সহায়ক কমিটি বিলুপ্তের পর প্রশাসকের পদত্যাগ, কোন পথে যাচ্ছে বেসিস
Published: 5th, May 2025 GMT
গণ-অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অনেক খাতের মতো সফটওয়্যার খাতের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসেও (বেসিস) পরিবর্তন আসে। বেসিসে সরকার প্রশাসক নিযুক্ত করে। প্রশাসককে সহায়তা করতে ও বেসিসের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য রাফেল কবিরের নেতৃত্বে বেসিস সহায়ক কমিটি গঠন করা হয়। তবে গত বৃহস্পতিবার (১ মে) রাতে এই সহায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বেসিসের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এ–সংক্রান্ত একটি অফিস আদেশ প্রকাশ করা হয়। বাণিজ্য সংগঠন আইন ১৮ ধারার ২ (ছ) এবং (জ) উপধারা অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে ৩০ এপ্রিল সহায়ক কমিটির চেয়ারম্যান রাফেল কবির পদত্যাগ করেন।
সহায়ক কমিটি বিলুপ্তের পর এবার বেসিস প্রশাসক পদ থেকে পদত্যাগ করলেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক মুহম্মদ মেহেদী হাসান। তিনি গতকাল রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
আগামী ২০ জুলাই চাকরিজীবন থেকে অবসরে যাওয়ার কারণে যাবতীয় সংস্কার শেষ করে বেঁধে দেওয়া ১২০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার অক্ষমতা প্রকাশ করে পদত্যাগ করেছেন মুহম্মদ মেহেদী হাসান। গত বছরের ৪ ডিসেম্বর বেসিসের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় আইসিটি বিভাগের এই অতিরিক্ত সচিবকে।
পদত্যাগের ব্যাপারে রাফেল কবির প্রথম আলোকে বলেন, ‘বেসিসে সংস্কারবিরোধী একটা অংশের কারণে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা যাচ্ছিল না। যে উদ্দেশ্যে সহায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিল, সে উদ্দেশ্য সফল করা যাচ্ছিল না।’
বেসিসের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আজকালের মধ্যে নতুন প্রশাসক নিয়োগ হতে পারে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা: চেরনোবিলের মতো বিপর্যয় হবে না
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি লক্ষ্য করে বোমাবর্ষণ হলেও চেরনোবিল-ফুকুশিমার মতো বিপর্যয় ডেকে আনবে না বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলেছেন, এগুলো মূলত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনায় কেন্দ্রীভূত হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা বিবিসিকে জানিয়েছেন, এ ধরনের স্থাপনায় ক্ষয়ক্ষতি হলেও তা চেরনোবিল বা ফুকুশিমার মতো ভয়াবহ ‘পারমাণবিক দুর্ঘটনা’ ঘটানোর ঝুঁকি তৈরি করে না। এর কারণ হলো সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রে কোনো পারমাণবিক বিক্রিয়া (নিউক্লিয়ার রিঅ্যাকশন) ঘটে না। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের রিঅ্যাক্টরে ইউরেনিয়ামের পরমাণু বিভাজিত হয়ে ফিশন প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে তাপ উৎপন্ন করে এবং তাতে তৈরি হয় অতিরিক্ত তেজস্ক্রিয় বর্জ্য।
অন্যদিকে, সমৃদ্ধকরণ স্থাপনাগুলো শুধু ইউরেনিয়ামকে জ্বালানি হিসেবে প্রস্তুত করে, সেখানে শক্তি উৎপাদনের কোনো প্রক্রিয়া চলে না।
ব্যাঙ্গোর বিশ্ববিদ্যালয়ের পারমাণবিক উপাদান বিশেষজ্ঞ সায়মন মিডলবার্গ বলেন, যদি কোনো সমৃদ্ধকরণ স্থাপনায় বোমা মারা হয়, তাহলে ভেতরের ইউরেনিয়াম পরিবেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে এতে কোনো পারমাণবিক প্রতিক্রিয়া হওয়ার আশঙ্কা নেই। কাজেই এ ক্ষতি হবে স্থানীয় পর্যায়ে সীমাবদ্ধ এবং একমাত্র আশপাশের একটি ছোট এলাকা ছাড়া কোনো বিস্তৃত তেজস্ক্রিয় ঝুঁকি তৈরি হবে না।
রয়টার্স জানায়, ইরানের ভূগর্ভে নির্মিত পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর আঘাত হানতে সক্ষম একমাত্র প্রচলিত অস্ত্র হচ্ছে মার্কিন ‘বাঙ্কার-ব্লাস্টার’ বোমা। সাম্প্রতিক ইরান-ইসরায়লে সংঘাত পরিস্থিতিতে অনেকের মনেই প্রশ্ন, যুক্তরাষ্ট্র যদি আসলেই ইরানের সন্দেহভাজন পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনায় শক্তিশালী বাঙ্কার-ব্লাস্টার বোমা ফেলে, তাহলে এর পরিণতি কী হবে?
বিকিরণ ঝুঁকি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই বোমা মাটির নিচের বাঙ্কার ধ্বংস করে ফেললেও এর ব্যাপক বিকিরণ দূষণের আশঙ্কা কম।
ইরানের ‘ফোরডো ফুয়েল এনরিচমেন্ট প্লান্ট’ নামের এই রহস্যময় স্থাপনা পাহাড়ের গুহায় নির্মিত এবং এখানে ইউরেনিয়াম আইসোটোপ প্রক্রিয়াকরণ করা হয়। এতে এখানে ইউরেনিয়াম সাধারণত ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লুরাইড নামক গ্যাস আকারে থাকে।
এ গ্যাস অণু তুলনামূলক বড় ও ভারী হওয়ায় এটি অনেক দূরে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা কম বলে জানান আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য পদার্থবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ এমিলি ক্যাফ্রি। তিনি আরও বলেন, হামলার ফলে বিকিরণ বা দূষণ ওই স্থানেই সীমাবদ্ধ থাকবে।