

নেতানিয়াহুর যুদ্ধনীতির প্রতি তাঁর কট্টর ডানপন্থী মন্ত্রীদের, বিশেষ করে জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গভির এবং অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচের জোরালো সমর্থন আছে। তাঁরা চান, ইসরায়েলি সেনা অভিযান আরও জোরদার হোক, আরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হোক এবং গাজায় অবরুদ্ধ ও ক্ষুধার্ত মানুষকে কোনো ত্রাণ না দেওয়া হোক।

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে বিচার চলছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা ঠেকাতে ব্যর্থতার জন্য ইসরায়েলিদের অনেকে তাঁকেই দায়ী করে থাকেন। ওই হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হন এবং প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়।

ফিলিস্তিনিদের হত্যা, ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া চলছেই

ইসরায়েল এখনো গাজায় প্রাণঘাতী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ১৩৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

দখলকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বুলডোজার দিয়ে ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেখানে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

পশ্চিম তীরের মানুষেরা বারবার ইসরায়েলি সেনা ও অবৈধ বসতি স্থাপনকারী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হচ্ছেন। পাশাপাশি তাঁদের চলাচলের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে এবং জীবিকা অর্জনের ক্ষেত্রে কঠিন বাধা তৈরি করা হচ্ছে।

চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা কতটা

ট্রাম্পকে চুক্তির ব্যাপারে আগ্রহী বলে মনে হচ্ছে। আর গাজার ফিলিস্তিনিরা মরিয়াভাবে চাইছেন, যেন ইসরায়েলি হামলা বন্ধ হয়। তবে এখনো একটি বড় বাধা থেকে গেছে।

কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আদনান হায়াজনে আল–জাজিরাকে বলেন ‘যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ইসরায়েল এবং নেতানিয়াহুর আগ্রহ নেই।’

আদনানের মতে, যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা খুবই কম।

এই অধ্যাপক আরও বলেন, ‘ইসরায়েলের উদ্দেশ্য স্পষ্ট...তারা চায়, জনমানবহীন একটি ভূখণ্ড। তাই ফিলিস্তিনিদের সামনে তিনটি পথ খোলা রাখা হয়েছে—অনাহারে মারা যাওয়া, নিহত হওয়া, কিংবা এই ভূমি ছেড়ে চলে যাওয়া। তবে ফিলিস্তিনিরা এখন পর্যন্ত প্রমাণ করেছেন, যা কিছুই হোক না কেন, তাঁরা এই ভূমি ছাড়বেন না।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুদকের সেই শরিফ উদ্দিনকে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ
  • ঢাকা দক্ষিণে জলাবদ্ধতা নিরসনে রেসপন্স টিম গঠন, নিয়ন্ত্রণকক্ষ চালু
  • ফিলিস্তিনিদের গাজার বাইরে পাঠাতে ফের আলোচনা
  • মিরাজরাই হাসতে চান শেষ হাসি
  • সিটিজেনস ব্যাংকের এমডি হলেন আলমগীর হোসেন
  • অনিয়ম করে শ্রমিক থেকে প্রকৌশলী হওয়ার সত্যতা পেল দুদক
  • ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে কী আছে, এটা কি গাজায় যুদ্ধ থামাতে পারবে
  • ইয়েমেনের ৩ বন্দর ও একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল
  • ইয়েমেনের তিনটি বন্দর ও একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল