গুগল ডিপমাইন্ডের ‘আলফাফোল্ড৩’ এআই টুল ব্যবহার করে ক্যানসারের ওষুধ তৈরি করেছে অ্যালফাবেটের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান আইসোমরফিক ল্যাবস। গুগল ডিপমাইন্ডের সহযোগিতায় ক্যানসার আক্রান্ত ব্যক্তিদের দেহে ওষুধটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালও শুরু করতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

আইসোমরফিক ল্যাবসের প্রেসিডেন্ট কলিন মারডোক জানিয়েছেন, এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি ক্যানসারের ওষুধ রোগীদের দেহে প্রয়োগের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আলফাফোল্ড৩ এআই টুল জটিল প্রোটিন কাঠামো ও আণবিক মিথস্ক্রিয়ার পূর্বাভাস দিতে পারে। ফলে টুলটির মাধ্যমে ক্যানসারের ওষুধ তৈরিতে বড় ধরনের অগ্রগতি অর্জন করেছে আইসোমরফিক ল্যাবস। নতুন এ ওষুধ ক্যানসার কোষকে ধ্বংস করতে পারে।

২০২৪ সালে গবেষণার জন্য আইসোমরফিক ল্যাবস ৬০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি তহবিল গঠন করে। এ বিষয়ে গুগল ডিপমাইন্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ডেমিস হাসাবিস জানিয়েছেন, তহবিলের অর্থ খরচ করে পরবর্তী প্রজন্মের এআই–নির্ভর ওষুধের নকশা তৈরি করা হচ্ছে। এআইয়ের মাধ্যমে একদিন সব রোগের সমাধানের লক্ষ্যে এটি একটি বড় পদক্ষেপ।

বর্তমানে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনেক প্রতিষ্ঠান ওষুধ তৈরির জন্য কাজ করছে। বিভিন্ন বায়োটেক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এনিমা বায়োটেক, ইকটোস ও নভো নরডিস্কের মতো প্রতিষ্ঠান এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। পরিসংখ্যান বলছে, এখন পর্যন্ত প্রায় তিন হাজারের বেশি ওষুধ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। তবে বেশির ভাগ ওষুধই বর্তমানে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর

এছাড়াও পড়ুন:

টাইম সাময়িকীর বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হলেন এআইয়ের স্থপতিরা

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী ‘টাইম’ সাময়িকী এবার বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হিসেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) স্থপতিদের বেছে নিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সাময়িকীটি ২০২৫ সালের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্বের নাম ঘোষণা করে। তবে এবার একক কোনো ব্যক্তিকে বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হিসেবে নির্বাচিত করা হয়নি।

টাইম সাময়িকী জানিয়েছে, ২০২৫ সাল ছিল এআইয়ের জন্য যুগান্তকারী একটি বছর। এই বছর এআই প্রযুক্তি অপ্রতিরোধ্যভাবে দৃশ্যপটে এসেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে টাইম বলেছে, এআইয়ের স্থপতিরা এমন এক যুগ উপহার দিয়েছেন, যখন যন্ত্র মানুষের মতো চিন্তা করতে পারছে। এটি মানবজাতিকে যেমন বিস্মিত করছে, তেমনি উদ্বিগ্নও করছে। বর্তমানকে রূপান্তরের পাশাপাশি এটি সম্ভবের সব সীমাকে ছাড়িয়ে গেছে।

এ কারণেই ২০২৫ সালের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব নির্বাচিত হয়েছেন এআইয়ের পেছনের কারিগরেরা।

টাইম এবার একটি সচেতন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা সরাসরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে বর্ষসেরা ঘোষণা করেনি, বরং এটি নিয়ে যাঁরা চিন্তা করেছেন, নকশা করেছেন এবং তৈরি করেছেন—তাঁদের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। অবশ্য অতীতে বর্ষসেরা হিসেবে প্রযুক্তি বা ধারণাকে বেছে নেওয়ার নজির রয়েছে।

টাইমের প্রধান সম্পাদক স্যাম জ্যাকবস বলেন, তারা এর আগেও ব্যক্তির বাইরে বিভিন্ন গোষ্ঠী বা ধারণাকে বর্ষসেরা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। যেমন ১৯৮৮ সালে বিপন্ন পৃথিবী বা ১৯৮২ সালে ব্যক্তিগত কম্পিউটার।

জ্যাকবস বলেন, অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসকে বাদ দিয়ে ‘ব্যক্তিগত কম্পিউটারের’ ধারণাকে বর্ষসেরা হিসেবে বাছাই করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তখন অনেক নাটকীয়তাও হয়েছিল। এ বিষয়টি পরবর্তী সময়ে বই ও সিনেমায় স্থান পেয়েছে।

গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ফরেস্টারের প্রধান বিশ্লেষক থমাস হাসন এই নির্বাচনকে সমর্থন দিয়ে বলেছেন, ২০২৫ সাল ছিল এআইয়ের জন্য রূপান্তরের একটি বছর। এ বছরে এআই কেবল প্রযুক্তিপ্রেমীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং বিপুলসংখ্যক সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের মূলধারার অংশে পরিণত হয়েছে। এই ব্যাপক ব্যবহারই এটিকে বর্ষসেরা নির্বাচনের যোগ্য করে তুলেছে।

এবারের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্বের দৌড়ে এআই স্থপতিদের পাশাপাশি এনভিডিয়ার সিইও জেনসেন হুয়াং এবং ওপেনএআইয়ের স্যাম অল্টম্যানের নামও আলোচনায় ছিল। সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় আরও ছিলেন পোপ লিও চতুর্দশ, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং নিউইয়র্কের মেয়র জোহরান মামদানি।

গত বছর টাইম সাময়িকীর বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০২৩ সালে এ তালিকায় স্থান পেয়েছিলেন জনপ্রিয় পপ তারকা টেইলর সুইফট।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টাইম সাময়িকীর বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হলেন এআইয়ের স্থপতিরা