মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া দেশটির সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৩৪ জন সদস্যকে আগামীকাল বুধবার ফেরত পাঠানো হবে। এর আগে তিন দফায় ৭৫২ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের সমুদ্রপথে জাহাজে করে ফেরত পাঠানো হলেও এবার ৩৪ জন বিজিপি ও সেনাসদস্যকে ফেরত পাঠানো হবে উড়োজাহাজে করে। বিজিবি, জেলা প্রশাসন ও কক্সবাজার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার মধ্যে পালিয়ে ওই ৩৪ সেনা ও বিজিপি সদস্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। বিজিবি কক্সবাজার অঞ্চলের অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম এম ইমরুল হাসান আজ মঙ্গলবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ওই ৩৪ বিজিপি ও সেনাসদস্য বর্তমানে বিজিবির হেফাজতে রয়েছেন। তাঁদের আগামীকাল একটি উড়োজাহাজে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে। হস্তান্তরপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে কক্সবাজার বিমানবন্দরে।

কক্সবাজার বিমানবন্দরের পরিচালক মো.

গোলাম মোর্তজা হোসেন বলেন, আগামীকাল বেলা দেড়টার দিকে মিয়ানমারের একটি উড়োজাহাজ কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে। আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে বেলা আড়াইটার দিকে সেনা ও বিজিপি সদস্যদের নিয়ে উড়োজাহাজটি মিয়ানমারে ফিরে যাবে। তিনি আরও বলেন, কক্সবাজার বিমানবন্দর দিয়ে যাত্রীদের বহির্বিশ্বে গমনাগমনের ব্যবস্থা এখনো চালু হয়নি। বিশেষ ব্যবস্থায় মিয়ানমারের ৩৪ নাগরিককে ফেরত পাঠানো হবে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহেদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে মিয়ানমারের ৩৪ জনকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পাওয়া গেছে। নির্দেশনা অনুযায়ী ৩৪ জনকে ফেরত পাঠানোর প্রশাসনিক কাজ সম্পাদন করা হচ্ছে।

এর আগে গত বছরের ৯ জুন কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর নুনিয়াছটা বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাট থেকে ১৩৪ বিজিপি ও সেনাসদস্যকে মিয়ানমারের নৌবাহিনীর একটি জাহাজে করে ফেরত পাঠানো হয়। গত বছরের ২৫ এপ্রিল সমুদ্রপথে ফেরত পাঠানো হয় ২৮৮ জনকে। ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম দফায় ফেরত পাঠানো হয় ৩৩০ জন বিজিপি ও সেনাসদস্যকে। তিন দফায় ফেরত পাঠানো ৭৫২ জনের সবাই রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপে নিয়োজিত ছিলেন। রাখাইন রাজ্যের প্রায় ৮০ শতাংশের নিয়ন্ত্রণ এখন সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) হাতে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র খ ইন র জ য ও স ন সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

গুলশানে ভাস্কর রাসাকে হেনস্তার অভিযোগ

রাজধানীর গুলশানে ভাস্কর রাসাকে রিকশা থেকে নামিয়ে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার সন্ধ্যায় এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

এতে দেখা যায়, এক যুবক রিকশা থামিয়ে ভাস্কর রাসাকে বলছেন, ‘আপনার নামে মামলা হয় নাই? আপনি কই যান? গুলশান থানায় চলেন। আপনি কী করেছেন, জানেন না? চলেন, থানায় চলেন।’ এ সময় ভাস্কর রাসাকে গালাগাল করেন ওই যুবক। এক পর্যায়ে পেছন থেকে লাঞ্ছিত করেন তিনি।

জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যায় ভাস্কর রাসা রিকশায় গুলশান সাজু আর্ট গ্যালারিতে যাচ্ছিলেন। গুলশান ১ ও ২-এর মাঝামাঝি স্থানে এক যুবক রিকশা থামিয়ে তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। দু-তিন সঙ্গী নিয়ে ওই যুবক লোকজন জড়ো করার চেষ্টা করলে ভাস্কর রাসা দৌড়ে রাস্তা পার হয়ে চলে যান। এ সময় পেছন থেকে তাঁকে আঘাত করা হয়।

তবে এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ভাস্কর রাসা। তিনি পুলিশেও কোনো অভিযোগ দেননি। ভাস্কর রাসার পারিবারিক সূত্র জানায়, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ১৪ ঘণ্টার বেশি নিখোঁজ ছিলেন। পরদিন ভোরে তাঁকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাওয়া যায়, পোশাক ছেঁড়া ছিল। নিখোঁজের কারণ আজও জানতে পারেননি পরিবারের সদস্যরা। নতুন করে এ ঘটনায় ভাস্কর রাসা মানসিকভাবে আঘাত পেয়েছেন।

প্রথিতযশা ভাস্কর রাসা দেশের গুরুত্বপর্ণ অনেক ব্যক্তির ভাস্কর্য তৈরি করেছেন। রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও গুলশানে দলটির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে তাঁর করা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাস্কর্য শোভা পাচ্ছে।

জানতে চাইলে ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপকমিশনার তারেক মাহমুদ সমকালকে জানান, এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও তারা দেখেছেন। ভাস্কর রাসাকে হেনস্তার ঘটনাস্থল চিহ্নিত ও জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছে পুলিশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ