আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কমিশন প্রয়োজন
Published: 5th, February 2025 GMT
জুলাই আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পৃথক কমিশন গঠন করা উচিত। কারা প্রকৃতপক্ষে ক্ষতিগ্রস্ত তাদের তালিকা তৈরি এবং বিচার নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) কার্যালয়ে ট্রানজিশনাল জাস্টিস বা ক্রান্তিকালীন ন্যায়বিচার বিষয়ক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা জানান। ক্রান্তিকালীন ন্যায়বিচারের জন্য ট্রুথ কমিশনের প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরেন তারা।
সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গবেষক ও রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশের (রিব) প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ড.
তিনি জানান, জুলাই আন্দোলনে হতাহতদের জন্য একটা ফাউন্ডেশন হয়েছে। সেখানে ১০০ কোটি টাকা জমা হয়েছে। সেখান থেকে কারা সাহায্য পাচ্ছে, কারা পাচ্ছে না, কেন পাচ্ছে না। এগুলো সবার জানতে হবে।
ক্রান্তিকালীন ন্যায়বিচার নিয়ে আলোচনায় বলা হয়, গৃহযুদ্ধ বা দমনমূলক স্বৈরশাসনের আমলে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন পরিস্থিতি থেকে উদ্ভূত অশান্ত পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে এসে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ব্যবস্থাকে ক্রান্তিকালীন বিচারব্যবস্থা বলা যায়। ক্রান্তিকালীন ন্যায়বিচার ধারণার সঙ্গে গণতন্ত্রের সম্পর্ক রয়েছে। দেশ এখন একটি ক্রান্তিকালের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এ সময় মানবাধিকার কর্মীদের কী করণীয় সে সম্পর্কে দিক নির্দেশনা দিতে পারে ক্রান্তিকালীন ন্যায়বিচারের ধারণা। ট্রানজিশনাল বলতে এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থার দিকে যাওয়া। ক্রান্তিকালীন বা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি থেকে গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের পথ নির্দেশ করে। ট্রানজিশনাল জাস্টিসের মূল লক্ষ্য হলো অপরাধীর বিচার ও দায়ব্যবস্থা নিশ্চিত করে, ভিকটিমের চাহিদা মিটিয়ে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করা। তার জন্য বিভিন্ন প্রক্রিয়া ও মেকানিজমের মধ্যে ট্রুথ কমিশন অন্যতম।
সেমিনার উদ্বোধন করেন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুলতানা কামাল। তিনি ক্রান্তিকালীন ন্যায়বিচারের সঙ্গে মানবাধিকার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার গভীর সংযোগের বিষয়টি তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার ট্রানজিশনের পথে বিশাল পথ বাকি আছে৷ আমাদের পঞ্চাশ বছরের স্মৃতি সুখকর না। মানবাধিকার কর্মী হিসেবে আমাদের পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করতে হবে। আমরা সবসময় অনুকূল পরিবেশ পাবো তা নয়। মানবাধিকার কর্মীরা সব সময় প্রতিকূল পরিবেশেই কাজ করে।
সেমিনারে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন ছাড়াও বেসরকারি সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, ডব্লিওবিবি ট্রাস্ট, রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশ (রিব), স্পেচ ফাউন্ডেশন, বাঙালি সমগ্র জাদুঘর ও নিজেরা করির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে সমঝোতা নয়, শক্তির খেলায় পুতিন
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে ভ্লাদিমির পুতিন আদৌ কোনো চুক্তি চান না। একটি চুক্তির জন্য তাঁকে যেভাবে তোষামোদ করা হচ্ছে, তা-ও উপভোগ করছেন তিনি। তাই মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে পাঁচ ঘণ্টায় বৈঠকের পরও কোনো সমঝোতায় যাননি।
বৈঠক থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও জামাত জ্যারেড কুশনারকে বলতে গেলে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে।
প্রায় চার বছর আগে এই যুদ্ধ রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনই শুরু করেছিলেন। ভেবেছিলেন নিমেষেই ইউক্রেনে জয় পাবেন। কারণ, আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে তখন বেশ বিব্রত অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র। তবে পুতিনের আশা পূরণ হয়নি। কিয়েভের সহায়তার এগিয়ে আসে ওয়াশিংটন ও ন্যাটো। ফলে এক বছর আগে যুদ্ধে ইউক্রেনের কৌশলগত জয়ের মতো অবিশ্বাস্য পরিস্থিতিও সৃষ্টি হয়েছিল।
তবে সবকিছু বদলে যায় দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প ক্ষমতায় বসার পর। যেকোনো মূল্যে যুদ্ধ থামাতে তৎপর হয়ে ওঠেন তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট সাফ জানিয়ে দেন, এই যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের নয়। আর কোনো অর্থ এর পেছনে অপচয় করতে চান না তিনি। এভাবে একটি শান্তিচুক্তির জন্য যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার পেছনে ঘুরবে—এমনটা হয়তো স্বপ্নেও ভাবেননি পুতিন। আর যত দিন ধরে যুদ্ধ চলবে, মস্কোরই লাভ হবে।
চুক্তির যে অগ্রগতি, তা আরও সময় নেবে বলেই মনে হচ্ছে। থ্যাংকসগিভিং উৎসবের আগে চুক্তি করার জন্য ট্রাম্প যে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন, তা এখন মরীচিকা। মস্কো আলোচনায় কোনো সমঝোতা না হওয়ার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এখন আবার ইউরোপীয়দের সঙ্গে বসবেন, তারপর যুক্তরাষ্ট্রের কাছে যাবেন। এভাবে প্রক্রিয়াটি চলতেই থাকতে পারে।
পুতিন একজন বাস্তববাদী মানুষ। সব ধরনের সুযোগ ও বাধার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেন তিনি। আর এই যুদ্ধ ঘিরে নিজের একটি ভূরাজনৈতিক স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যেও কাজ করছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তা হলো বৈশ্বিক নিরাপত্তার ভারসাম্য নতুন করে সাজিয়ে নেওয়া এবং দশকের পর দশক ধরে চলে আসা মার্কিন আধিপত্যে বদল আনা। ক্ষমতায় টিকে থাকতেও যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া একটি কৌশল।
আরও পড়ুনপুতিনের দুই দিনের ভারত সফর নিয়ে এখন পর্যন্ত যা যা জানা গেল৫৩ মিনিট আগেএটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে ধীরে হলেই ইউক্রেনে সামরিকভাবে অগ্রগতি পাচ্ছেন পুতিন। তিনি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন ইউক্রেনে সেনা ও তহবিল সংকট চলছে। বাড়ছে রাজনৈতিক সংকট। এ থেকে একটি বিষয় পরিষ্কার যে চুক্তিতে না গেলেও আখেরে রাশিয়ার পূর্ণ বিজয় ছাড়া আর কিছু দেখা যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে নিজের ভূরাজনৈতিক স্বপ্ন পূরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন পুতিন।
আরও পড়ুনভারতকে ‘নিরবচ্ছিন্নভাবে’ জ্বালানি সরবরাহ দিতে প্রস্তুত রাশিয়া: পুতিন৭ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুননয়াদিল্লির ১৭০ কোটি রুপির নিজামের প্রাসাদে থাকছেন পুতিন, কী আছে এতে৯ ঘণ্টা আগে