কক্সবাজারের বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২ হাজার ১১০ শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে নিম ও শজনেগাছের চারা বিতরণ করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে এই আয়োজন হয়। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের সহযোগিতায় প্রথম আলো কক্সবাজার বন্ধুসভা এই উদ্যোগ নেয়। এতে শিক্ষার্থীরা বাড়ির আঙিনায় গাছ রোপণ করে পরিবেশরক্ষার অঙ্গীকার করে।

চারা বিতরণ শুরুর আগে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন প্রথম আলো কক্সবাজারের নিজস্ব প্রতিবেদক আবদুল কুদ্দুস রানা। তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে কক্সবাজার এমনিতে ঝুঁকিতে রয়েছে। বঙ্গোপসাগরের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় গত জুলাই মাসেও টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ, কুতুবদিয়া, মহেশখালীর বিভিন্ন উপকূলে ভাঙন ধরেছে, প্লাবিত হয়েছে। সৈকতের ঝাউগাছগুলো উপড়ে পড়ছে। এ ছাড়া দেখা দিচ্ছে ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এসবের মধ্যেও পাহাড়-জঙ্গল নিধন করে আমরা প্রতিনিয়ত প্রাণ–প্রকৃতিকে ধ্বংস করে চলেছি। তাতে মানুষ নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। পরিবেশ প্রতিবেশ রক্ষা করতে হলে বৃক্ষরোপণের বিকল্প নেই।’

চারা বিতরণ অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন প্রথম আলো বন্ধুসভার কক্সবাজার সিটি কলেজের সভাপতি সাইফুল ইসলাম। এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ব্র্যাক কক্সবাজারের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক রবিউল ইসলাম। স্বাস্থ্যের জন্য গাছ দুটির উপকারিতা তুলে ধরে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের মহাপরিচালক এম এম সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, নিমগাছের পাতা, ডাল ও রস নানা কাজে লাগানো যায়। বিশেষ করে মানুষের ত্বক, চুল ও খুশকি দূর করে। হজমশক্তি ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে। একইভাবে শজনেগাছেরও বহুবিধ উপকারিতা রয়েছে। শজনে পাতায় প্রচুর ভিটামিন-সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন ও ফসফরাস রয়েছে। শজনে ডাঁটাতেও প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে।

নিম ও শজনে গাছের চারা হাতদে শিক্ষার্থীরা। আজ দুপুরে কক্সবাজারের বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

অল্প দুধের সঙ্গে পানি ও রাসায়নিক মিশিয়ে নকল দুধ, স্বামী-স্ত্রীর কারাদণ্ড

অল্প দুধের সঙ্গে পানি ও রাসায়নিক পদার্থ মিশিয়ে শৌচাগারে যন্ত্র বসিয়ে তৈরি করা হচ্ছিল নকল দুধ। প্রতিদিন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সরবরাহ করা হতো প্রায় ৪০ মণ দুধ।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পাবনার ফরিদপুর উপজেলার গোপালনগর গ্রামে অভিযান চালিয়ে এমন একটি নকল দুধ তৈরি কারখানার সন্ধান পেয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে কারখানা থেকে বিপুল পরিমাণ নকল দুধ তৈরির সরঞ্জামসহ দুজনকে আটক করে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে প্রায় ৩০ মণ নকল দুধ জব্দ করে নষ্ট করা হয়েছে।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভাঙ্গুড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সানাউল মোরশেদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন মোহাম্মদ আলহাজ্ব উদ্দিন।

দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার গোলাপনগর গ্রামের মো. তারেক হোসেন (২৬) ও তাঁর স্ত্রী মুন্নি খাতুন (২০)। তাঁদের মধ্যে তারেককে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা এবং মুন্নি খাতুনকে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

ভ্রাম্যমাণ আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তারেক হোসেনের বড় ভাই শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে তাঁদের বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে নকল দুধ তৈরি হচ্ছিল। এর আগে দুবার শফিকুলকে নকল দুধ তৈরির অপরাধে এক লাখ টাকা করে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পরে তিনি বেশ কিছুদিন নকল দুধ তৈরি থেকে বিরত ছিলেন। এরপর আবার নকল দুধ তৈরি শুরু করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দুপুর ১২টার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁদের বাড়িতে অভিযান চালান। অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে শফিকুল পালিয়ে যান। তবে বাড়িটির শৌচাগারে নকল দুধ তৈরির সময় তারেক ও তাঁর স্ত্রীকে আটক করা হয়।

ভাঙ্গুড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সানাউল মোরশেদ জানান, নকল দুধ তৈরির যন্ত্রে শব্দ হওয়ার কারণে তাঁরা সেটি শৌচাগারে বসিয়েছিলেন। যন্ত্র চালানোর সময় বাড়িতে উচ্চ শব্দে গান বাজানো হতো। চক্রটি দিনে প্রায় ৪০ মণ নকল দুধ তৈরি করে বিভিন্ন দুধ সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠানে বিক্রি করে আসছিলেন। তাঁরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে নকল দুধ তৈরির কথা স্বীকার করেছেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন মোহাম্মদ আলহাজ্ব উদ্দিন বলেন, সাধারণত গুরুর দুধে ৩ থেকে ৪ শতাংশ পর্যন্ত ফ্যাট থাকে। কিন্তু নকল এই দুধে প্রায় ১৩ শতাংশ ফ্যাট পাওয়া গেছে, যা মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এই দুধপানে লিভার, কিডনিসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি হতে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ