স্টার্ট-আপ খাতে অর্থায়ন সহজ করতে মাস্টার সার্কুলার জারি
Published: 9th, July 2025 GMT
সম্ভাবনাময় স্টার্ট আপ খাতের কার্যকর বিকাশ নিশ্চিত করতে এবং ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর অর্থায়ন আরো গতিশীল ও সময়োপযোগী করতে এবং অর্থায়ন সহজ করতে মাস্টার সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সার্কুলার অনুযায়ী, স্টার্ট-আপ উদ্যোগে অর্থায়ন পেতে হলে উদ্যোক্তার বয়স সর্বনিম্ন ২১ বছর হবে হতে, তবে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা নেই। এছাড়া বিদ্যমান প্রতিষ্ঠানের কার্যকাল নিবন্ধনের সময় হতে অনধিক ১২ বছরের মধ্যে থাকতে হবে।
বুধবার (৯ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস ডিপার্টমেন্ট স্টার্ট-আপ খাতে অর্থায়ন সংক্রান্ত মাস্টার সার্কুলারটি জারি করে।
আরো পড়ুন:
জুলাইয়ের ৬ দিনে রেমিট্যান্স এল ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি
প্রভিশন সংরক্ষণে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নতুন নির্দেশনা
সার্কুলারে বলা হয়, দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতায় স্টার্ট-আপ কোম্পানিগুলো এখন প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং প্রযুক্তিনির্ভর উদ্ভাবনের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ব্যবসা ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী অবকাঠামো তৈরি এবং বৈশ্বিক বিনিয়োগ সুবিধার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে এই খাতটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। ফলে খাতটির অর্থায়ন সহজ করতেই মাস্টার সার্কুলার জারি করা হয়েছে।
স্টার্ট-আপ উদ্যোগে অর্থায়ন পদ্ধতি ও অর্থায়ন সীমা দুটোতেই ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। পূর্বে তফসিলি ব্যাংকগুলো তাদের স্টার্ট-আপ ফাণ্ড হতে শুধুমাত্র ঋণ বা বিনিয়োগ সুবিধা দেওয়ার সুযোগ ছিল। নতুন সার্কুলার অনুযায়ী স্টার্ট-আপ উদ্যোগের অনুকূলে ঋণ বা বিনিয়োগের পাশাপাশি ইক্যুইটি সুবিধা প্রদানের সুযোগ রাখা হয়েছে। প্রতিটি তফসিলি ব্যাংকের গঠিত নিজস্ব ‘স্টার্ট-আপ ফান্ড' হতে স্টার্ট-আপ উদ্যোগগুলোতে শুধু ইক্যুইটি বিনিয়োগ সুবিধা প্রদান করা যাবে। ইক্যুইটি হিসেবে আর্থিক বিনিয়োগ সহজতর করার প্রয়াসে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।এই ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানে তফসিলি ব্যাংকগুলো তাদের স্টার্ট-আপ ফান্ডে রক্ষিত সমুদয় অর্থ ইক্যুইটি হিসেবে বিনিয়োগ হবে। যা ব্যাংকগুলোর আর্থিক বিবরণীতে ইক্যুইটি বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত বা প্রদর্শিত হবে। এই কোম্পানি গঠনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস্ ডিপার্টমেন্ট প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক কার্যক্রম সম্পাদন করবে। আলোচ্য ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি গঠন, কোম্পানি পরিচালনা পদ্ধতি প্রভৃতি সংক্রান্ত বিশদ নির্দেশনা পরবর্তীতে পৃথক সার্কুলার বা গাইডলাইনের মাধ্যমে প্রদান করবে।
স্টার্ট-আপ উদ্যোক্তাদের অনুকূলে ঋণ বা বিনিয়োগ প্রদান করতে ব্যাংকগুলোকে তাদের নিজস্ব ঋণ বা বিনিয়োগযোগ্য তহবিল ব্যবহার করতে হবে।ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোও তাদের নিজস্ব ঋণ বা বিনিয়োগযোগ্য তহবিল হতে স্টার্ট-আপ উদ্যোক্তাদের অনুকূলে ঋণ বা বিনিয়োগ প্রদান করতে পারবে।
ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলো স্টার্ট-আপ উদ্যোক্তাদের অনুকূলে বিতরণকৃত ঋণ বা বিনিয়োগের বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে গঠিত ‘স্টার্ট-আপ ফান্ড' নামে ৫০০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল হতে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে।
আলোচ্য সার্কুলার জারির পর থেকে ব্যাংকের নিজস্ব ‘স্টার্ট-আপ ফান্ড' থেকে স্টার্ট-আপ উদ্যোক্তাদের অনুকূলে নতুন করে কোনো ঋণ বা বিনিয়োগ বিতরণ করা যাবে না। তবে, ইতোমধ্যে মঞ্জুরিকৃত ঋণ বা বিনিয়োগগুলোর অর্থ ছাড় করা যাবে।
স্টার্ট-আপ খাতে উদ্যোক্তাদের অনুকূলে পুনঃঅর্থায়ন ও ইক্যুইটি সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে উদ্যোগগুলোর কার্যকালের ভিত্তিতে বিভিন্ন পর্যায়ে শ্রেণিবিন্যাস করা হয়েছে এবং পর্যায়ভিত্তিক ঋণসীমা ২ কোটি হতে ৮ কোটি টাকা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। আগে ১ কোটি টাকা ছিল।
গ্রাহক পর্যায়ে মেয়াদী ও চলতি মূলধন ঋণ/বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সুদ/মুনাফার হার হবে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ।যা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে আদায় করা হবে।
সম্ভাবনা, ঝুঁকি, সক্ষমতা ইত্যাদি বিবেচনায় স্টার্ট-আপ প্রতিষ্ঠানসমূহকে ঋণ/বিনিয়োগ প্রদানের ক্ষেত্রে ইন্টারনাল ক্রেডিট রিস্ক রেটিং সিস্টেম বিষয়ক ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের ২০১৮ সালে জারি করা সাকুর্লারের নির্দেশনা পরিপালন হতে আগামী ২০৩০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত পর্যন্ত ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলো তাদের নিজস্ব ঋণ বা বিনিয়োগযোগ্য তহবিল হতে স্টার্ট-আপ উদ্যোক্তাদের অনুকূলে প্রদত্ত ঋণ বা বিনিয়োগ গ্রাহক পর্যায়ে ছাড় করার ক্ষেত্রে অশ্রেণিকৃত ঋণ বা বিনিয়োগের বিপরীতে ০.
ঢাকা/নাজমুল/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ও ফ ইন য ন স ক ম প ন গ ল স ট র ট আপ ফ ন ড স ট র ট আপ খ ত ত ঋণ ব ন অর থ পর য য় তহব ল
এছাড়াও পড়ুন:
পুঁজিবাজারে মূলধন কমেছে ১১ হাজার ১০ কোটি টাকা
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে (২৬ থেকে ৩০ অক্টোবর) সূচকের পতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এ সময়ে ডিএসই ও সিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। তবে বিদায়ী সপ্তাহে উভয় পুঁজিবাজারে বাজার মূলধন বেশ কমেছে ১১ হাজার ১০ কোটি ২০ লাখ টাকা।
শনিবার (১ নভেম্বর) ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্য মতে, সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৭.৬৭ পয়েন্ট বা ০.৫৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১২২ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ১০.৩৪ পয়েন্ট বা ০.৫২ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯৮৭ পয়েন্টে, ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫.৯২ পয়েন্ট বা ০.৫৪ শতাংশ কমে ১ হাজার ৮২ পয়েন্টে এবং ডিএসএমইএক্স সূচক (এসএমই ইনডেক্স) ৩৩.৭২ পয়েন্ট বা ৩.৩৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৯৭৬ পয়েন্টে।
বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৫৪৭ কোটি ১১ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৫ হাজার ৩৪৩ কোটি ৩ লাখ কোটি টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ৫ হাজার ৭৯৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ২৮৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ১৩৮ কোটি ৭১ লাখ টাকার। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ১৪৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯২টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৭৭টির, দর কমেছে ১৭৯টির ও দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৬টির। তবে লেনদেন হয়নি ২১টির।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১২৭.৩৩ পয়েন্ট বা ০.৮৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ২৮৬ পয়েন্টে। সিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে সিএসই-৩০ সূচক ০.৫৯ শতাংশ কমে ১২ হাজার ৬৫১ পয়েন্টে, সিএসসিএক্স সূচক ০.৭৭ শতাংশ কমে ৮ হাজার ৮১৩ পয়েন্টে, সিএসআই সূচক ০.৯৮ শতাংশ কমে ৮৯৮ পয়েন্টে এবং এসইএসএমইএক্স (এসএমই ইনডেক্স) ২.৮০ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯৪৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৯৮ হাজার ৭০৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৩ হাজার ৯১৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা। টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ৫ হাজার ২১৪ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
বিদায়ী সপ্তাহে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ৯৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৬৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ৩০ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইতে মোট ৩০৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১১৫টির, দর কমেছে ১৭০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টির শেয়ার ও ইউনিট দর।
ঢাকা/এনটি/ইভা