সোনারগাঁয়ে স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা
Published: 9th, July 2025 GMT
সোনারগাঁয়ে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের হাতুড়া পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় সোমবার ভূক্তভোগীর মা বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্তরা হলো জামপুর ইউনিয়নের হাতুরাপাড়া এলাকার আব্দুল্লাহ, লাল চান মিয়া এবং ফয়েজ ভূঁইয়া।
জানা যায়, সাদিপুর ইউনিয়নের একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী স্কুল ছুটির পর বাড়ি ফিরছিল। পথে অভিযুক্ত আব্দুলাহ কাঁঠাল খাওয়ানোর কথা বলে তার বাসায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আব্দুল্লাহ ওই শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক তার ঘরে নিয়ে আটকে ফেলে।
এক পর্যায়ে অন্য আরও দুই সহযোগীকে ফোনে ডেকে নিয়ে তিনজন মিলে ভূক্তভোগীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর ভূক্তভোগীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আইনের আশ্রয় নিলে তার পরিবারের সকল সদস্যকে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। ভূক্তভোগীর মা স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় রান্নার কাজ করেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ধর্ষণের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ভূক্তভোগীর মাকে (বাদী) ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে স্থানীয় প্রভাবশালী সাত্তার ও আক্কাস আলীর নেতৃত্বে একটি দল। ভূক্তভোগী পরিবারকে এক লাখ টাকা দিয়ে ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
ভূক্তভোগী ওই ছাত্রীর বোন জামাই মো.
সেসময় তার স্ত্রী বাসায় ছিলো না। আব্দুল্লাহর স্ত্রীর কথা জানতে চাইলে আব্দুল্লাহ কোন উত্তর না দিয়ে মুখ ও হাত পা বেধে তার দুই সহযোগীকে ফোন দিয়ে বাসায় নিয়ে যায়। পরে তারা তিনজন মিলে জোরপূর্বক পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
পরবর্তীতে তার শ্বাশুড়ি এ ঘটনা শুনে তালতলা ফাঁড়িতে অভিযোগ করেন। অভিযোগের তিন দিন হলেও তারা কোনো সমাধান পাননি বলে অভিযোগ করেন। ঘটনাটিকে টাকার বিনিময়ে মিমাংসার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি শ্বশুর বাড়িতেই বসবাস করেন। এমন কিছু হলে অবশ্যই তিনি জানতেন। এটা অপ প্রচার।
তালতলা তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, এ ঘটনায় বাদী অভিযোগ করলেও মামলা দায়েরের বিষয়ে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। তিনি সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বাদি ও তার পরিবারের কাউকে তিনি পাননি। টাকার বিনিময়ে মিমাংসার বিষয়ে তিনি বলেন, তার এ সম্পর্কে জানা নেই। তবে পরিদর্শন করেছেন।
এ ঘটনা ধামাপাচা দেওয়ার বিষয়ে অভিযুক্ত আক্কাস আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অস্বীকার করেন। তিনি এ ঘটনার বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন।
তালতলা তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক (ইনচার্জ) আব্দুল হক বলেন, ঘটনা সম্পর্কে তিনি অবগত না। এসআইয়ের সঙ্গে কথা বলে জেনে বিস্তারিত বলতে পারবেন।
সোনারগাঁ থানার ওসি মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ঘটনাটি সম্পর্কে তিনি জেনেছেন। তিনি নতুন যোগদান করেছেন। এ ঘটনায় একটি অভিযোগ হয়েছে। তদন্তের দায়িত্বে থাকা এসআইকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ স ন রগ কর ছ ন য গ কর এ ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মোবারকের আপিলের পরবর্তী শুনানি কাল
মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার মোবারক হোসেনের ১১ বছর আগে করা আপিলের ওপর আজ মঙ্গলবার শুনানি হয়েছে। আগামীকাল বুধবার পরবর্তী শুনানির দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ।
আজ প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ শুনানি নিয়ে আগামীকাল পরবর্তী দিন রেখেছেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছিলেন মোবারক হোসেন।
এর আগে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মোবারক হোসনেকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়ে ২০১৪ সালের ২৪ নভেম্বর রায় দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। তাঁর বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে দুটি প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে ১ নম্বর অভিযোগে মোবারক হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ৩ নম্বর অভিযোগে মোবারককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। অপর তিনটি অভিযোগ (২, ৪ ও ৫ নম্বর) প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁকে খালাস দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনসাবেক আ.লীগ নেতা মোবারকের মৃত্যুদণ্ড২৪ নভেম্বর ২০১৪ট্রাইব্যুনালের রায় থেকে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের সময় মোবারক হোসেন জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। স্বাধীন দেশে জামায়াতের ইউনিয়ন পর্যায়ে ‘রুকন’ হন তিনি। পরবর্তী সময়ে মোবারক আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন।
আজ আদালতে মোবারকের পক্ষে আছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও ইমরান এ সিদ্দিক। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিমও উপস্থিত আছেন।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইমরান এ সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, আপিলের শুনানি শুরু হয়েছে। সাক্ষীদের বক্তব্য পড়ে শোনানো হয়েছে। কাল আবার শুনানি হবে।