জবির দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পাবে সেনাবাহিনী, লিখিত না আসা পর্যন্ত শাটডাউন
Published: 15th, January 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম। তবে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, লিখিত নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত তাদের শাটডাউন কর্মসূচি চলবে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের সামনে উপাচার্য এ তথ্য জানান।
উপাচার্য বলেন, “আজকের মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তর করা হবে। সেনাবাহিনী ইতিমধ্যে সম্মতি দিয়েছে। আগামী রোববার তারা ক্যাম্পাস পরিদর্শন করবেন। কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। যা তিন কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দেবে।”
পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড.
ক্যাম্পাস শাটডাউন রাখার ঘোষণা
এদিকে শিক্ষার্থীরা লিখিত নিশ্চয়তার দাবি জানিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি একেএম রাকিব বলেন, “যতদিন পর্যন্ত সেনাবাহিনী লিখিতভাবে কাজ বুঝে না নিবে ততদিন পর্যন্ত ক্যাম্পাসে শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।”
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে আবাসিক হলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মাসব্যাপী আন্দোলনের মুখে কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনের সিদ্ধান্ত জানায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার।
অ্যাকাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, আবাসন ব্যবস্থা, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, ক্যাফেটেরিয়া, খেলার মাঠ, চিকিৎসা কেন্দ্র, সুইমিংপুল, লেক নির্মাণসহ উন্নতমানের ক্যাম্পাস তৈরির মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে তেঘরিয়ার পশ্চিমদি মৌজায় ২০০ একর ভূমি অধিগ্রহণের অনুমোদন দেওয়া হয়।
২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর জমির চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় ভূমি মন্ত্রণালয়। ৯ অক্টোবর নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনে ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়নের জন্য প্রকল্প অনুমোদন করে একনেক। এক হাজার ৯২০ কোটি ৯৪ লাখ ৩৯ হাজার টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের অক্টোবরের মধ্যে।
পরের বছর ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি মোট ২০০ একর জমির মধ্যে ১৮৮ দশমিক ৬০ একর জমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বুঝে পায়। কিন্তু এখনো অবশিষ্ট ১১ দশমিক ৪০ একর জমি বুঝে পায়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গত অগাস্টে ক্ষমতার পালাবদলের পর দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নির্মাণ কাজের দায়িত্ব সেনাবাহিনীর হাতে দেওয়াসহ তিন দাবিতে আন্দোলনে নামে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গত ৫ নভেম্বর তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন।
এরপর ১১ নভেম্বর ইউজিসি প্রস্তাবিত পাইলট প্রকল্পে জগন্নাথের বিষয়টি অন্তর্ভুক্তিসহ ৫ দাবিতে সচিবালয় ‘ঘোরাও করেন’ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
সেদিন শিক্ষা সচিবের সঙ্গে দেখা করতে না পেরে তারা সচিবালয়ের বাইরে অবস্থান নেন। এরপর তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের তিন দিন সময় চাইলে সচিবালয়ের সামনের অবস্থান থেকে সরে যান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মুখে পরদিন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নির্মাণ কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তরে সায় দেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
এরপর দুই মাস পেরিয়ে গেলেও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় এবারে অনশন কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা/লিমন/ইমন
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
যশোরে গভীর রাতে অস্ত্রের মুখে ৭ জনকে জিম্মি করে সোনার দোকানে ডাকাতি
যশোরের অভয়নগর উপজেলার একটি সোনার দোকানে ডাকাতি হয়েছে। গতকাল রোববার গভীর রাতে মশিয়াহাটী বাজারের সৌখিন জুয়েলার্সে এ ঘটনা ঘটে।
দোকানটির মালিক গৌতম কর্মকার (৫০)। তিনি মনিরামপুর উপজেলার কুলটিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
গৌতম কর্মকার জানান, গতকাল রাত ১০টার দিকে তিনি দোকান বন্ধ করে বাড়িতে যান। গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনে একটি কল আসে। অপর প্রান্ত থেকে তাঁকে জানানো হয়, তাঁর সোনার দোকানে ডাকাতি হচ্ছে। কিন্তু ভয়ে তিনি রাতে বাড়ি থেকে বের হননি। আজ সকালে দোকানটিতে গিয়ে তিনি ডাকাতির আলামত দেখতে পান।
গৌতম কর্মকারের দাবি, তাঁর দোকানের লকারে প্রায় ২ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার ও ২৪ ভরি ওজনের রুপার গয়না ছিল। এগুলোর বাজারমূল্য চার লাখ টাকার বেশি। ডাকাত দলটি এগুলোর সব লুট করেছে।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, গতকাল রাত ২টার দিকে ১০ থেকে ১২ জনের একটি সশস্ত্র ডাকাত দল মশিয়াহাটী বাজারে আসে। তাদের সবার মুখ কাপড়ে দিয়ে বাঁধা ছিল। একপর্যায়ে অস্ত্রের মুখে একজন নারীসহ বাজারের অন্তত সাতজনকে দড়ি দিয়ে হাত বেঁধে এবং মুখে টেপ লাগিয়ে ফেলে রাখে। এরপর সৌখিন জুয়েলার্সের কলাপসিবল গেটের একটি পাশ এবং শাটারের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। পরে লকারের তালা ভেঙে সোনা ও রুপার গয়না নিয়ে যায় তারা। ভোর চারটা পর্যন্ত সেখানে ডাকাতি হয়। এ সময় শব্দ শুনে ঘর থেকে বের হন স্থানীয় বাসিন্দা বিকাশ বিশ্বাস (৬০) ও তাঁর স্ত্রী প্রতিমা বিশ্বাস (৫৫)। ডাকাতেরা অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে প্রতিমা বিশ্বাসের গলার একটি সোনার হার নিয়ে যায়।
মশিয়াহাটী বাজারের পাশে সুজাতপুর গ্রাম। ওই গ্রামের কৌশিক দাস (১৬) জানায়, গতকাল রাতে ঘুম আসছিল না। রাত ২টা ২০ মিনিটের দিকে হেঁটে বাজারের দিকে যাচ্ছিল। বাজারে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে ডাকাতেরা তাকে ধরে ফেলে। এরপর তার দুই হাত দড়ি দিয়ে পেছনে বেঁধে মুখে চওড়া স্কচটেপ লাগিয়ে দেয়।
কৌশিক দাস বলে, ‘ডাকাত দল চলে যাওয়ার পর ভোর চারটার দিকে আমি কৌশলে হাতের বাঁধন খুলে ফেলি। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্যদের হাত ও মুখের স্কচটেপ খুলে দিয়েছি।’
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কে এম রবিউল ইসলাম, বিষয়টি চুরি না ডাকাতি, তা তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।