থ্যালাসেমিয়া বংশগত রক্তস্বল্পতাজনিত রোগ। দেশের ১১.৪ শতাংশ মানুষ এ রোগের বাহক। তবে দেশের ৮১ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষের এই রোগ সম্পর্কে ধারণা নেই। এমনকি ৯৬ শতাংশ মানুষ জীবনে কখনও এই রোগ শনাক্তে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেনি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর জাতীয় থ্যালাসেমিয়া জরিপ ২০২৪-এ এমন তথ্য উঠে এসেছে। জরিপে সারাদেশের ৮ হাজার ৬৮০ মানুষের সাক্ষাৎকার ও রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে।

রক্ত রোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জিনগত ত্রুটির কারণে এই রোগে অস্বাভাবিক হিমোগ্লোবিন তৈরি হয় বলে লোহিত রক্তকণিকা সময়ের আগেই ভেঙে যায়। ফলে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। থ্যালাসেমিয়ার বাহক আর থ্যালাসেমিয়ার রোগী এক কথা নয়। মা-বাবা দু’জনই থ্যালাসেমিয়ার বাহক হলে সন্তান থ্যালাসেমিয়ার রোগী হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষার পরামর্শ তাদের। সচেতন হলে এই রোগ প্রতিরোধ সহজ। 

থ্যালাসেমিয়ার লক্ষণগুলো হলো– ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া, দুর্বলতা, ঘন ঘন রোগ সংক্রমণ, শিশুর ওজন না বাড়া, জন্ডিস, খিটখিটে মেজাজ ইত্যাদি। থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের তথ্য বলছে, বছরে এ রোগ নিয়ে সাত হাজার শিশুর জন্ম হয়। তবে জন্মের এক থেকে দুই বছরের মধ্যে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট (অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন) করে সম্পূর্ণ সুস্থ করা সম্ভব।

এ অবস্থায় আজ বৃহস্পতিবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য ‘থ্যালাসেমিয়ার জন্য সামাজিক ঐক্য গড়ি, রোগীদের অধিকার নিশ্চিত করি’। দিবসটি উপলক্ষে সরকারি-বেসকারিভাবে নানা কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

জাতীয় থ্যালাসেমিয়া জরিপ বলছে, থ্যালাসেমিয়া রোগের বিষয়ে শহরের তুলনায় গ্রামের মানুষের ধারণা কম। গ্রামের ৮৭ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ এই রোগের বিষয়ে জানে না এবং শহরে এ হার ৬৭ দশমিক ২ শতাংশ। বিভাগের দিক থেকে থ্যালাসেমিয়া রোগের বিষয়ে ধারণা কম ময়মনসিংহ বিভাগের মানুষের। এই বিভাগের ৯৩ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ এই রোগের বিষয়ে কিছুই জানে না।

জরিপে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এই রোগ শনাক্তে দেশের ৯৬ শতাংশ মানুষ জীবনে একবারও  পরীক্ষা করায়নি। ৪ শতাংশ মানুষ বিভিন্ন রোগের প্রয়োজনে এই পরীক্ষা করিয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার দিক দিয়ে পুরুষের তুলনায় নারীরা পিছিয়ে। ৯৫ দশমিক ১ শতাংশ পুরুষ কখনও একবারও পরীক্ষা করায়নি এবং নারীর এই হার ৯৭ দশমিক ৭ শতাংশ। বিভাগ অনুযায়ী খুলনা বিভাগের মানুষ সবচেয়ে কম থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা করিয়েছে। এই বিভাগে জরিপে অংশ নেওয়া ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ জীবনে কখনও থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা করায়নি। এই দিক থেকে রংপুরে অবস্থান কিছু ভালো। রংপুর বিভাগে ৯৩ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ কখনও পরীক্ষা করায়নি। 

জরিপে দেখা গেছে, এই বাহকদের মাঝে ১৪ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের ১১ দশমিক ৯ শতাংশ, ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মাঝে ১২ শতাংশ, ২৫ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের মাঝে ১০ দশমিক ৩ শতাংশ এবং ৩০ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের মাঝে ১১ দশমিক ৩ শতাংশ।

বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতির সভাপতি এম এ মতিন বলেন, থ্যালাসেমিয়া রোগী এ বাহক শনাক্তে শিশু জন্মের পর পরীক্ষা ও জাতীয় পরিচয়পত্রে এটি উল্লেখ করা। বিয়ের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে কাজী বিয়ে পড়াবেন। এই নীতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রয়েছে। তবে আমাদের দেশে এখনও এমন নীতি তৈরি করা সম্ভব হয়নি। এই রোগ প্রতিরোধে জাতীয় কর্মসূচি গ্রহণে অনেকবার তাগিদ দিলেও বাস্তবে এটি করা সম্ভব হয়নি।

রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ ও মুগদা মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা.

জান্নাতুল ফেরদৌস সমকালকে বলেন, দেশে ৬০ হাজারের বেশি থ্যালাসেমিয়া রোগী রয়েছেন। স্বামী-স্ত্রী দু’জনই থ্যালাসেমিয়ার বাহক হলে তখনই সন্তানের এ রোগ হতে পারে। কিন্তু স্বামী-স্ত্রী দু’জনের একজন যদি বাহক হন এবং অন্যজন সুস্থ হন, তাহলে কখনও এ রোগ হবে না। তাই বিয়ের আগে হবু স্বামী বা স্ত্রী থ্যালাসেমিয়ার বাহক কিনা, তা সবারই জেনে নেওয়া দরকার। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দ বস থ য ল স ম য় র ব হক বছর বয়স দ র এই র গ পর ক ষ দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

বুবলীর যত লুক

লুক নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে ভালোবাসেন চিত্রনায়িকা শবনম বুবলী। কখনও লেহেঙ্গায়, কখনও স্কার্টে আবার কখন শাড়িতে নিজেকে সাজিয়ে তোলেন বুবলী। চলুন বুবলীর কিছু সাম্প্রতিক লুক দেখে নেওয়া যাক।

কনের সাজে সাদা লেহেঙ্গায় চিত্রনায়িকা শবনম বুবলী। একটি ফটোশুটে এই লুকে ধরা দিয়েছেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবিটি শেয়ার করে বুবলী লেখেন, ‘‘হলো সবচেয়ে অসাধারণ রঙ কারণ এর ভেতরে আপনি রংধনুর সব রঙ দেখতে পাবেন।’’

হৃদয় ভর্তি ভালোবাসা আর ভালোবাসায় শুধু তুমি এই ক্যাপশনসহ নিচের ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন বুবলী। একেবারে সিন্ধ ও পরিপাটি রূপে ধরা দিয়েছেন নায়িকা। 

আরো পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে শাকিব-বুবলীর অবকাশ যাপন, মুখ খুললেন অপু বিশ্বাস

দুই স্ত্রীকে খুশি রাখা অসম্ভব, শাকিব প্রসঙ্গে জয়

প্রকৃতিকে ভালোবাসেন বুবলী। প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে চান। নিচের ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে নায়িকা লিখেছেন, ‘‘ভবিষ্যতে পুরো দমে কৃষি কাজ করবো, ফুল, ফল, শাক সবজি চাষ করবো, হাঁস মুরগি, গরু ছাগল পালবো..। কারণ প্রকৃতি একটু বেশীই সুন্দর, তাই প্রকৃতির খুব কাছে থাকতে চাই।’’

শাড়িতেও কম যান না বুবলী। নিজেকে শাড়িতে জড়িয়ে তৈরি করেছেন এলিগেন্ট লুক। খোঁপায় পরা বেলী ফুল তাকে আরও বেশি সিগ্ধ লুক এনে দিয়েছে। 

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বুবলীর যত লুক