অল্প দুধের সঙ্গে পানি ও রাসায়নিক পদার্থ মিশিয়ে শৌচাগারে যন্ত্র বসিয়ে তৈরি করা হচ্ছিল নকল দুধ। প্রতিদিন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সরবরাহ করা হতো প্রায় ৪০ মণ দুধ।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পাবনার ফরিদপুর উপজেলার গোপালনগর গ্রামে অভিযান চালিয়ে এমন একটি নকল দুধ তৈরি কারখানার সন্ধান পেয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে কারখানা থেকে বিপুল পরিমাণ নকল দুধ তৈরির সরঞ্জামসহ দুজনকে আটক করে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে প্রায় ৩০ মণ নকল দুধ জব্দ করে নষ্ট করা হয়েছে।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভাঙ্গুড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো.

সানাউল মোরশেদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন মোহাম্মদ আলহাজ্ব উদ্দিন।

দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার গোলাপনগর গ্রামের মো. তারেক হোসেন (২৬) ও তাঁর স্ত্রী মুন্নি খাতুন (২০)। তাঁদের মধ্যে তারেককে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা এবং মুন্নি খাতুনকে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

ভ্রাম্যমাণ আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তারেক হোসেনের বড় ভাই শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে তাঁদের বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে নকল দুধ তৈরি হচ্ছিল। এর আগে দুবার শফিকুলকে নকল দুধ তৈরির অপরাধে এক লাখ টাকা করে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পরে তিনি বেশ কিছুদিন নকল দুধ তৈরি থেকে বিরত ছিলেন। এরপর আবার নকল দুধ তৈরি শুরু করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দুপুর ১২টার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁদের বাড়িতে অভিযান চালান। অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে শফিকুল পালিয়ে যান। তবে বাড়িটির শৌচাগারে নকল দুধ তৈরির সময় তারেক ও তাঁর স্ত্রীকে আটক করা হয়।

ভাঙ্গুড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সানাউল মোরশেদ জানান, নকল দুধ তৈরির যন্ত্রে শব্দ হওয়ার কারণে তাঁরা সেটি শৌচাগারে বসিয়েছিলেন। যন্ত্র চালানোর সময় বাড়িতে উচ্চ শব্দে গান বাজানো হতো। চক্রটি দিনে প্রায় ৪০ মণ নকল দুধ তৈরি করে বিভিন্ন দুধ সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠানে বিক্রি করে আসছিলেন। তাঁরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে নকল দুধ তৈরির কথা স্বীকার করেছেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন মোহাম্মদ আলহাজ্ব উদ্দিন বলেন, সাধারণত গুরুর দুধে ৩ থেকে ৪ শতাংশ পর্যন্ত ফ্যাট থাকে। কিন্তু নকল এই দুধে প্রায় ১৩ শতাংশ ফ্যাট পাওয়া গেছে, যা মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এই দুধপানে লিভার, কিডনিসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি হতে পারে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: নকল দ ধ ত র র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বাসে নারী আসন

রাজধানী ঢাকায় নারীদের নিরাপদ যাতায়াত এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হয়নি। প্রতিদিন অসংখ্য নারী শিক্ষা, কর্মসংস্থান কিংবা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে বাসে যাতায়াত করেন। কিন্তু এ যাত্রা তাঁদের অনেকের জন্যই এক কঠিন এবং হয়রানিমূলক অভিজ্ঞতা হয়ে দাঁড়ায়। বাসে ওঠার মুহূর্ত থেকে নামা পর্যন্ত নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হন তাঁরা। এর মধ্যে অন্যতম হলো সংরক্ষিত আসন থাকা সত্ত্বেও তা ব্যবহার করতে না পারা।

নারীদের জন্য নির্ধারিত আসনের সংখ্যা যেমন অপ্রতুল, তেমনি ওই আসনগুলোতে পুরুষ যাত্রীদের দখলদারত্ব প্রায় স্বাভাবিক চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রতিনিয়ত দেখা যায়, নারী যাত্রীরা দাঁড়িয়ে থাকলেও সংরক্ষিত আসনে বসে থাকা পুরুষ যাত্রীরা উঠতে অনাগ্রহী। কেউ ভান করেন ঘুমিয়ে আছেন, কেউ নিরুত্তর থাকেন, আবার কেউ কেউ অসৌজন্যমূলক মন্তব্য করতেও পিছপা হন না। কেউ প্রতিবাদ করলে উল্টো তাচ্ছিল্য ও বিদ্রূপের শিকার হতে হয়। ফলে নারীরা শুধু শারীরিক কষ্টে নয়, প্রতিনিয়ত মানসিক হয়রানিরও শিকার হচ্ছেন। এ পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন।

মো. রিয়াদ হোসেন

শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ