বাস চাপায় নিহত ৩: সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম
Published: 7th, August 2025 GMT
সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীসহ তিনজন নিহত হওয়ার প্রতিবাদ, নিরাপদ সড়ক, দায়ীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট ) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের শান্তিগঞ্জ পয়েন্টে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে তারা এ সড়কে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে। এসময় তারা সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে চলাচলরত বাসের ফিটনেস ও লাইসেন্সসহ কাগজপত্র দেখে গাড়ি আটক করেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, “ইতিমধ্যে ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেছে। এখনো ঘাতক বাস চালককে আটক করেনি প্রশাসন। আমাদের বোন মারা গিয়েছে। সে এখন কবরে, অথচ প্রশাসন এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। আমাদের প্রশ্ন, তারা করছেটা কী? আমরা পরিস্কার ভাষায় বলতে চাই, যদি প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করে আমরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হব।”
এসময় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সড়ক দুর্ঘটনাকে রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ড দাবি করে অনতিবিলম্ব হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি করা হয়। নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।
শিক্ষার্থী তাকবিল হোসেন বলেন, “আমরা আজ কর্মসূচিতে পুলিশ প্রশাসনকে অনুরোধ করি, তারা যেনো তাৎক্ষণিকভাবে আমাদেরকে নিয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের ফিটনেসবিহীন পরিবহনগুলোকে আটক করে মামলা দেয়। কিন্তু পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখছে। কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এরপর আমরা বাধ্য হয়ে নিজেরাই এই সড়কের বাসগুলোর ফিটনেস ও লাইসেন্স দেখার চেষ্টা করি। ১০টি বাসের মধ্যে ১০টারই কাগজপত্র ঠিকঠাক নেই। এদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।”
সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শিক্ষার্থী তাকবিল হোসেন, জাকারিয়া নাইম, রাহাত আহমেদ, আশরাফ হোসেন প্রমুখ। সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হুমায়ুন আহমদ, শান্ত রায়, আমিন উদ্দিন, মো.
উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার দুপুরে জেলার শান্তিগঞ্জে অবস্থিত সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট থেকে অন্যান্য যাত্রীদের সাথে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় চড়ে শহরে ফিরছিলেন দুই শিক্ষার্থীসহ পাঁচ জন। পথে সদর উপজেলার বাহাদুরপুর এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাস সামনে থেকে তাদেরকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই শফিকুল ইসলাম (৫০) ও আফসানা জাহান খুশী (১৭) নামে দুজনের মৃত্যু হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর স্নেহা (১৮) নামের অপর একজনের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় গুরুত্বর আহত আরো দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেটের এম জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুকান্ত সাহা রাইজিংবিডিকে বলেন, “তারা তো নিরাপদ সড়কের জন্য মানববন্ধন করছে, তাদের সাথে কথা বলে আমরা দ্রুত তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করব। আমরা নিজেরাও নিরাপদ সড়ক চাই। এ বিষয়ে আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি।”
ঢাকা/মনোয়ার/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র পদ সড়ক স ন মগঞ জ সড়ক র
এছাড়াও পড়ুন:
ভোলাগঞ্জে সাদাপাথর লুট: ৬ দপ্তর ও বেলার কাছে নথি চেয়েছে দুদক
সিলেটের ভোলাগঞ্জে সাদাপাথর লুটপাটের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের খোঁজে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ নিয়ে ছয়টি সরকারি দপ্তর ও বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) কার্যালয়ের কাছে নথিপত্র চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে সংস্থাটি।
সম্প্রতি দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে পৃথকভাবে এসব চিঠি পাঠানো হয়। দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
যে দপ্তরগুলোর কাছে নথি তলব করা হয়েছে, সেগুলো হলো সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়, জেলা প্রশাসন অফিস, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, কোম্পানীগঞ্জ থানা, খনিজ সম্পদ ব্যুরো ও খনিজ সম্পদ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় এবং বেলার সিলেট অফিস।
দুদক সূত্র জানায়, চিঠিগুলোয় যেসব তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ভোলাগঞ্জ এলাকায় খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি) যেসব তদন্ত করেছে, তার সত্যায়িত কপি ও তদন্ত কর্মকর্তাদের বিস্তারিত পরিচয়; কী পরিমাণ পাথর উত্তোলন বা আত্মসাৎ করা হয়েছে এবং কতটা অবশিষ্ট রয়েছে, তার তথ্য; পাথর উত্তোলনের কারণে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতির হিসাব; পাথর লুট নিয়ে বিএমডি থেকে দায়ের করা মামলার এজাহারের কপি, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার নাম ও গ্রেপ্তারকৃতদের তালিকা এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ও দায়ী সরকারি–বেসরকারি ব্যক্তিদের নাম।
আরও পড়ুনপাথর তোলায় রাজনৈতিক দলের ‘ঐকমত্য’, পরে লুট, ঘটল কীভাবে ১৪ আগস্ট ২০২৫এর আগে ৩ সেপ্টেম্বর দুদক জানিয়েছিল, ভোলাগঞ্জে সাদাপাথর লুটপাটে রাজনীতিবিদ ও সরকারি কর্মকর্তাসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলেছে। উপপরিচালক রাশেদুল হাসানের নেতৃত্বে একটি দল অনুসন্ধানের দায়িত্ব পেয়েছে।
দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, অভিযানে প্রাথমিক সত্যতা মেলায় অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। অপরাধের মাত্রা ও সংশ্লিষ্টতার ধরন বিবেচনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।