চীন ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে
Published: 10th, July 2025 GMT
চীন ও বাংলাদেশের নেতৃত্বের কৌশলগত দিকনির্দেশনা অনুসরণ করে বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ বাস্তবায়ন, শিল্প ও সরবরাহ চেইন একীভূতকরণ, বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বাড়ানোর মাধ্যমে দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। বুধবার রাজধানীতে এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশে চীনা ব্যবসায়ীদের সংগঠন চায়নিজ এন্টারপ্রাইজ অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশের (সিইএবি) আয়োজনে ‘চীন-বাংলাদেশ শিল্প ও সরবরাহ চেইন সহযোগিতা’ শীর্ষক সেমিনার হয়। সেমিনারে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থা, বিভাগ ও দুই দেশের ব্যবসায়ী নেতারা অংশ নেন।
সেমিনারে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, সড়ক ও সেতু, বন্দর, বস্ত্র ও তৈরি পোশাক, বাণিজ্য ও সেবা, রেলপথ ও বেসামরিক বিমান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং পানি ও পরিবেশ খাতভিত্তিক গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। এতে বাজার বিশ্লেষণ, বিনিয়োগ সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ তুলে ধরা হয়।
চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন রূপান্তরের সন্ধিক্ষণে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অর্থনীতি স্থিতিশীল ও ইতিবাচক ধারায় রয়েছে, ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ ক্রমেই উন্নত হচ্ছে, ফলে দক্ষিণ এশিয়ার একটি নতুন বিনিয়োগ গন্তব্যে পরিণত হচ্ছে বাংলাদেশ।’ দুই দেশের যৌথ প্রচেষ্টায় বাংলাদেশে চীনা কোম্পানিগুলো আরও সমৃদ্ধ হবে এবং দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন এবং জনগণের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত জানান, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ ৩ দশমিক ৭ গুণ বেড়েছে। গত আগস্ট থেকে প্রায় ২০টি চীনা কোম্পানি বাংলাদেশি অংশীদারদের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে। এসব চুক্তির সম্ভাব্য মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ৪০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগকারী দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে চীন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গঠনে প্রাতিষ্ঠানিক সুরক্ষা জরুরি। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও চীন যৌথভাবে কাজ করবে। পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ চুক্তি এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) দ্রুত আলোচনার টেবিলে আনার আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত ওয়েন। তিনি বলেন, ‘এই উদ্যোগ চীনা উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আস্থা ও আগ্রহ আরও বাড়াবে। বাংলাদেশি বন্ধুদের বলছি, চুক্তির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিন।’
চীনা রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বাংলাদেশের নেতৃত্ব যার কাছেই থাকুক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়িয়ে দেশের টেকসই উন্নয়ন ও জনজীবনের মানোন্নয়নে সহায়তা অব্যাহত রাখবে চীন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন নয়ন
এছাড়াও পড়ুন:
আবাসন সংকটসহ ৫ দাবি রাবি গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের খাদ্য ও আবাসনের সংকট নিরসনে পাঁচ দফা দাবি করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট।
বুধবার (৯ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে বেলা ১২টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি উত্থাপন করেন তারা।
গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের অভিযোগ, প্রশাসন হল ডাইনিং বন্ধ করে দিয়ে শিক্ষার্থীদের খাদ্য নিরাপত্তার দায় এড়িয়ে যাচ্ছে। এতে অধিকাংশ শিক্ষার্থী মেসের উচ্চমূল্যের অস্বাস্থ্যকর খাবার খেতে বাধ্য হচ্ছে। পাশাপাশি আবাসন সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ গণরুম বা বাইরের মেসে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে আবাসনের অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছে তারা।
আরো পড়ুন:
নোয়াখালীর ৪ উপজেলার সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা
ঢাবি ক্লাবে তালা মারার হুঁশিয়ারি শিক্ষার্থীদের
তাদের দাবি, গণঅভ্যুত্থানের পর শিক্ষাবান্ধব প্রশাসনের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। বরং পূর্বের সংকটগুলো এখনো বহাল রয়েছে।
দাবি বাস্তবায়নে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট আগামী সাত দিনব্যাপী গণস্বাক্ষর কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এছাড়াও তারা পাঁচ দফা প্রধান দাবি উত্থাপান করেছে।
তাদের দাবিগুলো হলো- নতুন হল নির্মাণ ও শতভাগ আবাসিকতা নিশ্চিত করা; বৈধ সিট বণ্টন চালু ও গণরুম ব্যবস্থা কার্যকর করা; ডাইনিংয়ে ভর্তুকি দিয়ে মানসম্মত খাবার সরবরাহ, ক্যাম্পাস ও আশেপাশের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাসমূহ সংস্কার; মেডিকেল সেন্টারে ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসা সেবা চালু, প্রয়োজনীয় জনবল ও ওষুধ সরবরাহ; গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করে রাকসু নির্বাচন আয়োজন ও বিভিন্ন হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার করতে হবে।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল বলেন, “শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি শতভাগ আবাসনসহ নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা। কিন্তু এ বিপ্লবী প্রশাসন ভর্তুকি দিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করার বদলে ডাইনিং বন্ধ করিয়ে শিক্ষার্থীদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্ব অস্বীকার করছে।”
তিনি আরো বলেন, “সম্প্রতি বেশকিছু সংগঠন শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়া নিয়ে কাজ করলেও তাদের কাজে রাকসু নির্বাচনের জনসংযোগের প্রধান উদ্দেশ্যই ছিল কিনা তা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে সে প্রশ্ন উঠেছে। নিরাপদ খাদ্য ও শিক্ষার পরিবেশবান্ধব বিশ্ববিদ্যালয় নিশ্চিত করতে উপরিউক্ত পাঁচ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্য সব ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলো প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী