Samakal:
2025-07-08@02:49:24 GMT

এসি বিকল, বন্ধ টুর্নামেন্ট

Published: 6th, May 2025 GMT

এসি বিকল, বন্ধ টুর্নামেন্ট

টুর্নামেন্টের এন্ট্রি ফি সংগ্রহ ও প্রাইজমানি নির্ধারণ হয়ে গেছে। দেশের বিভিন্ন ক্লাব এবং জেলাগুলো প্রস্তুতি নিয়েছে। এমনকি উন্মুক্ত প্রেসিডেন্ট কাপ র‍্যাংকিং এবং প্রাইজমানি টুর্নামেন্টের জন্য পৃষ্ঠপোষকও চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ টেবিল টেনিস (টিটি) ফেডারেশন। সব গুছিয়ে ১৫-১৯ মে প্রতিযোগিতার সূচি নির্ধারণ করে তারা। কিন্তু যে ভেন্যুতে খেলা হবে, সেই শহীদ তাজউদ্দিন উডেন ফ্লোর জিমনেশিয়ামের এয়ারকন্ডিশন্ড ব্যবস্থা (এসি) বিকল। এবং ভেন্যুতে নেই পর্যাপ্ত আলো। এ দুই কারণে টুর্নামেন্ট স্থগিত করার সিদ্ধান্তটি রোববার রাতে বিজ্ঞপ্তি আকারে পাঠায় টিটি ফেডারেশন। 

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট থাকা এসিগুলো আর সংস্কার করা সম্ভব নয়। তাই নতুন এসি লাগাতে ১২ থেকে ১৩ কোটি টাকা প্রয়োজন, যা এই মুহূর্তে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পক্ষে ব্যয় করা সম্ভব নয়। তবে টুর্নামেন্টটি যাতে বাতিল না হয়, সেই জন্য মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়াম অথবা ধানমন্ডি মহিলা ক্রীড়া সংস্থার ভেন্যু টিটি ফেডারেশনকে ব্যবহারের জন্য দিতে চায় এনএসসি। বিকল্প ভেন্যু পেতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে (এনএসসি) আবেদন করা হবে বলে গতকাল সমকালকে নিশ্চিত করেছেন ফেডারেশনের অ্যাডহক কমিটির সদস্য সুজন মাহমুদ।

দীর্ঘদিন ধরেই পল্টনের এই ইনডোর স্টেডিয়ামের এসি বিকল হয়ে আছে। টেবিল টেনিসের সঙ্গে এই জিমনেশিয়াম ব্যবহার করছে ব্যাডমিন্টনও। চারপাশে আবদ্ধ জিমনেশিয়ামে শীতের সময় খেলতে সমস্যা হয় না। ফেব্রুয়ারিতে টিটির একটি টুর্নামেন্ট হয়েছিল। সেই সময় গরম অনুভব হয়নি বলে সমস্যা দেখা যায়নি। 

ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়া অ্যাডহক কমিটির কর্তারা জিমনেশিয়ামের এসির সমস্যার কথা সেভাবে জানতেন না বলে জানান সুজন মাহমুদ, ‘সমস্যা ছিল জানতাম না। তার পরও আমাদের ধারণা ছিল সার্ভিসিং করে চালু করা সম্ভব। এখন জানা যাচ্ছে তা চালু করা সম্ভব না। আমরা তো বুঝিনি। না বুঝে টুর্নামেন্টের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ 

পল্টনের জিমনেশিয়ামের এসির সমস্যার বিষয়টি জানে এনএসসিও। ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে এই মুহূর্তে সংস্কার করা সম্ভব নয় বলে জানান জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মো.

আমিনুল ইসলাম, ‘দীর্ঘদিন ধরে এসিগুলো রিপ্লেস করা হয়নি। এগুলো আসলে মেয়াদোত্তীর্ণ। সার্বিকভাবে এসি লাগাতে প্রয়োজন ১২ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে আমাদের বরাদ্দ ৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে অনেক খরচপাতিও করেছি। আবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সীমাবদ্ধতাও আছে। আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রক্রিয়া শেষ। অনুমোদনটা আসবে জুন মাসে। আগামী অর্থবছরে আমরা পাচ্ছি ১২ কোটি টাকা। এই বিষয়টি আমাদের মাথায় আছে। দেখা যাক কতটুকু কী করা যায়।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ মন শ য় ম সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

লাভজনক গাজী ওয়্যারস এখন লোকসানে ধুঁকছে

দেশের একমাত্র তামার তার প্রস্তুতকারী রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠান গাজী ওয়্যারস। প্রতিষ্ঠানটির তৈরি পণ্যের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ছিল বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি)। প্রতিবছর গড়ে ৪০০ টন তার কিনত তারা। বছর চারেক ধরে আর তার নিচ্ছে না বিআরইবি। এতে লোকসান গুনতে হচ্ছে গাজী ওয়্যারসকে। গত বছর ৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। সদ্য সমাপ্ত ২০২৪–২৫ অর্থবছরেও লোকসানের পরিমাণ  ৫ কোটির বেশি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিআরইবি ছিল গাজী ওয়্যারসের সবচেয়ে বড় ক্রেতা। ২০২০-২১ অর্থবছরে সর্বশেষ তার কিনেছিল তারা। এখন বাড়তি দামের কথা বলে আর তার কিনছে না। এ কারণেই মূলত লোকসান গুনতে হচ্ছে গাজী ওয়্যারসকে। একটি মাত্র প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীলতাই লোকসানের অন্যতম কারণ। আবার বিকল্প ক্রেতা খোঁজার ক্ষেত্রেও গাজী ওয়্যারসের উদ্যোগের ঘাটতি রয়েছে।

গাজী ওয়্যারস হলো শিল্প মন্ত্রণালয়ভুক্ত বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) নিয়ন্ত্রণাধীন সরকারি মালিকানার একটি প্রতিষ্ঠান। ১৯৬৫ সালে ব্যক্তিমালিকানায় জাপানের ফুরুকাওয়া ইলেকট্রিক কোম্পানির সহযোগিতায় এটি চালু হয়। পরবর্তী সময়ে ১৯৭২ সালে জাতীয়করণ করে এটিকে বিএসইসির সঙ্গে একীভূত করা হয়। এরপর আবার এটিকে বিএসইসির অঙ্গপ্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়। বর্তমানে তিন ধরনের তার উৎপাদন করছে গাজী ওয়্যারস। এগুলো হচ্ছে সুপার এনামেল তামার তার (গেজ ১২ থেকে ৪৬), এনিল্ড তামার তার (গেজ ১০ থেকে ৪৬) ও হার্ডড্রন বেয়ার তামার তার (গেজ ১ থেকে ৪৬)। সবচেয়ে বেশি বিক্রি ও উৎপাদন হয় সুপার এনামেল তামার তার। প্রতিষ্ঠানটিতে ১২৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিক কর্মরত রয়েছেন।

সর্বশেষ ২০২০–২১ অর্থবছরে পৌনে ৫ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল। সেখানে গত অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি লোকসান করেছে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা। 

প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা বলছেন, গাজী ওয়্যারসের বার্ষিক উৎপাদনক্ষমতা দেড় হাজার টন। তবে চাহিদা না থাকায় ওই সক্ষমতা অনুযায়ী কখনো উৎপাদন হয়নি। মোটাদাগে ৮০০ টন তার উৎপাদন করলে প্রতিষ্ঠানটির লোকসান হয় না। কিন্তু গত বছর উৎপাদন হয়েছে ২৬৭ টন। আর চলতি অর্থবছরে উৎপাদন মাত্র ৮৭ টন। প্রতি কেজিতে উৎপাদন খরচ ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকার কাছাকাছি।

জানতে চাইলে গাজী ওয়্যারসের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল হালিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বেশি দামের কথা বলে বিআরইবি তার কেনা বন্ধ রেখেছে। অথচ আমরা ভালো মানের তার উৎপাদন করি। তাই লোকসান কমাতে এখন আমরা বিকল্প বাজার খোঁজার চেষ্টা করছি। সরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। এর মধ্যে রয়েছে বিপিসির বিভিন্ন অঙ্গপ্রতিষ্ঠান, পেট্রোবাংলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।’

আবদুল হালিম আরও বলেন, ‘বিআরইবি কর্তৃপক্ষ গত ২২ মে গাজী ওয়্যারস কারখানা পরিদর্শন করেছে। তারা দাম নিয়ে আবার আলোচনা করছে। এ প্রতিষ্ঠান আবার তার কেনা শুরু করলে লাভে ফিরতে পারব। অন্যদিকে গত মাসে জ্বালানি মন্ত্রণালয় সব সরকারি প্রতিষ্ঠানকে গাজী ওয়্যারস থেকে পণ্য কেনার বিষয়ে আদেশ দিয়েছে।’

লোকসান বেড়েছে ১১ গুণ

প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী, ২০১৪-২০১৫ থেকে ২০২০-২০২১ অর্থবছর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৭৩ কোটি টাকা লাভ করেছিল। ২০২০-২০২১ অর্থবছরেও ৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা লাভ হয়। এরপর ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে এসে প্রতিষ্ঠানটির লোকসান একলাফে বেড়ে দাঁড়ায় ৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। সদ্য সমাপ্ত ২০২৪–২৫  অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত এই লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা। সেই হিসাবে চার বছরের ব্যবধানে লোকসান বেড়েছে প্রায় ১১ গুণ।

অদক্ষতা, অব্যবস্থাপনা

ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের অদক্ষতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে যে প্রতিষ্ঠানটি দিন দিন বাজার হারাচ্ছে, তা–ও উঠে এসেছিল বিএসইসির এক তদন্ত প্রতিবেদনে। ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠানটি শক্তিশালী ও আধুনিকীকরণ প্রকল্পের দুর্নীতি ও অনিয়মসংক্রান্ত অভিযোগ পর্যালোচনায় কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটি পরে অনিয়মের সত্যতা খুঁজে পায়। মূলত ওই প্রকল্পে জাপান ও তাইওয়ানে উৎপাদিত ‘জাপানি মানের’ ৪৫ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কেনার কথা। কিন্তু কেনাকাটা শেষে যন্ত্রপাতি কারখানায় স্থাপন করা হয়ে গেলেও জানা যায়নি এগুলো আসলে কোন দেশে তৈরি। যন্ত্রপাতি কেনার আগে মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নেওয়ার বিধান থাকলেও তা মানা হয়নি।

পরিকল্পনার ঘাটতি, এক ক্রেতার ওপর নির্ভরশীলতা, বাজার সম্প্রসারণ না করা ও অদক্ষতার কারণে প্রতিষ্ঠানটি লোকসানে ধুঁকছে বলে মনে করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যুরো অব বিজনেস রিসার্চের পরিচালক অধ্যাপক মো. আলী আরশাদ চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বাজার সম্প্রসারণ বা ক্রেতা না বাড়ালে প্রতিষ্ঠানটি লাভে ফিরতে পারবে বলে মনে হয় না। এ অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটি বাঁচাতে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাইয়ের ৬ দিনে রেমিট্যান্স এল ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি
  • ৩ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায়
  • জানুয়ারি–মার্চ প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪.৮৬%
  • দুই অঙ্কের গড় মূল্যস্ফীতি
  • দুই অঙ্কে গড় মূল্যস্ফীতি
  • ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে এক বছরে রেকর্ড পরিমাণ হলুদ আমদানি
  • লাভজনক গাজী ওয়্যারস এখন লোকসানে ধুঁকছে
  • অনিশ্চয়তা কাটুক, গতি আসুক অর্থনীতিতে