মাটির ঘ্রাণ
স্যাটেলাইট ছুঁয়ে ফিরে এল
হিরণ্যকশিপুর ছায়া
ঘুমিয়েছে নৃসিংহ অবতার
আকাশে ওড়ে না পাখি
ইন্দ্রধামে ড্রোনের ওড়াউড়ি
কৃষ্ণের বাঁশির সুর অ্যালগরিদমে
সেই সুরে জেগে ওঠে বিজ্ঞাপনী রাধা।
প্রাচীন বটগাছকে প্রশ্ন করে নবীন লতাগুল্ম—
‘তোমার শেকড়ের গভীরতা কত টেরাবাইট?’
সিগন্যালের ড্রপে হারিয়ে যায় উর্বশী
তাকে আর ডাকে না সংগীত
শ্রাবণসন্ধ্যায় জন্ম নেয় একটি কামিনী
স্পর্শ না করেও যে সংস্পর্শে থাকে.
তবু কেউ একজন—তুমি কিংবা আমি
ড্রোন আর স্যাটেলাইটের মাঝে—
আজীবন খুঁজে ফিরি মাটির ঘ্রাণ
কোয়ান্টাম অবস্থাসে নিকটে এলেই ইলেকট্রনের মতো
কেঁপে ওঠে আমার হৃদয়ের কক্ষপথ
যেন একান্ত নিরবচ্ছিন্ন সেই তরঙ্গ...
বুকের মধ্যে বিগ ব্যাংয়ের প্রতিধ্বনি—
আলোক বিচ্ছুরণ
প্রথম দেখা, প্রথম কথা
হাসি যেন তার ফোটনপ্রবাহ
সাড়া জাগায় নিউরনজালে
স্নায়ুর মাধ্যাকর্ষণে স্পর্শের সংকেত...
আমার মস্তিষ্কে সে এক অনাদি ধ্রুবক
যাকে ছেড়ে দিলে সমীকরণ দাঁড়ায় না আর
চোখে চোখ রাখলে হারিয়ে যাই কৃষ্ণবিবরে
ফানাফিল্লাহ হয়ে যাই চেতনার নিউক্লিয়াসে
তুমি চলে গেলে—সময় থেমে যায়,
আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাও ব্যর্থ হয়ে পড়ে
ভালোবাসা মানে নিউটনের সূত্র ভেঙে
ভাবনার মহাশূন্যে নতুন এক ঢেউ
কখনো সে সুপারনোভা-বিস্ফোরিত আগুন
কখনো নিঃশব্দ ডার্ক ম্যাটার
প্রতিটি অণুতে তার অনুপস্থিতি অপরিমেয়
কারণ, সে কোয়ান্টাম অবস্থা
একইসঙ্গে—আছে, আবার নেই।
নোটিফিকেশনের ফাঁকেযখন অফিস শেষে ট্রাফিকে আটকে থাকি,
নোটিফিকেশনের ফাঁকে জ্বলে ওঠে তোমার মেসেজ—
ব্যস্ত, অসুস্থ এই নগরীতে একঝলক ফাল্গুনি হাওয়া
মেট্রোর অজস্র যাত্রীর ভিড়ে দাঁড়িয়ে থাকা প্রেম
হাত ধরতে না পারার তীব্র অপূর্ণতা—
পরের স্টেশনে নেমে যাওয়ার অনিশ্চয়তা
তুমি সিটি স্ক্যানের মতো ব্যস্ত
আমি জিপিএস হারানো ট্যাক্সির যাত্রী—
দুজনের কেউই পৌঁছাই না কোথাও
আমাদের আর ‘ভালোবাসি’ বলা হয় না কখনো
যৌথ সুরে বাঁধাআঙুলে ছিল আগুনের ডাক
হৃদয়রেখায় মৃদু আলো ছড়ায় জোনাকি
রাতের নৈঃশব্দ্যে জেগে ওঠে সমুদ্রের ঢেউ
দুই তীর, দুই শরীর—একই স্রোতে বাঁধা
সূক্ষ্ম একটি তরঙ্গ দুলে ওঠে তোমার স্পর্শে
বিদ্যুৎ খেলে যায় শিরায় শিরায়
করতলে অনাবিষ্কৃত মানচিত্র—
যৌথ পাহাড়, আদি গুহাচিত্রের অনিবার্য ডাক
শরীর হয়ে ওঠে বইছুট অস্থির কবিতা
প্রতিটি ঘ্রাণ, প্রতিটি অস্ফুট শীৎকার—
যৌথ সুরে বাঁধা, তোমার-আমার
গাণিতিক মিথকোথাও কোনো নিশ্চিত পথ নেই
যদিও হঠাৎ ভেসে ওঠে ক্ষীণ রেখা
শীর্ণ রাত্রির উপকূলের মতো—
হারিয়ে যায় দৃষ্টির অতলে
আর যে পদচিহ্ন ছড়িয়ে আছে—
সংসারজুড়ে, চারদিকে, অস্পষ্ট
তাকে স্পর্শ করার মতো ভাষা—
আমার তো জানা নেই।
শূন্যস্থানই একমাত্র উপপাদ্য
নিজেকে যত বেশি প্রমাণ করি—
শূন্য হয়ে উঠি নিজেকে হারিয়ে
পূর্ণতা কি তবে গাণিতিক মিথ!
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স পর শ
এছাড়াও পড়ুন:
এলাকার নামেই সিনেমা—আবেগে ভাসলেন পাইকগাছার মানুষ
খুলনার পাইকগাছা উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের দারুণ মল্লিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে সিনেমা ‘দেলুপি’র জমজমাট প্রিমিয়ার প্রদর্শনী। বুধবার বিকেলে শুরু হওয়া এই আয়োজনে স্কুলমাঠ যেন পরিণত হয় এক উৎসবে।
বুধবার প্রিমিয়ার হলেও সিনেমা হলে ‘দেলুপি’ মুক্তি পাচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার। সারা দেশে মুক্তি পাবে ১৪ নভেম্বর। প্রিমিয়ার প্রদর্শনী ঘিরে স্থানীয় মানুষের আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো। বিকেল থেকেই মাঠে ভিড় করেন শত শত দর্শক। অনেকের হাতে সিনেমার পোস্টার, কেউ–বা পরিবার–বন্ধুদের সঙ্গে অপেক্ষায় পর্দা ওঠার। চারপাশে তখন উৎসবের আবহ, আনন্দের কোলাহল। সিনেমা শেষে দর্শকদের চোখেমুখে ছিল উচ্ছ্বাস। নিজেদের জীবনের গল্প বড় পর্দায় দেখে অনেকে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন।
দেলুটি গ্রামের বাসিন্দা শামীমা আক্তার বলেন, ‘আমাদের এলাকার নামেই সিনেমা—এটা ভাবতেই গর্ব লাগে। গল্পটা এত বাস্তব, যেন আমাদের জীবনেরই কথা বলা হয়েছে।’ স্থানীয় ৫ নম্বর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বদিয়ার রহমান বলেন, ‘ভাঙন ছিল আমাদের জীবনের অংশ। সেই কষ্টই এ সিনেমায় উঠে এসেছে। “দেলুপি” শুধু আমাদের গল্প নয়, অন্য উপকূলের অনেক মানুষের গল্পও বটে। আশা করি এই সিনেমা আমাদের দুর্দশার কথা আরও দূরে পৌঁছে দেবে।’
বুধবার প্রিমিয়ার হলেও সিনেমা হলে ‘দেলুপি’ মুক্তি পাচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার