‘তামিমিয়ান, সাকিবিয়ান, মাশরাফিয়ান বলে কিছু নেই, সবাই বাংলাদেশি’—তামিমের বিদায়ী বার্তা
Published: 7th, February 2025 GMT
উদ্যাপনের দৃশ্যটা সবার চেনা। গত বছরেও লেখা হয়েছে এই গল্প। সময় বদলেছে, বদলে গেছে আরও অনেক কিছুই। কিন্তু বিপিএলের চ্যাম্পিয়ন থেকে গেছে একই—ফরচুন বরিশাল। শিরোপা উঁচিয়ে ধরা অধিনায়কের নামটাও অভিন্ন—তামিম ইকবাল।
তবে তামিমের চোখ আজ ছলছল। জয়ের আনন্দের দিনে তাঁকে ছুঁয়ে গেছে বিদায়ের বেদনাও। ফাইনালের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের বড় পর্দায় ভেসে এল তামিমকে নিয়ে স্মৃতিচারণা।
জাকের আলী, জাকির হাসান, তানজিম হাসান কিংবা ইয়াসির আলী জানালেন তাঁকে ঘিরে নিজেদের স্মৃতি। কারও কণ্ঠে তামিমের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগ করতে না পারার আক্ষেপ, কেউ বললেন তামিমকে কাছ থেকে দেখতে পাওয়ার অনুভূতি।
বড় পর্দায় ওই দৃশ্য, তামিমের বড় কোনো ইনিংসের গল্প যখন বলা হচ্ছে; তিনি তখন স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকার পাশে দাঁড়িয়ে শুনছেন সেসব। তাঁর চোখেমুখে বিদায়ের বেদনা, চোখ দুটোতে হয়তো পুরোনো অনেক স্মৃতির নতুন দৃশ্যায়ন। প্রিয় বন্ধু মুশফিকুর রহিম ও দীর্ঘদিনের সতীর্থ মাহমুদউল্লাহও মঞ্চে ওঠেন এরপর।
মাহমুদউল্লাহ তামিমকে ব্যাখ্যা করেন এক শব্দে—ক্যারিশম্যাটিক। মুশফিক জানান, তাঁর চোখে তামিমই বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান। এসব গল্পের পেছনের কারণটা এতক্ষণে বুঝে যাওয়ার কথা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরে যাওয়া তামিমকে বিপিএল ফাইনালের পরই আনুষ্ঠানিক ‘বিদায়’ বলেছে বিসিবি।
অনুষ্ঠানের শেষ প্রান্তে নিজের দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে মঞ্চে আসেন তামিমও। ১৭ বছরের বর্ণিল আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার নিয়ে আরও একবার বলেন নিজের শুরুর গল্প। ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি জেতা বাংলাদেশের উদ্যাপন দেখে ছোট্ট বয়সেই ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন, সেটাই জানান, ‘বাংলাদেশ যখন শিরোপা জিতল। পুরো বাংলাদেশের উপভোগটা ছিল অসাধারণ। ওই দিনই ঠিক করলাম, আমি ক্রিকেটার হব।’
তামিমের ক্রিকেটার হওয়ার গল্পের পেছনে বাবা ইকবাল খানের কথা শোনা গেছে অনেকবারই। বাবার কথা তামিম স্মরণ করেন আরও একবার, ‘আমার বাবার ইচ্ছে ছিল, একদিন আমি দেশের হয়ে খেলব। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তিনি আমাদের সঙ্গে নেই।’
তামিমের ১৭ বছরের ক্যারিয়ারজুড়ে জড়িয়ে ছিলেন চাচা আকরাম খান। তাঁদের নিয়ে সমালোচনাও হয়েছে অনেকবার। এসব সহ্য করায় আকরামের প্রতি আলাদা করে কৃতজ্ঞতা জানান তামিম। ছেলে আরহাম ইকবাল কীভাবে তাঁর সমর্থক হয়ে গেছে, তা–ও শোনান তামিম।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে না ফেরার সিদ্ধান্ত যে চট্টগ্রামে নেওয়া, সেটাও জানান তামিম। এরপর সমর্থকদের জন্য শেষ বার্তা হিসেবে তিনি বলেন, ‘তামিমিয়ান, সাকিবিয়ান, মাশরাফিয়ান বলে কিছু নেই। সবাই বাংলাদেশের সমর্থক। এটা (নির্দিষ্ট খেলোয়াড়ের ভক্ত হওয়া) বাংলাদেশের ক্রিকেটকে ধ্বংস করেছে। দয়া করে এটা থামান। আমরা যে কারও সমর্থক হতে পারি, কিন্তু সবাই বাংলাদেশি। এটাই আমার শেষ বার্তা।’
তামিমের সঙ্গে মঞ্চে আসা স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকীও কথা বলেন। তামিম এখন পরিবারকে অনেক সময় দিতে পারবেন, এমন প্রত্যাশা করেন তিনি।
তামিমের সময়জুড়ে এখন হয়তো অনেক কিছুই থাকবে। কিন্তু ২০০৭ বিশ্বকাপে জহির খানকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে মারা ছক্কা, লর্ডস টেস্টে সেঞ্চুরি কিংবা ভাঙা আঙুল নিয়ে বাংলাদেশের জন্য এক হাতে ব্যাটিংয়ে নেমে পড়া থেকে যাবে বাংলাদেশের ক্রিকেটের অমলিন স্মৃতিতে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
খাদ্যে বিষক্রিয়ায় ৬ কেজি ওজন কমেছে এমবাপ্পের
ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে খেলতে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পরপরই বমি ভাব শুরু হয় কিলিয়ান এমবাপ্পের। এরপর ভুগতে থাকেন জ্বরে। পেটের ব্যথা দেখা দিলে তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। রিয়াল মাদ্রিদের এই তারকা ফরোয়ার্ড এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন যে হাসপাতালে পর্যন্ত ভর্তি হতে হয়। ফলে গ্রুপ পর্বের ম্যাচগুলো খেলতে পারেননি।
কিছুটা সুস্থ হওয়ায় পরই অবশ্য হাসপাতাল ছাড়েন এমবাপ্পে। এরপর বদলি হিসেবে দুটি ম্যাচও খেলেন। তবে এমবাপ্পের হাসপাতাল ছাড়ার প্রায় তিন সপ্তাহ হতে চললেও তাঁর অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণ অজানা ছিল।
আরও পড়ুনক্লাব বিশ্বকাপে গোল্ডেন বুটের লড়াইয়ে এগিয়ে যে দুজন০৭ জুলাই ২০২৫অবশেষে প্রকৃত কারণ জানিয়েছে ফরাসি ক্রীড়া দৈনিক লে’কিপ। সংবাদমাধ্যমটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে পাকস্থলীতে সমস্যা দেখা দিয়েছিল এমবাপ্পের।
অসুস্থতার কারণে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে খেলতে পারেননি কিলিয়ান এমবাপ্পে