শত শত সিনেমার সেই ‘চেনা মুখ’ এখন কোথায়
Published: 3rd, May 2025 GMT
বছরের পর বছর পর্দায় তাঁকে দেখা গেছে। খুব চেনা মুখ। বলিউডের তাঁর উপস্থিতি অন্য রকম। বললে বাড়াবাড়ি হবে না মোটেও, বলিউডের রুপালি পর্দা যতটা ঝলমলে, তার পেছনের গল্পগুলো ঠিক ততটাই জটিল। একজন অভিনেত্রীর জীবনের পেছনে লুকিয়ে থাকে অনেক না-বলা কাহিনি, অনেক ত্যাগ। তেমনই এক নাম অরুণা ইরানি। ঠিক একনামে চেনা, প্রিয় মুখ তালিকায় থাকা নায়িকা নন; সমালোচকদের মতে তিনি এমনই একজন শিল্পী, যিনি ছিলেন নায়িকার ছায়ায় দাঁড়িয়ে পর্দার আলো হয়ে ওঠার অনন্য প্রতীক। পর্দার আড়ালে আলো জ্বালানো এক নাম। আজ এই প্রবীণ অভিনেত্রীর জন্মদিন।
কষ্টের জীবন
অরুণা ইরানি ১৯৪৬ সালের ৩ মে, মুম্বাইয়ের এক পার্সি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন আট ভাইবোনের মধ্যে একজন। তাঁর বাবা ছিলেন মঞ্চশিল্পী, আর মা গৃহিণী। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তাঁর পড়াশোনা থেমে যায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে। তবে ছোটবেলায় সংসারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েই তিনি বুঝে গিয়েছিলেন—নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে নিজের পথ নিজেকেই তৈরি করতে হবে। পারিবারিক দারিদ্র্য, সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং ক্যারিয়ারের অনিশ্চয়তা—সবকিছু পেরিয়ে তিনি নিজেকে বলিউডের এক গুরুত্বপূর্ণ অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। শুরুটা মাত্র ৯ বছর বয়সেই, শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। তাঁর প্রথম চলচ্চিত্র ছিল গঙ্গা যমুনা (১৯৬১)। এরপর প্রায় পাঁচ দশকের ক্যারিয়ারে হিন্দি, কন্নড়, গুজরাটি ও মারাঠি ভাষার পাঁচ শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেন তিনি।
নায়িকা নন, চরিত্রাভিনেত্রী
‘বম্বে টু গোয়া’ সিনেমাটি নিশ্চয়ই অনেকের দেখা। অমিতাভ যাত্রাপথে যাকে অনুসরণ করতে যায়। নাম–খ্যাতি অর্জনের আশায় একটা মেয়ে বাড়ি ছাড়ে। পথে শত ঝক্কিঝামেলা। তবে গ্ল্যামার–সর্বস্ব নায়িকা নন বরং অরুণা ইরানির অভিনয়ের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য ছিল তাঁর চরিত্রের বৈচিত্র্য। তিনি কখনো প্রথাগত নায়িকা হিসেবে দর্শকের সামনে আসেননি, তবে তাঁর অভিনীত চরিত্রগুলো ছিল গল্পের অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। একেকটি চরিত্র যেন নিজেই এক জীবন্ত আখ্যান, যা চলচ্চিত্রকে পরিপূর্ণ করে তোলে।
১৯৭১ সালে মুক্তি পাওয়া ‘ক্যারাভান’ সিনেমায় খলনায়িকার চরিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রথম ফিল্মফেয়ার মনোনয়ন পান তিনি। বেটাসহ বেশ কিছু সিনেমায় সেরা পার্শ্ব-অভিনেত্রী হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করেন। বলিউডে যাঁরা চরিত্রাভিনেতাদের ছোট করে দেখেন, তাঁদের চোখে চোখ রেখে অরুণা যেন বলেন, ‘নায়িকা না হলেও, আমি গল্পের অতি প্রয়োজনীয় চরিত্র।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চর ত র
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতে উড়োজাহাজে সহযাত্রীর থাপ্পড়ের পর খোঁজও মিলছে না যাত্রীর: পরিবারের দাবি
ভারতে একটি উড়োজাহাজের ফ্লাইটে সহযাত্রীকে থাপ্পড় দিয়েছেন আরেক যাত্রী। এরপর থাপ্পড়ের শিকার ওই যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন বলে দাবি করেছে তাঁর পরিবার। নিখোঁজ ওই যাত্রীর নাম হুসেইন আহমেদ মজুমদার (৩২)।
ইন্ডিগো বিমানের একটি ফ্লাইটে মাঝ–আকাশে হোসেইন প্যানিক অ্যাটাকের (আতঙ্কিত) শিকার হওয়ার পর এক যাত্রী তাঁকে চড় মারেন। চড় দেওয়া ওই ব্যক্তির নাম হাফিজুল রহমান বলে শনাক্ত করা হয়েছে।
হুসেইন ইন্ডিগোর ফ্লাইটে মহারাষ্ট্র রাজ্যের মুম্বাই থেকে কলকাতা হয়ে আসাম রাজ্যের শিলচর যাচ্ছিলেন। উড়োজাহাজে ওঠার পর তাঁর হঠাৎ আতঙ্কজনিত সমস্যা (প্যানিক অ্যাটাক) হয়। হঠাৎ ভয় পাওয়া এবং শারীরিক প্রতিক্রিয়া থেকে প্যানিক অ্যাটাক বোঝা যায়।
ঘটনার সময় উড়োজাহাজের দুই কেবিন ক্রু হুসেইনকে নামতে সাহায্য করছিলেন। ঠিক তখনই পাশের আসনে বসা এক যাত্রী হঠাৎ তাঁকে চড় মারেন। অন্য একজন যাত্রী এ ঘটনার ভিডিও মুঠোফোনে ধারণ করেন। ভিডিওতে দেখা যায়, কেবিন ক্রুরা ওই যাত্রীকে শান্ত থাকতে বলেন এবং অন্য একজন যাত্রী প্রতিবাদ করে আক্রমণকারী ব্যক্তিকে বলছেন, ‘আপনি কেন তাঁকে মারলেন।’
কলকাতায় উড়োজাহাজ থেকে নামার পর নিরাপত্তাকর্মীরা হুসেইনকে চড় মারার ঘটনায় অভিযুক্ত হাফিজুল রহমানকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পরে অবশ্য তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এদিকে হুসেইন আসামের শিলচরে না পৌঁছানোয় পরিবারের লোকজন চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁরা জানান, হুসেইন বাড়িতে আসেননি, ফোনও করেননি। এমনকি তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
পরিবার সূত্রে জানায় যায়, হুসেইন মুম্বাইয়ের এক হোটেলে কাজ করতেন। এর আগেও বহুবার এই একই রুটে বাড়ি ফিরেছেন। গতকাল সকালে কিছু আত্মীয় শিলচর বিমানবন্দর থেকে হুসেইনকে নিতে গেলেও সেখানে তাঁকে পাননি। পরে ভাইরাল ভিডিও দেখে তাঁরা তাঁকে চিনে ফেলেন এবং ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেন, কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি।
পরিবারের সদস্যরা আরও জানান, ইন্ডিগো বা বিমানবন্দরের কোনো কর্তৃপক্ষই হুসেইনের বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি। বিষয়টি তারা সিআইএসএফকেও জানিয়েছেন এবং কাছাড়ের উদারবন্দ থানায় তাঁর নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছেন।
ইন্ডিগো এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, উড়োজাহাজে ঝামেলা করায় ওই যাত্রীকে সিআইএসএফ ধরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তবে বিবৃতিতে চড় খাওয়া হুসেইনের বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি।