Samakal:
2025-09-19@15:26:48 GMT

আকাশে মেঘ করলেই আতঙ্ক

Published: 3rd, May 2025 GMT

আকাশে মেঘ করলেই আতঙ্ক

নির্মাণের কয়েক বছর পরই বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ে দেবিদ্বার পৌর এলাকার বারেরারচরের গুচ্ছগ্রামটি। এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ ২৮ বছর, অথচ একবারের জন্যও হয়নি ঘরগুলোর সংস্কার। জরাজীর্ণ এসব ঘরে বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছে হতদরিদ্র ১০টি পরিবার। চলমান কালবৈশাখী মৌসুমে আকাশে মেঘ দেখলেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বাসিন্দাদের মাঝে। ঝোড়ো হাওয়ায় ঘর ভেঙে প্রাণহানির শঙ্কা তাড়া করে। শীত মৌসুমেও হিমেল হাওয়া আর শিশির ঝরে পড়ার কষ্ট তাদের ঘরে।
গুচ্ছগ্রামটিতে গিয়ে দেখা যায়, টিনের ছাউনিগুলো মরিচা পড়ে অনেক জায়গায় বড় বড় ছিদ্র হয়ে গেছে। কাঠের দরজা-জানালা ভেঙে পড়েছে, বেড়ার টিন খুলে গেছে। সিমেন্টের খুঁটিগুলো থেকে আস্তর খসে পড়েছে বহু আগেই। ১০ কামরার বিশাল একটি ঘর দাঁড়িয়ে রয়েছে নড়বড়ে খুঁটিতে ভঙ্গুর অবস্থায়, যা যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। বৃষ্টির পানি ঠেকাতে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে চাল ও বেড়া। বৃষ্টির পানি পড়ে মেঝে ও বারান্দা থেকে মাটি সরে গিয়ে অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বাসিন্দারা বলছেন, এসব ঘরে এখন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই থাকতে হয়। কারণ তাদের আর যাওয়ার কোনো জায়গা নেই।
গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা শিউলি আক্তার, গোলাম মোস্তফা, নূরজাহান বেগম ও মমতাজ বেগম জানান, প্রতি বছর ঝড়-বাদলের মৌসুমে আতঙ্কে দিন কাটে। ঘর ভেঙে কখন মাথায় পড়ে এই ভয়ে থাকেন তারা। ভাঙা চাল গড়িয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে ঘরের সব কিছু ভিজে যায়। শীত, বর্ষা সব মৌসুমই তাদের কষ্ট। তাদের ভাষ্য, পানি খাওয়ার নলকূপগুলো অকেজো হয়ে পড়েছিল। নিজেদের খরচে মেরামত করে ব্যবহার করছেন। 
গুচ্ছগ্রামের একমাত্র পুকুরটি ভরাট হয়ে নোংরা পানির আধারে পরিণত হয়েছে। ফলে মশা আর নানা রোগবালাই ছড়িয়ে পড়ছে। এখানে নেই পর্যাপ্ত টয়লেটের ব্যবস্থা।
বসবাসকারীরা সবাই প্রায় হতদরিদ্র। অনেকে ভিক্ষা করেন, অনেকে দিনমজুর বা রিকশা-ভ্যান চালক। নিজেদের অর্থে ঘর মেরামতের মতো সামর্থ্য নেই। কেউ কেউ এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে সামান্য মেরামত করলেও, তা টেকেনি বেশি দিন। সংস্কার না হওয়ায় ঘরগুলো এখন বসবাসের অযোগ্য।
দেবিদ্বারের ইউএনও আবুল হাসনাত খান বলেন, ‘বারেরারচর গুচ্ছগ্রামটি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। অতিদ্রুত পরিদর্শনে যাব। ঘরগুলো সংস্কারের পাশাপাশি নিরাপদ পানির জন্য নতুন নলকূপ 
স্থাপন এবং পুকুর খননের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঘর ত র

এছাড়াও পড়ুন:

‘৭০ ভাগ জনগণ পিআর পদ্ধতির পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে’

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ বলেছেন, ‘২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন। এরপর ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছে। সেই জনগণের ৭০ ভাগ পিআর পদ্ধতির পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে। ঐকমত্য কমিশনে ৩১টি দলের মধ্যে ২৫টি দল পিআরের পক্ষে রয়েছে।’

আজ শুক্রবার বিকেলে খুলনা নগরের ডাকবাংলা সোনালী ব্যাংক চত্বরে জুলাই সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘একটি দলের কেউ কেউ বলছেন, পিআর খায় না মাথায় দেয়। কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এটা বলতে পারেন না। তাই পিআর বাস্তবায়নের জন্য গণভোট দিন। রায় পিআরের পক্ষে নাকি বিপক্ষে যাচাই করুন। জনগণ যদি পিআর মানে আপনাদেরও মানতে হবে। আর জনগণের রায় যদি পিআরের বিপক্ষে যায়, তাহলে আমরা মেনে নেব। কিন্তু তারা তো গণভোটকে ভয় পাচ্ছে। পিআরের মধ্য দিয়ে সবার অংশীদারির ভিত্তিতে যদি পেশিশক্তি ও কালোটাকামুক্ত কোয়ালিটিপূর্ণ পার্লামেন্ট হয়, সরকার গঠন হয়, তাহলে কোনো দলের পক্ষে ফ্যাসিবাদী হয়ে ওঠার সম্ভাবনা নেই। তাই তারা পিআর ঠেকাতে চায়।’

জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও খুলনা মহানগরের আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ শাহ আলম ও শেখ জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক আবদুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের টিম সদস্য মাস্টার শফিকুল আলম এবং কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও খুলনা জেলার আমির মাওলানা এমরান হুসাইন প্রমুখ।

মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘আর্টিকেল ৭-এর ভিত্তিতেই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিয়ে তার আলোকে নির্বাচন দিতে হবে। এখন যদি দুই-তিন মাস আলোচনার পর একটি দল বলে যে এটা পরে হবে, তাহলে কেন এত পরিশ্রম করালেন? সে জন্যই বলছি আমাদের আন্দোলন রাজনীতির অংশ। আমাদের রাজনীতি জনগণের আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরার জন্য। আমরা আলোচনার টেবিলে নিষ্পত্তির জন্য আশাবাদী। আমরা নিরাশ নই।’

জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘আপনারা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড মেনটেইন করতে পারছেন না। তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কীভাবে? তাই আমাদের দাবি—আপনারা জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিন। সাংবিধানিক অর্ডার জারি করুন। গণভোট দিন। ফ্যাসিবাদের কার্যক্রম স্থগিত করুন। আপনারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নির্বাচনের আগে দৃশ্যমান বিচার করবেন। আমাদেরও দাবি নির্বাচনের আগেই তা দৃশ্যমান করতে হবে।’

মতিউর রহমান আকন্দ আরও বলেন, ‘এই সংস্কার যদি এখন না হয়, প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য যদি ঠিক করা না হয়, আর তা যদি নির্বাচনের আগে না হয়, বিদ্যমান রাষ্ট্রকাঠামোতে যদি আবার নির্বাচন হয়, তাহলে এই নির্বাচনের মাধ্যমে আরেকটি ফ্যাসিবাদের জন্ম হবে। বিদ্যমান কাঠামোতে নির্বাচন হলে আরেকটি হাসিনার জন্ম হবে। বাংলার মানুষ আর ফ্যাসিবাদের জন্ম হতে দেবে না।’

পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরের ডাকবাংলা সোনালী ব্যাংক চত্বর থেকে শুরু হয়ে ফেরিঘাট মোড়, পাওয়ার হাউস মোড় ও সংগীতার সামনে দিয়ে শিববাড়ী মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ