Prothomalo:
2025-11-06@18:28:07 GMT

৯০ দিনের ৩৬ দিনই রাস্তা আটকা

Published: 8th, August 2025 GMT

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘ট্রাফিক অ্যালার্ট’ নামে একটি গ্রুপ রয়েছে। সেখানে প্রায় প্রতিদিন রাতে কোনো না কোনো সদস্য জানতে চান, পরের দিন নগরের কোথাও কোনো বিক্ষোভ বা সমাবেশ রয়েছে কি না। উদ্দেশ্য, সেই সড়ক এড়িয়ে যাওয়া।

ঢাকার যানজট নতুন নয়। নতুন হলো রাস্তা আটকে ঘন ঘন বিক্ষোভ, সমাবেশ ও সমজাতীয় কর্মসূচি, যা ঢাকাবাসীর জীবনযাত্রা অসহনীয় করে তুলেছে।

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত ৯ মে থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত ৯০ দিনে রাজধানীর কোনো না কোনো রাস্তা আটকে বিক্ষোভ বা সমাবেশ হয়েছে অন্তত ৩৬ দিন। এসব দিনে ৫৪ বার সড়ক আটকানোর ঘটনা ঘটেছে। কোথাও কোথাও টানা কয়েক দিন একই সড়ক আটকে রাখা হয়েছে। কোনো কোনো দিন একসঙ্গে রাজধানীর কয়েক জায়গায় রাস্তা আটকানো হয়েছে।

গুগল ম্যাপে রাস্তায় যানজট কম দেখে বাসা থেকে বের হই। অথচ পথে নেমে দেখি হঠাৎ রাস্তা বন্ধ করে যানজট তৈরি করা হয়েছে। সব ভোগান্তি যেন শুধু সাধারণ মানুষের।বেসরকারি হাসপাতালের শিক্ষানবিশ চিকিৎসক মিলিতা মিম

বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, ৫৪ বার সড়ক আটকানোর মধ্যে ২৬ বার ছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ছিল ১৩টি। চাকরিসংক্রান্ত দাবিতে রাস্তা আটকানো হয়েছে ৬ বার। বাকি ৯ বার অন্যান্য কারণে রাস্তা আটকানো হয়েছে।

সর্বশেষ গত বুধবার ঢাকার নয়াপল্টনে দলের কার্যালয়ের সামনে বিএনপি জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে বিজয় র‍্যালি আয়োজন করে। নয়াপল্টন থেকে বিজয়নগর, পুরানা পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব ও মৎস্য ভবন হয়ে এটি শেষ হয় রাজধানীর শাহবাগে। সেখানে উপস্থিত ছিল হাজার হাজার মানুষ।

বিএনপির র‍্যালির পাশাপাশি এদিন দুপুরে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ দ্রুত জারির দাবিতে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব মোড় অবরোধ করেন। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর দাবিতে বুধবার বাড্ডায় সড়ক অবরোধ করেন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) নেতা-কর্মীরা। তাঁরা ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচি দিয়েছিলেন।

সব মিলিয়ে পুরো শহরে যানজট ছড়িয়ে পড়ে। গভীর রাত পর্যন্ত ছিল সেই যানজট। বিএনপি এ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করলেও মানুষের ভোগান্তির কোনো শেষ ছিল না।

ঢাকার ডেমরা থেকে সপ্তাহে পাঁচ দিন মোহাম্মদপুরে নিজের কর্মস্থলে যাতায়াত করেন একটি বেসরকারি হাসপাতালের শিক্ষানবিশ চিকিৎসক মিলিতা মিম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গুগল ম্যাপে রাস্তায় যানজট কম দেখে বাসা থেকে বের হই। অথচ পথে নেমে দেখি হঠাৎ রাস্তা বন্ধ করে যানজট তৈরি করা হয়েছে। সব ভোগান্তি যেন শুধু সাধারণ মানুষের।’

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত ৯ মে থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত ৯০ দিনে রাজধানীর কোনো না কোনো রাস্তা আটকে বিক্ষোভ বা সমাবেশ হয়েছে অন্তত ৩৬ দিন। এসব দিনে ৫৪ বার সড়ক আটকানোর ঘটনা ঘটেছে।বেশি আটকানো হয় শাহবাগের রাস্তা

বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঢাকায় বেশি আটকানো হয় শাহবাগ মোড়ের সড়ক। ৯০ দিনে অন্তত ২২ বার এই রাস্তা আটকানো হয়েছে। কাকরাইল, জাতীয় প্রেসক্লাব, সায়েন্স ল্যাবের মতো সড়ক আটকানো হয়েছে চার থেকে পাঁচবার করে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) নিষেধাজ্ঞাভুক্ত এলাকাও ছিল। চলতি বছর একাধিক দফা গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা, বাংলাদেশ সচিবালয় এবং আশপাশের এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ, গণজমায়েত, মিছিল ও শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করে ডিএমপি। গত ১০ মে জারি করা গণবিজ্ঞপ্তির আগে শাহবাগও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিল।

শাহবাগে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (সাবেক বিএসএমএমইউ) ও বারডেম হাসপাতাল রয়েছে। ঢাকার উত্তরাংশের মানুষকে শাহবাগ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে হয়। সেই সড়ক আটকে থাকলে ঢাকা মেডিকেলে যাওয়ার অন্যান্য পথে যানজট বেড়ে যায়।

শাহবাগের রাস্তা বন্ধ থাকলে শহরের বড় অংশে যেমন যানজট ছড়িয়ে পড়ে, তেমনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাওয়া মানুষের ভোগান্তির শেষ থাকে না। দুই গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালের পাশে দিনভর মাইক বাজিয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি চিকিৎসাধীন রোগীদেরও দুর্ভোগের কারণ হয়।

নগরবাসীর জন্য এটা (রাস্তা বন্ধ) এখন একটি ফ্রাস্ট্রেশন (হতাশা) হয়ে দাঁড়িয়েছে।আজাদ প্রোডাক্টস গুলশানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াউর রহমান আজাদরাজধানীর মৎস্য ভবনের সামনের সড়ক অবরোধ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের, ১৪ মে ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সড়ক আটক ন শ হব গ ৯০ দ ন র সড়ক য নজট

এছাড়াও পড়ুন:

এলাকার নামেই সিনেমা—আবেগে ভাসলেন পাইকগাছার মানুষ

খুলনার পাইকগাছা উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের দারুণ মল্লিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে সিনেমা ‘দেলুপি’র জমজমাট প্রিমিয়ার প্রদর্শনী। বুধবার বিকেলে শুরু হওয়া এই আয়োজনে স্কুলমাঠ যেন পরিণত হয় এক উৎসবে।

বুধবার প্রিমিয়ার হলেও সিনেমা হলে ‘দেলুপি’ মুক্তি পাচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার। সারা দেশে মুক্তি পাবে ১৪ নভেম্বর। প্রিমিয়ার প্রদর্শনী ঘিরে স্থানীয় মানুষের আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো। বিকেল থেকেই মাঠে ভিড় করেন শত শত দর্শক। অনেকের হাতে সিনেমার পোস্টার, কেউ–বা পরিবার–বন্ধুদের সঙ্গে অপেক্ষায় পর্দা ওঠার। চারপাশে তখন উৎসবের আবহ, আনন্দের কোলাহল। সিনেমা শেষে দর্শকদের চোখেমুখে ছিল উচ্ছ্বাস। নিজেদের জীবনের গল্প বড় পর্দায় দেখে অনেকে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন।

দেলুটি গ্রামের বাসিন্দা শামীমা আক্তার বলেন, ‘আমাদের এলাকার নামেই সিনেমা—এটা ভাবতেই গর্ব লাগে। গল্পটা এত বাস্তব, যেন আমাদের জীবনেরই কথা বলা হয়েছে।’ স্থানীয় ৫ নম্বর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বদিয়ার রহমান বলেন, ‘ভাঙন ছিল আমাদের জীবনের অংশ। সেই কষ্টই এ সিনেমায় উঠে এসেছে। “দেলুপি” শুধু আমাদের গল্প নয়, অন্য উপকূলের অনেক মানুষের গল্পও বটে। আশা করি এই সিনেমা আমাদের দুর্দশার কথা আরও দূরে পৌঁছে দেবে।’

বুধবার প্রিমিয়ার হলেও সিনেমা হলে ‘দেলুপি’ মুক্তি পাচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার

সম্পর্কিত নিবন্ধ