বন্ধু মানসিক চাপে থাকলে যা করতে পারেন
Published: 7th, May 2025 GMT
বান্ধবীর বয়ফ্রেন্ডের ফ্রেন্ডের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন এই সময়ের জনপ্রিয় উপস্থাপিকা সমৃদ্ধি তাবাসসুম। দীর্ঘ সময় প্রেমের সম্পর্কে থাকার পর একটি পরিস্থিতে ওই সম্পর্ক থেকে বের হয়ে আসেন তিনি। সে সময় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। সমৃদ্ধি মনে করেন, ওই সময় তার কাছের ব্ন্ধুরা তাকে মানসিকভাবে খুব একটা সাপোর্ট করতে পারেনি। এই উপস্থাপিকা একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারে প্রেম পরবর্তী মানসিক অবস্থা এবং বন্ধুদের আচরণ কেমন হওয়া উচিত—এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন সমৃদ্ধি, বন্ধুদেরকে জানিয়ে যে প্রতিক্রিয়া পেয়েছিলেন তাতে আরও বেশি হতাশ হয়েছিলেন তিনি। এক সময় বন্ধুদেরকে জানানোও বন্ধ করে দেন। এবং নিজেই নিজের সঙ্গে লড়তে থাকেন। ফলে স্বাভাবিক হতে তার অনেকটা সময় লেগে গেছে।
সমৃদ্ধি মনে করেন, একজন মানুষ যখন ট্রমার ভেতর দিয়ে যায়, তখন বন্ধুদের উচিত ভুক্তভোগীকে তার মতো করে বোঝা, সময় দেওয়া, মানসিক সাপোর্ট দেওয়া।
সমৃদ্ধি তাবাসসুম
আরো পড়ুন:
এক কড়াইয়ে রুটি সেঁকা ও তরকারি রান্নার ভিডিও ভাইরাল
গরমে অন্তঃসত্ত্বা নারীর সুস্থ থাকার গাইডলাইন
সমৃদ্ধি তার অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, ‘‘রাতে কাঁদতে কাঁদতে বালিশ ভিজে যেত। আর সকালে উঠে দেখতাম চোখের নিচে ফুলে-ফুলে গেছে। ‘পাপড়ি আইস’ হয়ে যেত। যখন আমি আমাকে আয়নায় দেখতাম, তখন ভাবতাম আমি এভাবে একা কাঁদছি, আমার কষ্ট কেউ জানছে না। যেসব বন্ধুদের জানিয়েছিলাম তারা খুব বাজে ভূমিকা পালন করেছে। ভয়ে, আমি যখন ট্রমার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম তখন আমি আমার ফ্রেন্ডদের কাছে শেয়ার করা বন্ধ করে দিলাম।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘ফ্রেন্ডদেরকে ফোন দেবেন, বলবে ছাইড়া দে, যাইস না, তোর সমস্যা। তুই যাস ক্যা? তুই যাইস কেন?, কথা বলোস কেন? ফেন্ডদের আসলে এরকম হওয়া উচিত না। ধরেন, আপনি একটা ট্রমার মধ্যে আছেন, ট্রমা বন্ড থেকে বের হতে পারছেন না—ওই সময়টাতে আপনার বন্ধুর উচিত আপনাকে আপনার মতো করে বোঝার চেষ্টা করা। এই বলা যে, আচ্ছা ঠিক আছে, আরেকটু সময় নে।’’
স্বাভাবিকভাবেই একটা জায়গা থেকে বের হতে সময়তো লাগে। সমৃদ্ধি মনে করেন, সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার ফলে তৈরি হওয়া মানসিক চাপ কাটিয়ে উঠতে অনেকটা সময় লেগে যায়। বন্ধুরা যখন বলে, একটু সময় নে—তখন কিন্তু হতাশা মোকাবিলা সহজ হয়ে যায়। ওই পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠা সহজ হয়ে যায়।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তান পরিস্থিতি নিবিড় পর্যবেক্ষণে ঢাকা
পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও ভারতে গোলাবর্ষণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা। দুই দেশের উত্তেজনাকর অবস্থা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছে বাংলাদেশ। পরিস্থিতি যাতে খারাপের দিকে না যায়, সে জন্য দু’পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল বুধবার বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের এই অবস্থান জানায়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, আঞ্চলিক শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার চেতনায় কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমিত হওয়ার বিষয়ে আশাবাদী বাংলাদেশ। আর তা হবে এ অঞ্চলের জনগণের শান্তি ও কল্যাণের জন্য।
ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মধ্যে গতকাল বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি-সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান বৈঠকে বসেন। সে বৈঠক ভারত-পাকিস্তান প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা, জানতে পারেনি সমকাল। তবে সভা শেষে ড. খলিলুর রহমান ভারত-পাকিস্তান নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান পড়ে শোনান।
এদিকে, দুই দেশের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ নয়, শান্তিপূর্ণ সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গতকাল নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে সামরিক হামলার নিন্দা জানিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তারেক রহমান লেখেন, ‘প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা সামরিক হামলার নিন্দা এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। আমরা সংশ্লিষ্ট সবাইকে সংযম প্রদর্শন এবং সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাই। অভিন্ন স্বার্থ ও আকাঙ্ক্ষার ওপর নির্মিত একটি স্থিতিশীল এবং শান্তিপূর্ণ অঞ্চল সবার সর্বোত্তম স্বার্থে কাজ করে।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেছে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার মতো ঘটনা কারও জন্য মঙ্গলজনক হবে না। এ ঘটনার গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক তদন্ত হওয়া উচিত। উভয় পক্ষকেই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন। দিনশেষে যুদ্ধ কারও জন্যই কল্যাণকর নয়। বিবৃতিতে কাশ্মীরবাসীর সমস্যার স্থায়ী সমাধান আন্তরিকভাবে কামনা করেছে দলটি।
এদিকে, পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল এক বিবৃতিতে দলটি বলেছে, এ হামলা দুই দেশের মধ্যকার চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করে যুদ্ধাবস্থার সৃষ্টি করেছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতায় সরাসরি আঘাত। উভয় পক্ষকে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতির স্বার্থে ধৈর্য ও সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
দলটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতে অবস্থান করা পলাতক ফ্যাসিবাদী ও গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের হাজারো নেতাকর্মী বাংলাদেশের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি হিসেবে দেখা দিচ্ছে। এই দুর্বৃত্ত গোষ্ঠী বিদ্যমান উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে অস্থিরতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টিতে চক্রান্তে লিপ্ত। তারা সীমান্তে অনুপ্রবেশ ও নাশকতার মাধ্যমে বাংলাদেশের নাগরিকদের জানমালের ক্ষতিসাধনে সক্রিয় রয়েছে। সরকার ও সার্বভৌমত্ব রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি এনসিপি সীমান্তে নজরদারি ও সক্ষমতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক গতকাল রাতে ভারত থেকে পাকিস্তানের কয়েকটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ, বেসামরিক নাগরিকদের হতাহত করা এবং যুদ্ধ-উন্মাদনা পরিস্থিতিতে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই যুদ্ধ-উন্মাদনা দুই দেশের জনগণের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না। উল্টো এই যুদ্ধের বলি হবে উভয় দেশের সাধারণ মানুষ।
ভারত থেকে পুশইন করা ঠিক নয়
গতকাল বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠকের পর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান বলেন, ভারত সীমান্ত দিয়ে পুশইনের খবর আমরাও পাচ্ছি। প্রতিটি ঘটনা আলাদাভাবে নিরক্ষণ করছি। আমরা শুধু বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রমাণসাপেক্ষে গ্রহণ করব। আর এ প্রক্রিয়া হতে হবে আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে। এভাবে পুশইন করাটা ঠিক নয়।