এআইয়ের নকশা করা ক্যানসারের ওষুধ পরীক্ষা করা হবে মানবদেহে
Published: 9th, July 2025 GMT
গুগল ডিপমাইন্ডের ‘আলফাফোল্ড৩’ এআই টুল ব্যবহার করে ক্যানসারের ওষুধ তৈরি করেছে অ্যালফাবেটের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান আইসোমরফিক ল্যাবস। গুগল ডিপমাইন্ডের সহযোগিতায় ক্যানসার আক্রান্ত ব্যক্তিদের দেহে ওষুধটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালও শুরু করতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
আইসোমরফিক ল্যাবসের প্রেসিডেন্ট কলিন মারডোক জানিয়েছেন, এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি ক্যানসারের ওষুধ রোগীদের দেহে প্রয়োগের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আলফাফোল্ড৩ এআই টুল জটিল প্রোটিন কাঠামো ও আণবিক মিথস্ক্রিয়ার পূর্বাভাস দিতে পারে। ফলে টুলটির মাধ্যমে ক্যানসারের ওষুধ তৈরিতে বড় ধরনের অগ্রগতি অর্জন করেছে আইসোমরফিক ল্যাবস। নতুন এ ওষুধ ক্যানসার কোষকে ধ্বংস করতে পারে।
২০২৪ সালে গবেষণার জন্য আইসোমরফিক ল্যাবস ৬০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি তহবিল গঠন করে। এ বিষয়ে গুগল ডিপমাইন্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ডেমিস হাসাবিস জানিয়েছেন, তহবিলের অর্থ খরচ করে পরবর্তী প্রজন্মের এআই–নির্ভর ওষুধের নকশা তৈরি করা হচ্ছে। এআইয়ের মাধ্যমে একদিন সব রোগের সমাধানের লক্ষ্যে এটি একটি বড় পদক্ষেপ।
বর্তমানে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনেক প্রতিষ্ঠান ওষুধ তৈরির জন্য কাজ করছে। বিভিন্ন বায়োটেক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এনিমা বায়োটেক, ইকটোস ও নভো নরডিস্কের মতো প্রতিষ্ঠান এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। পরিসংখ্যান বলছে, এখন পর্যন্ত প্রায় তিন হাজারের বেশি ওষুধ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। তবে বেশির ভাগ ওষুধই বর্তমানে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর
এছাড়াও পড়ুন:
এআইয়ের যুগে দর্শনার্থী হারাচ্ছে উইকিপিডিয়া
ইন্টারনেটের উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার হিসেবে একসময় প্রায় একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল উইকিপিডিয়ার। কিন্তু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর (এআই) সার্চ ও চ্যাটবট প্রযুক্তির বিস্তারে এখন সেই অবস্থান চ্যালেঞ্জের মুখে। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালন সংস্থা উইকিমিডিয়া জানিয়েছে, এআই–চালিত সারাংশ ও কথোপকথনভিত্তিক চ্যাটবট ব্যবহারকারীদের সরাসরি তথ্য দিচ্ছে। ফলে মানুষ উইকিপিডিয়ার মূল সাইটে কম প্রবেশ করছেন। এর প্রভাব এরই মধ্যে স্পষ্ট। উইকিপিডিয়ার সার্বিক দর্শনার্থী বা ট্রাফিকের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।
উইকিমিডিয়ার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিভিন্ন সার্চ মাধ্যম এখন এমনভাবে তথ্য উপস্থাপন করছে যে ব্যবহারকারীর আর মূল উৎসে গিয়ে পড়ার প্রয়োজন হয় না। গুগল, ওপেনএআই বা অন্যান্য সার্চ সেবা বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে তথ্য সংগ্রহ করে সংক্ষেপে ব্যবহারকারীর সামনে তুলে ধরছে। ফলে ‘লিংকে না গিয়েই’ মানুষ তথ্য পাচ্ছেন, আর সেই সুযোগেই কমে যাচ্ছে উইকিপিডিয়ার পাঠকসংখ্যা। বিশ্বজুড়ে কোটি মানুষের জ্ঞানের ভরসাস্থল হিসেবে পরিচিত উইকিপিডিয়া এভাবে ধীরে ধীরে তার প্রভাব হারাচ্ছে। উইকিমিডিয়ার মতে, এটি শুধু দর্শক কমে যাওয়ার বিষয় নয়। এর সঙ্গে জড়িত মাধ্যমটির অস্তিত্ব ও আর্থিক অবস্থান টিকিয়ে রাখার প্রশ্নও।
প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে মানুষের ছদ্মবেশে পরিচালিত নানা বটও এখন তাদের ওয়েবসাইটের বড় ট্রাফিক উৎসে পরিণত হয়েছে। এসব বট নিরাপত্তা ফিল্টার এড়িয়ে উইকিপিডিয়ার কনটেন্ট সংগ্রহ করছে এবং তা ব্যবহার করছে এআই–চালিত সার্চ ইঞ্জিন ও চ্যাটবটগুলো। চলতি বছরের শুরুর দিকে ব্রাজিল থেকে এমনই এক ট্রাফিক বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ করা হয়, যেখানে মানুষ ও বটের ট্রাফিকের পার্থক্য স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে। উইকিপিডিয়া একা নয়, একই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বড় বড় সংবাদমাধ্যমও। তাদের অভিযোগ, এআই সার্চ ইঞ্জিনগুলো সংবাদমাধ্যমের কনটেন্ট ব্যবহার করছে, কিন্তু পাঠকেরা মূল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করছেন না। গুগল সম্প্রতি মুঠোফোন ও ওয়েব উভয় প্ল্যাটফর্মে এআই মোড চালু করেছে, যা সার্চ ফলাফলে সংক্ষিপ্ত সারাংশ দেখায়। ফলে মানুষ প্রাথমিক তথ্য সেখানেই পেয়ে যাচ্ছেন, মূল উৎসে যাওয়ার প্রয়োজন হচ্ছে না।
তবু উইকিপিডিয়া প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের বিপক্ষে নয়। এমনকি প্রতিষ্ঠানটি চাইছে পরিবর্তনের এই ধারায় নিজেদের অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে। উইকিমিডিয়া জানিয়েছে, তারা এখন নীতিমালায় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে, যাতে উইকিপিডিয়ার কনটেন্ট দায়িত্বশীলভাবে ব্যবহৃত হয় এবং উৎস হিসেবে তার মর্যাদা বজায় থাকে। তরুণ প্রজন্মকে আরও সম্পৃক্ত করতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় উপস্থিতি বাড়ানোর পরিকল্পনাও করছে তারা। এর মাধ্যমে কনটেন্টের বিস্তার ঘটিয়ে নতুন প্রজন্মের কাছে উইকিপিডিয়াকে আরও প্রাসঙ্গিক করে তুলতে চায় প্রতিষ্ঠানটি।
সূত্র: নিউজ ১৮ ডটকম