বিতর্কে কাশীপুর ইউনিয়ন বিএনপি
Published: 12th, July 2025 GMT
ফতুল্লা থানাধীন কাশীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছেন। এতে করে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে কাশীপুর ইউনিয়ন যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
সর্বশেষ গত ৮ জুলাই কাশীপুর ইউনিয়ন বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে হাট-ঘাট টাকা আত্মসাৎ, বিএনপির সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচিতে আওয়ামিলীগ নেতাদের সদস্য নেয়া, টাকার বিনিময়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা, দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়নসহ নানা অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছিল কাশীপুরের যুবদল ও ছাত্রদের নেতৃবৃন্দরা।
এছাড়াও স্থানীয়রাও নানা অভিযোগ করেছেন কাশীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মঈনুল হোসেন রতন ও সাধারণ সম্পাদক আরিফ মন্ডলের বিরুদ্ধে।
অভিযোগে রয়েছে, কাশীপুরের আওয়ামীলীগের কতিপয় নেতাদের শেল্টার দেয়ার পাশাপাশি মামলা বাণিজ্য করেছে কাশীপুর ইউনিয়ন বিএনপি। গত কোরবানি ঈদের আগে ফতুল্লা দায়ের করা একটি মামলায় নিরীহ লোকদের আসামী করাসহ মামলা বাণিজ্যের অভিযোগ উঠছিল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতির বিরুদ্ধে।
যা প্রকাশ হওয়ার পর সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দরা। পরবর্তীতে কাশীপুরে অস্থায়ী পশুর হাটের টাকা আত্মসাধার অভিযোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা করেন কাশীপুর ইউনিয়ন বিএনপির একাংশ নেতাকর্মীরা।
সর্বশেষ গত ৭ জুলাই কাশীপুরের ৪নং ওয়ার্ডের হাটখোলা মাঠে বিএনপির সদস্য সংগ্রহ অনুষ্ঠান নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক এমপি মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। অনুষ্ঠানের পরের দিন সংবাদ সম্মেলন করেন কাশীপুরের যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দরা বলেন, কাশীপুর ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ব্যানারে নতুন সদস্য সংগ্রহ অনুষ্ঠানে আমাদের দাওয়াত দেয়া হয়নি। অথচ অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগের দোসরদের দাওয়াত দেয়া হয়েছে। এসময় প্রমান হিসেবে বেশ কয়েকটি ছবি দেখানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো অভিযোগ করা হয়, কাশীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা হয়েছে শামীম আহাম্মদকে। শামীম আহাম্মদ চিহ্নিত ভূমিদস্যু, হত্যা মামলার আসামী ও ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তাকে চেয়ারম্যান হওয়ার সুযোগ কয়ে দেয়া হয়েছে।
কাশীপুর হাট থেকে ৬৫ লাখ টাকা লাভ হয়েছে। অথচ শেয়ারহোল্ডারদের ১৪ লাখ টাকা দিয়ে বাকি টাকার কোন হিসেব দিচ্ছে না। সিটি করপোরেশনের ময়লা কাশীপুর খালে ফেলে পরিবেশ দূষণ করা হচ্ছে। এর এই ময়লার টাকার ভাগ নিচ্ছে ইউনিয়ন বিএনপির নেতারা।
স্থানীয়রা জানান, কাশীপুর ইউনিয়ন বিএনপির নামে কাশীপুরের বিভিন্ন সেক্টর দখল, জমি দখল, চাঁদাবাজী, মাদক ব্যবসা, হাট-ঘাট দখল, মামলা বাণিজ্য, ইট-বালু ব্যবসা দখন, নেট ব্যবসা দখল থেকে শুরু করে নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছেন কাশীপুর ইউনিয়ন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। এতেকরে বদনাম হচ্ছে বিএনপির।
তাই দ্রুত কাশিপুর ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি ভেঙ্গে নতুন কমিটির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীরা।
.
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ন ত কর ম র অন ষ ঠ ন সদস য আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।