ঢাকার সাভারে মেয়ের বিরুদ্ধে বাবাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে ছুরি মেরে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে ভাড়া বাসা থেকে ওই তরুণীকে (২৩) আটক করে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, মেয়েটি জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ ফোন করে বাবাকে হত্যার কথা জানান। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তরুণী বলেছেন, তিনি বাবার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছিলেন। সেই মামলা তুলে নিতে চাপ ও বাগ্‌বিতণ্ডায় ক্ষুব্ধ হয়ে বাবাকে হত্যা করেছেন।

এ সম্পর্কে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে নিহত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার ও তরুণীকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনগত বিষয় প্রক্রিয়াধীন।

আটক তরুণীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, নিহত ব্যক্তির বয়স ৫৭ বছর। তরুণীর মা তাঁর তৃতীয় স্ত্রী ছিলেন। পাঁচ বছর বয়সে তরুণীর মা মারা যান। ২০১৯ সাল থেকে বাবা তাঁকে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করেন। ২০২৩ সালে তরুণী বাবার বিরুদ্ধে নাটোরে আদালতে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে মেয়েকে মামলা তুলে নিতে চাপ দেন বাবা। একপর্যায়ে মেয়ের বিরুদ্ধে চুরির মামলাও করেন। পরে সাভারে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন ওই বাবা। চলতি বছরের শুরুর দিকে ওই বাসায় আসেন মেয়েটি। এর পর থেকে মেয়েকে মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন সময়ে চাপ দিতে থাকেন তিনি। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। গতকাল বুধবার রাতে মেয়েটি খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে বাবাকে খাওয়ান। ভোররাত চারটার দিকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরি মেরে বাবাকে হত্যা করেন তিনি।

পুলিশ জানায়, নিহত ব্যক্তির ফ্ল্যাটের তিনটি কক্ষের একটি সাবলেট দেওয়া। অন্য দুটি কক্ষে মেয়ে ও বাবা থাকেন। অনলাইনে কাপড় বিক্রি করতেন তিনি। হত্যার আগে সাবলেট দেওয়া কক্ষটির দরজার বাইরে থেকে তালা দিয়েছিলেন মেয়েটি।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পশ্চিমবঙ্গে বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ৬ ডিসেম্বর

অযোধ্যায় রাম মন্দির তৈরির প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গে বাবরি মসজিদ তৈরির ঘোষণা আগেই দিয়েছিলেন শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক হুমায়ুন কবির। এবার মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন ঘোষণা করেছেন ওই বিধায়ক।

বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ৩৩তম বর্ষপূর্তি, অর্থাৎ আগামী ৬ ডিসেম্বর মুসলিম অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙ্গায় বাবরি মসজিদের অনুকরণে একটি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কথা জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের ওই বিধায়ক। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে কয়েক লাখ মানুষ উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছে  হুমায়ুন।

আরো পড়ুন:

কুষ্টিয়া সীমান্তে ভারতীয় নাগরিক আটক

অভিনয় ছেড়ে ধর্মে মনোযোগী অভিনেত্রী

শনিবার গণমাধ্যমের সামনে হুমায়ুন কবীর বলেন, “চলতি বছরের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হবে। মসজিদটি সম্পূর্ণ হতে তিন বছর সময় লাগবে। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রায় দুই লাখ মানুষ উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে। মঞ্চে ৪০০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি উপস্থিত থাকবেন। আমি সবাইকে আমন্ত্রণ জানাবো। কেউ যদি আসতে চান সেটা তার ইচ্ছা, না আসতে চাইলেও কোনো অসুবিধা নেই।” 

গতবছর, ২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বর রাজ্য বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়েই বাবরি মসজিদ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন হুমায়ূন। 

বছর ঘুরলেই আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিল (সম্ভাব্য) মাসে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে তৃণমূলের মুসলিম বিধায়কের এই ঘোষণা নতুন করে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। এমনকি তার বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগও তুলেছে বিজেপি।

তবে পাল্টা প্রশ্ন তুলে তৃণমূল কংগ্রেস বলেছে, মসজিদ বানানোতে দোষের কী আছে?

বিজেপি নেতার রাহুল সিনহার অভিযোগ, হুমায়ুন কবীর এই ইস্যুকে খামোকাই রাজনৈতিক করে তুলছেন। 

পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হিন্দু ভোট ম্যানেজ করার জন্য দীঘায় পুরী মন্দির বানিয়েছেন, দার্জিলিংয়ে মহাকালের মন্দির বানাচ্ছেন এবার মুর্শিদাবাদে মুসলিম ভোট ম্যানেজ করার জন্য বাবরি মসজিদ বানাচ্ছেন। আমরা চাইনা মন্দির মসজিদ নিয়ে এই বাংলায় মানুষের মধ্যে বিভাজন হোক। আমাদের একটাই দাবি, যাই করুন বিভাজন করবেন না। আমরা হিন্দু মুসলমান মিলেমিশে থাকতে চাই।”

ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ