ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে আজ দিনভরও ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে এক্সকাভেটর সরিয়ে নেওয়া হলেও অনেককে ভবনের বিভিন্ন অংশের স্টিল ও কাঠের কাঠামোসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ভেঙে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
কেউ আবার ভবনের ভেতর থেকে পোড়া, ছেঁড়া বই ও প্রকাশনা নিয়ে যাচ্ছিলেন। কয়েকজনকে কেটে ফেলা নারকেল গাছের ডাব ছিঁড়ে নিতেও দেখা যায়। এসব কার্যক্রমের মধ্যেই ভাঙা ভবনের সামনে মাইকে বিভিন্ন বক্তব্য ও স্লোগান দিচ্ছিলেন কিছু মানুষ।
বিকেলে সেখানে গরু জবাই করে বিরিয়ানি রান্নার ব্যবস্থা করে জুলাই ঐক্যজোট নামের একটি সংগঠন। সংগঠনটির মুখপাত্র সাঈদ আহমেদ সরকার বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের চিহ্ন গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর উৎসব পালনের অংশ হিসেবে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে মুজিবের বাড়ির সামনেই গরু জবাই করা হয়েছে।’
সাঈদ আরও বলেন, বিরিয়ানি রান্না করা হবে। এখানে আসা সবাইকে বিনা মূল্যে গরুর মাংস দিয়ে রান্না করা বিরিয়ানি খাওয়ানো হবে। গাবতলী পশুর হাট থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় গরুটি কেনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের ধংসাবশেষ দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে আসছেন মানুষজন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এই বাড়িতে শেখ মুজিবুর রহমান, তার স্ত্রী–পুত্র, পুত্রবধূসহ আত্মীয়দের হত্যা করা হয়েছিল। পরে এই বাড়িটিকে স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছিল।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছিল বিক্ষুব্ধ জনতা। এর পর থেকে বাড়িটি অনেকটা পরিত্যক্ত ছিল।
গণঅভ্যুত্থানের ছয় মাস পূর্তি ছিল গতকাল বুধবার। নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারের ঘোষণা দেওয়ার কথা ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা বুধবার রাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। ক্রেন, এক্সকাভেটর ও বুলডোজার দিয়ে বাড়িটি ভাঙা শুরু হয়। আজ সারা দিন চলে বাড়িটি ভাঙার কাজ।
এদিকে শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিচিহ্ন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। ভেঙে ফেলা শুরু হয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ধ নমন ড শ খ ম জ ব র রহম ন ধ নমন ড
এছাড়াও পড়ুন:
শেরপুর-২ আসন থেকে এনসিপির হয়ে লড়বেন সেই খোকন চন্দ্র বর্মণ
গণঅভ্যুত্থানে গুরুতর আহত হয়ে চেহারা বদলে যাওয়া সেই খোকন চন্দ্র বর্মণ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) হয়ে লড়বেন। তিনি শেরপুর-২ আসন থেকে শাপলা কলি প্রতীকে নির্বাচন করবেন।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকার বাংলামোটরে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ১২৫ আসনে প্রথম ধাপের মনোনয়ন ঘোষণা করেন দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন। এ সময় শেরপুর-২ আসনে এই জুলাই যোদ্ধার নাম ঘোষণা করা হয়।
এদিকে, শেরপুর- ২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) সংসদীয় আসনে বিএনপির হয়ে লড়বেন প্রয়াত হুইপ আলহাজ জাহেদ আলী চৌধুরীর ছেলে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও শেরপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার ফাহিম চৌধুরী। একই আসনে জামায়াতে ইসলামীর হয়ে লড়েবেন গোলাম কিবরিয়া।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানার সামনে পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন খোকন চন্দ্র বর্মণ। এই ঘটনার পর তার ঠোঁট, মাড়ি, নাক এবং তালু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া, তার বাম চোখও নষ্ট হয়ে যায়। পরে তার চিকিৎসার জন্য রাশিয়াতেও পাঠায় সরকার। সুস্থ হলেও বদলে যায় তার চেহারা।
খোকন চন্দ্র বর্মণ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম সাক্ষী হিসেবেও সাক্ষ্য দিয়েছেন। এছাড়া, দল গঠনের পর থেকেই এনসিপির সঙ্গে জড়িত আছেন তিনি। বিভিন্ন সভা-সমাবেশেও তাকে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে।
ঢাকা/রায়হান/ইভা