পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) সাতটি আবাসিক হলের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি হলে পুরনো নাম ফিরিয়ে আনা হয়েছে। আর কয়েকটির নতুনভাবে নামকরণ করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় রিজেন্ট বোর্ডের ৫৫তম সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। গতকাল মঙ্গলবার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. ইখতিয়ার উদ্দিন স্বাক্ষরিত একটি পরিপত্র জারির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান–২০২৪ পরবর্তী বৈষম্যবিরোধী চেতনায় উজ্জীবিত ছাত্র-ছাত্রীদের জোরালো দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত সুপারিশ কমিটির ভিত্তিতে এবং ৩০ এপ্রিল অনুষ্ঠিত রিজেন্ট বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী’ এই প্রশাসনিক আদেশ কার্যকর করা হয়েছে।

প্রশাসনিক আদেশ অনুযায়ী, মূল ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম বদলে রাখা হয়েছে বিজয়-২৪। এছাড়া শের-ই বাংলা হল-১ ও শের-ই বাংলা হল-২ এর নাম পরিবর্তন করে আগের নাম শহীদ জিয়াউর রহমান হল-১ ও শহীদ জিয়াউর রহমান হল-২ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

নারী শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলেও এসেছে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। মূল ক্যাম্পাসে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম বদলে রাখা হয়েছে রাবেয়া বসরী হল এবং বরিশাল ক্যাম্পাসে একই নামে থাকা হলের নামকরণ করা হয়েছে সুলতানা রাজিয়া হল।

এছাড়া নির্মাণাধীন নতুন দুটি হলের নাম রাখা হয়েছে যথাক্রমে শের-ই বাংলা হল (ছাত্রদের জন্য) এবং চাঁদ সুলতানা হল (ছাত্রীদের জন্য)।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১৩ আগস্ট বরিশাল ক্যাম্পাসে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল এবং ১২ ডিসেম্বর মূল ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নামফলক ভাঙচুর করেন কিছু শিক্ষার্থী। ওই সময় থেকেই আবাসিক হলগুলোর ‘নামকরণে রাজনৈতিক প্রভাব’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তারা।

তবে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নামফলক ভাঙার সময় কিছু আবাসিক শিক্ষার্থী বাধা দেন ও তোপের মুখে পড়েন সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা। পরে প্রশাসনের সঙ্গে একাধিক দফা আলোচনা এবং কমিটি গঠনের মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছায় কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, এই সিদ্ধান্ত সমান অধিকারের চেতনা ও শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার অংশ হিসেবেই দেখা উচিত।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র রহম ন হল হল র ন ম

এছাড়াও পড়ুন:

১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।

আরো পড়ুন:

নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা

সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন 

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।

বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।

অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • ১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা