চাকরিতে টিকে থাকতে হলে কর্মীদের এআই শেখার নির্দেশ মাইক্রোসফটের
Published: 12th, July 2025 GMT
চলতি বছরে একাধিক ধাপে ১৫ হাজারের বেশি কর্মী ছাঁটাই করেছে প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট। শুধু তা–ই নয়, ছাঁটাইয়ের পর প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করা অন্য কর্মীদের বার্তা পাঠিয়ে জানিয়েছে, এআই শেখা এখন আর বিকল্প নয়, প্রতিটি কর্মীর জন্য তা আবশ্যিক। কর্মীদের দক্ষতা মূল্যায়নে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ সূচক হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
মাইক্রোসফটের বিক্রয় বিভাগের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট জাডসন অলথফ জানিয়েছেন, ‘আমরা মাইক্রোসফটকে পরবর্তী প্রজন্মের এআই প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আমাদের লক্ষ্য, প্রতিটি যন্ত্র ও প্রতিটি কাজে কো-পাইলট প্রযুক্তিকে স্থাপন করা।’
মাইক্রোসফটের ডেভেলপার ডিভিশনের প্রেসিডেন্ট জুলিয়া লিউসন জানিয়েছেন, এআই ব্যবহারে কর্মীরা কতটা পারদর্শী, তা ভবিষ্যতে কর্মমূল্যায়নের মূল উপাদান হয়ে উঠবে। এআই প্রযুক্তিতে দক্ষতা এখন আর বাড়তি সুবিধা নয়, এটি প্রতিটি দায়িত্ব ও পদের কেন্দ্রীয় অংশ।
মাইক্রোসফট এআই অবকাঠামো নির্মাণে চলতি অর্থবছরে প্রায় ৮ হাজার কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করার পর মাইক্রোসফট প্রাতিষ্ঠানিক খরচ কমানোর পাশাপাশি কর্মী কাঠামোয় পরিবর্তন আনছে। আর তাই জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত চারবার বড় ধরনের কর্মী ছাঁটাই করেছে মাইক্রোসফট। সর্বশেষ এ মাসের শুরুতে প্রায় ৯ হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছে প্রতিষ্ঠানটি। চাকরি যাওয়া কর্মীদের বড় অংশই এক্সবক্স গেমিং বিভাগ ও বিক্রয় দলের সদস্য।
বিজনেস ইনসাইডারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্মীদের বার্ষিক দক্ষতা পর্যালোচনায় এআই–নির্ভর কিছু সূচক (মেট্রিকস) যুক্ত করার পরিকল্পনা করেছে মাইক্রোসফট। পরবর্তী অর্থবছর থেকে এটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হতে পারে। শুধু তা–ই নয়, সংস্থাটির একাধিক বিভাগ এআই–নির্ভর কর্মী কাঠামো গঠনে কাজ শুরু করেছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর ম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
শিল্পের আয়নায় অতীতের ছবি
বিগত শতকের ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৫, এই দুই দশক ছিল দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক ইতিহাসের খুবই তাৎপর্যময় ঘটনাবহুল সময়। একই সঙ্গে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলেও এই কালপর্বে সমাজতন্ত্রের পতনসহ এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যা মানুষের বিশ্বাস, আদর্শ, চিন্তা, অভিব্যক্তি ও জীবনাচরণে নানাভাবে প্রভাব রেখেছে। শিল্পীদের ভাবনায় সমকাল কেমনভাবে তার সৃজনকলায় উদ্ভাসিত হয়েছিল, তার একঝলক দেখে নেওয়ার সুযোগ তৈরি হলো কলাকেন্দ্রে।
গতকাল শুক্রবার ছুটির দিন বিকেলে লালমাটিয়ার ডি ব্লকের ৯/৪ নম্বর বাড়ির কলাকেন্দ্রে শুরু হলো ‘ফিরে দেখা’ নামে ১৪ শিল্পীর যৌথ শিল্পকর্ম প্রদর্শনী।
এই প্রদর্শনীতে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৬ পর্বে যাঁরা চারুকলার শিক্ষার্থী ছিলেন, তাঁরা পরবর্তীকালে ‘ঢাকা পেইন্টার্স’, ‘সময় গ্রুপ’সহ বেশ কিছু গোষ্ঠী গড়ে তুলেছিলেন। তাঁদের মধ্য থেকেই কাজী রাকিব, দীপা হক, ঢালী আল মামুন, দিলারা বেগম জলি, নিসার হোসেন, শিশির ভট্টাচার্য, সাইদুল হক জুইস, ফারেহা জেবা, রতন মজুমদার, হাবিবুর রহমান, রুহুল আমিন কাজল, লালা রুখ সেলিম, তৌফিকুর রহমান ও ওয়াকিলুর রহমানের প্রায় ৬০টি শিল্পকর্ম নিয়ে এই ‘ফিরে দেখা’ প্রদর্শনী।
শিল্পীরা মূলত আশি ও নব্বই দশকে যেসব কাজ করেছিলেন, তার কিছু কিছু নমুনা রয়েছে এখানে। অধিকাংশ কাজই শিল্পীদের ব্যক্তিগত সংগ্রহের। ছাপচিত্র, জলরং, ড্রয়িং, মিশ্রমাধ্যম, অ্যাক্রিলিকসহ বিভিন্ন মাধ্যমের চিত্রকলা ও ভাস্কর্য রয়েছে প্রদর্শনীতে। প্রদর্শনী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল চারটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত সবার জন্য খোলা থাকবে।
কলাকেন্দ্রের প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রচলিত অর্থে কোনো প্রধান বা বিশেষ অতিথি থাকেন না। প্রদর্শনীর কাজ নিয়ে এক বা একাধিক আলোচক আলোচনা করেন। সূচনা বক্তব্যে কলাকেন্দ্রের পরিচালক শিল্পী ওয়াকিলুর রহমান বলেন, স্বাধীনতা–পরবর্তীকালে দুই দশকজুড়ে সমাজ ও সমকালীন ভাবনা ও মনোভাব শিল্পীদের কাজে যেভাবে প্রকাশ পেয়েছিল, তার একটি খণ্ডচিত্র এই প্রদর্শনীতে পাওয়া যাবে।
‘ফিরে দেখা’ প্রদর্শনীটির মূল আলোচক ছিলেন অধ্যাপক আবুল মনসুর। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে বিগত সময়ের শিল্পীদের কাজ দেখা ও পর্যালোচনার সুযোগ কম। সরকারিভাবেও তেমন উদ্যোগ নেই। ফলে নতুন প্রজন্ম বিগত শিল্পীদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পর্কে জানতেই পারে না। দেশের ইতিহাসে ১৯৭০ থেকে ১৯৯০ এক বিশেষ অধ্যায়। এ সময় রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে ঘটে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ রূপান্তরের প্রভাব শিল্পকলায় প্রতিফলিত হয়েছিল। সে সময়ের তরুণ শিল্পীরা বৈশ্বিক ও স্থানীয় পরিবর্তন, ইতিহাস ঐতিহ্য, আপন সংস্কৃতিকে তাঁদের নিজেদের মতো করে ধারণ করেছিলেন। তাঁরা যে শিল্পভাষা, ভাবনা, উপকরণ, উপস্থাপনা নিয়ে কাজ করেছিলেন, পরবর্তীকালে তা আমাদের চিত্রকলায় এক নতুন গতিমুখ তৈরি করেছে। সেই তরুণদের অনেকেই তাঁদের কাজের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছেন। নিজের কাজে অনেক পরিণত হয়েছেন। খ্যাতি অর্জন করে বর্তমানে দেশের অন্যতম শিল্পী হয়ে উঠেছেন। পরবর্তী প্রজন্মের শিল্পীদের নানাভাবে পথ দেখিয়েছেন।’
শিল্পের আয়নায় অতীতকে দেখার সুযোগ পাবেন দর্শকেরা এই প্রদর্শনীতে এলে।