যুদ্ধ বেধে গেলে ভারত–পাকিস্তান কি পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে, তাদের নীতিমালা কী বলছে
Published: 10th, May 2025 GMT
পাকিস্তান আজ শনিবার ভোরে একাধিক ভারতীয় সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালানোর দাবি করেছে। ইসলামাবাদ অভিযোগ করেছে, তারা এ হামলা চালানোর আগে ভারত তিনটি পাকিস্তানি ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল। পাল্টাপাল্টি এ হামলার ঘটনাকে দুই দেশের মধ্যকার চলমান উত্তেজনা আরও বৃদ্ধির ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে। দুই প্রতিবেশী দেশ যেন এক সর্বাত্মক যুদ্ধের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধটা মূলত কাশ্মীর অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে। তবে গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার পর সে বিরোধ নতুন করে সংঘাতে রূপ নিয়েছে। পেহেলগামে ওই হামলার ঘটনায় ২৬ জন নিহত হন। ওই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। তবে ইসলামাবাদ সে অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
তখন থেকে দুই দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ নিতে শুরু করে। কূটনৈতিক পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে এর সূচনা হলেও খুব দ্রুত তা আকাশপথে সামরিক সংঘাতে রূপ নেয়। বর্তমানে দুই পক্ষই গোলাবর্ষণ ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাত্রা বাড়িয়ে চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ বেধে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ক্রমবর্ধমান এ উত্তেজনা যদি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে রূপ নেয়, তবে তা এক নজিরবিহীন বাস্তবতা তৈরি করবে। কারণ, পারমাণবিক শক্তিধর দুটি দেশের পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে জড়ানোর প্রথম ঘটনা হবে এটি।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড্যান স্মিথ আল–জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘দুই পক্ষের জন্যই পারমাণবিক হামলা চালানোটা একেবারে নির্বুদ্ধিতা হবে। পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কা খুবই কম, তবে একেবারে অসম্ভব নয়।’
এখন প্রশ্ন হলো—ভারতের ও পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডার ঠিক কেমন? নিজস্ব নীতি অনুসারে কখন তারা পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিতে পারে?
২২ এপ্রিল থেকে উত্তেজনা বেড়েছে
গত ২২ এপ্রিল ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর শুরুতে সশস্ত্র গোষ্ঠী দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) এ হামলার দায় স্বীকার করেছিল, তবে পরে তারা আবার অস্বীকার করে। ভারত দীর্ঘদিন ধরেই টিআরএফকে পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী লস্কর-ই-তাইয়েবার ছায়া সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে আসছে। লস্কর-ই-তাইয়েবা অতীতে একাধিকবার ভারতে হামলা চালিয়েছে—এর মধ্যে অন্যতম ছিল ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলা। ওই হামলায় ১৬০ জনের বেশি মানুষ নিহত হন।
সম্প্রতি পেহেলগামে হামলার জন্য নয়াদিল্লি সরাসরি ইসলামাবাদকে দায়ী করলেও পাকিস্তান এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
পেহেলগামে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের সঙ্গে একটি দ্বিপক্ষীয় পানিবণ্টন চুক্তি থেকে সরে আসে ভারত। দুই দেশই কূটনৈতিক সম্পর্ক কমিয়ে আনে এবং একে অপরের নাগরিকদের বহিষ্কার করে। পাকিস্তান পাল্টা ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তিসহ অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় চুক্তি থেকে সরে আসার হুমকি দিয়েছে। সিমলা চুক্তির আওতায় দুই প্রতিবেশী দেশ নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) নামে পরিচিত কাশ্মীরের বিরোধপূর্ণ সীমান্তে অস্ত্রবিরতি মেনে চলতে বাধ্য।
তবে পরিস্থিতি ভয়াবহ মোড় নেয় ৭ মে। ওই দিন পাকিস্তান ও পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। নয়াদিল্লির দাবি, তারা ‘সন্ত্রাসবাদী অবকাঠামো’ লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। তবে ইসলামাবাদ বলেছে, হামলায় দুই শিশুসহ অন্তত ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
পরদিন ৮ মে পাকিস্তানের আকাশসীমায় ড্রোন পাঠায় ভারত। ড্রোনগুলো পাকিস্তানের বড় বড় শহরগুলোয় পৌঁছে যায়। ভারতের দাবি, তারা প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে। তারা এ–ও অভিযোগ করেছে, ভারতকে লক্ষ্য করে পাকিস্তান ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালাচ্ছে।
ভারতের একমাত্র ও আনুষ্ঠানিক পারমাণবিক নীতিমালা প্রকাশিত হয় ২০০৩ সালে। সে নীতিমালা আজও অপরিবর্তিত। ভারতের প্রয়াত কৌশল বিশ্লেষক কে সুব্রহ্মণ্যম হলেন এ নীতির রূপকার। তিনি ভারতের বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বাবা।এরপর টানা দুই রাত ধরে ভারতের বিভিন্ন শহর ও ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায়। নয়াদিল্লির দাবি, এগুলো পাকিস্তানের ব্যর্থ হামলাচেষ্টা, যেগুলো প্রতিহত করা হয়েছে। ইসলামাবাদ ৮ ও ৯ মে ভারতকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন পাঠানোর অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করে। তবে আজ ১০ মে ভোরে পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। পাকিস্তান প্রথমবারের মতো দাবি করেছে, ভারত তাদের তিনটি সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই পাকিস্তান জানায়, তারা ভারতের কমপক্ষে সাতটি ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা চালিয়েছে।
ভারত হামলার কথা জানালেও এসব হামলা প্রতিহত করা হয়েছে বলে দাবি করেছে।
ভারত ও পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডার কেমন
১৯৭৪ সালের মে মাসে ভারত সর্বপ্রথম পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়। এরপর ১৯৯৮ সালের মে মাসে একাধিক পরীক্ষা চালিয়ে ভারত নিজেকে একটি পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করে। এর কিছুদিনের মধ্যেই পাকিস্তানও ধারাবাহিকভাবে ছয়টি পারমাণবিক পরীক্ষা চালায় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
এর পর থেকে দুই দেশই পাল্লা দিয়ে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি ও মজুত করে যাচ্ছে। এ প্রকল্পে দুই দেশই কোটি কোটি ডলার অর্থ খরচ করছে।
বর্তমানে ভারতের হাতে ১৮০টির বেশি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে। সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) তথ্য অনুযায়ী, ভারত ইতিমধ্যে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও ভূমিভিত্তিক মোবাইল লঞ্চার থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য পারমাণিক অস্ত্র বহনকারী ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে। পাশাপাশি জাহাজ ও সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির জন্য রাশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে।
পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডারে রয়েছে ১৭০টির বেশি ওয়ারহেড। পাকিস্তান এ ক্ষেত্রে তাদের আঞ্চলিক মিত্র চীন থেকে প্রযুক্তিগত সহায়তা পেয়ে থাকে। পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডারে মূলত রয়েছে স্বল্প ও মাঝারিপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এগুলো ভারতের ভেতরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার মতো দূরত্ব অতিক্রম করতে সক্ষম।
ভারতের পারমাণবিক নীতি কী
ভারতের পারমাণবিক শক্তির প্রতি আগ্রহের শুরুটা হয় দেশটির প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর আমলে। সে সময় মূলত বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারে আগ্রহী ছিল তারা। তবে গত কয়েক দশকে প্রতিবেশী দেশ চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে ভূখণ্ডগত বিরোধ বৃদ্ধির পর ভারত পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ওঠে।
ভারতের একমাত্র ও আনুষ্ঠানিক পারমাণবিক নীতিমালা প্রকাশিত হয় ২০০৩ সালে। সে নীতিমালা আজও অপরিবর্তিত। ভারতের প্রয়াত কৌশল বিশ্লেষক কে সুব্রহ্মণ্যম হলেন এ নীতির রূপকার। তিনি ভারতের বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বাবা।
নীতি অনুযায়ী, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের রাজনৈতিক পরিষদের প্রধান হিসেবে একমাত্র প্রধানমন্ত্রীই পারমাণবিক হামলার অনুমোদন দিতে পারেন। ভারতের পারমাণবিক নীতির চারটি মূল স্তম্ভ আছে—
১.
ভারতের অন্যতম প্রধান নীতিগত অবস্থান হলো, দেশটি কখনোই প্রথমে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে না। শত্রুপক্ষ যদি পারমাণবিক হামলা চালায়, সে ক্ষেত্রেই কেবল ভারত পাল্টা হামলা চালাবে। নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, যদি ভারতের ভূখণ্ডে পারমাণবিক হামলা চালানো হয় অথবা বিদেশে মোতায়েন ভারতীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা হয়, তবেই কেবল পাল্টা পারমাণবিক প্রতিশোধ নিতে পারবে তারা। এ ছাড়া পারমাণবিক শক্তিধর নয়—এমন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ভারত কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে না।
২️. নির্ভরযোগ্য ন্যূনতম প্রতিরোধক্ষমতা
ভারতের পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডার বড় নয়, তবে যথেষ্ট ভয়ংকর এবং শত্রুকে নিরুৎসাহিত করার জন্য যথেষ্ট। এই প্রতিরোধক্ষমতা মূলত বিমার মতো কাজ করে—যদি কেউ আক্রমণ করে, ভারত তার যোগ্য জবাব দিতে প্রস্তুত। ভারতের পারমাণবিক কৌশলের মূল ভিত্তি হলো ‘প্রতিরোধ’। অর্থাৎ ভারতে পারমাণবিক হামলা চালানোর বিষয়ে শত্রুরাষ্ট্রগুলোকে নিরুৎসাহিত করতে তারা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করে।
নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডারকে নিরাপত্তাবিমা মনে করে ভারত। তারা মনে করে, এর মাধ্যমে যেকোনো সম্ভাব্য পারমাণবিক হামলার হুমকি থেকে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব। এখন পর্যন্ত পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিতে ভারতের স্বাক্ষর না করার ক্ষেত্রে এটাই অন্যতম প্রধান কারণ। কারণ, নয়াদিল্লি মনে করে, সব দেশ একযোগে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে রাজি না হলে তারা একতরফাভাবে পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করবে না।
১৯৭৪ সালের মে মাসে ভারত সর্বপ্রথম পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়। এরপর ১৯৯৮ সালের মে মাসে একাধিক পরীক্ষা চালিয়ে ভারত নিজেকে একটি পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করে। এর কিছুদিনের মধ্যেই পাকিস্তানও ধারাবাহিকভাবে ছয়টি পারমাণবিক পরীক্ষা চালায় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।৩. ভয়াবহ প্রতিশোধ
যদি কেউ ভারতের ওপর পারমাণবিক হামলা চালায়, তবে ভারতের পাল্টা আঘাত এতটাই বিধ্বংসী হবে যে শত্রুর সামরিক শক্তি পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
৪. জীবাণু অস্ত্র বা রাসায়নিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে ব্যতিক্রম
আগে পারমাণবিক হামলা না চালানোর বিষয়ে ভারতের অবস্থান অটল হলেও দুটি ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হতে পারে। তা হলো কোনো রাষ্ট্র জীবাণু বা রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালালে ভারত তখন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে পাল্টা প্রতিশোধ নিতে পারবে।
পাকিস্তানের পারমাণবিক নীতি কী
পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে পাকিস্তান কখনোই আনুষ্ঠানিকভাবে পূর্ণাঙ্গ ও লিখিত নীতিমালা প্রকাশ করেনি। আর এই নীতিগত অবস্থান অনির্দিষ্ট হওয়ায় সংঘাতের যেকোনো পর্যায়ে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের স্বেচ্ছাচারিতা পায় পাকিস্তান। অতীতে তারা এমনটা করার হুমকিও দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নীতিমালার ক্ষেত্রে পাকিস্তানের এই অস্বচ্ছতার বিষয়টি দেশটির একটি কৌশল। ভারতের সামরিক শক্তির বিপরীতে একটি প্রতিরোধমূলক চাপ তৈরি করাটাই তাদের প্রধান লক্ষ্য।
অবশ্য ২০০১ সালে লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) খালিদ আহমেদ কিদওয়াই পাকিস্তানের পারমাণবিক নীতির কৌশলগত দিকগুলো বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করেছেন। সেখানে তিনি পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের জন্য চারটি মূল ‘রেড লাইন’ বা ট্রিগার নির্ধারণ করেন। এই চার ট্রিগার হলো—
১. স্থানগত সীমা
পাকিস্তানের বড় অংশের বা গুরুত্বপূর্ণ ভূখণ্ডের ক্ষতি হলে দেশটি পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে জবাব দিতে পারবে।
২. সামরিক সীমা
পাকিস্তানের বিমানবাহিনী বা স্থলবাহিনীর বড় অংশকে লক্ষ্যবস্তু করা হলে বা ধ্বংস করা হলে এর বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে জবাব দেওয়া যাবে।
৩. অর্থনৈতিক সীমা
কোনো শত্রুরাষ্ট্রের কর্মকাণ্ডের কারণে পাকিস্তানের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হলে পারমাণবিক প্রতিক্রিয়া দেখানো যাবে।
৪. রাজনৈতিক সীমা
যেসব কর্মকাণ্ডের কারণে পাকিস্তানে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরি হয় বা অভ্যন্তরীণভাবে বড় আকারে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়, তখন পারমাণবিক প্রতিক্রিয়া দেখানো যেতে পারে।
তবে ভূখণ্ডের কতটুকু অংশ হারালে কিংবা সশস্ত্র বাহিনীর কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হলে এই পারমাণবিক ট্রিগারগুলো সক্রিয় হবে, তা পাকিস্তান কখনোই স্পষ্ট করেনি।
ভারতের রিপাবলিক ডের কুচকাওয়াজে অগ্নি–৪ ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করা হয়উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ব ক র কর ইসল ম ব দ নয় দ ল ল লক ষ য র জন য র র জন এক ধ ক কখন ই প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
পাকিস্তানের জন্য আইএমএফের ঋণ সহায়তা আটকাতে ব্যর্থ হলো ভারত
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে (আইএমএফ) বাধা দেওয়া সত্ত্বেও পাকিস্তানের জন্য ঋণ অনুমোদন ঠেকাতে পারেনি ভারত। শুক্রবার আইএমএফ পাকিস্তানের জন্য দুটি প্রধান অর্থায়ন ব্যবস্থা অনুমোদন করেছে বলে জানিয়েছে ডন অনলাইন।
পাকিস্তানের জন্য আইএমএফের এই দুটি অর্থায়ন ব্যবস্থা হচ্ছে-চলমান বর্ধিত তহবিল সুবিধার অধীনে এক বিলিয়ন ডলার ঋণ প্রদান এবং জলবায়ু সম্পর্কিত উদ্যোগগুলোকে সমর্থন করার লক্ষ্যে একটি নতুন স্থিতিস্থাপকতা ও স্থায়িত্ব সুবিধা (আরএসএফ)।
এই অনুমোদনের ফলে পাকিস্তানের জন্য মোট ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের তহবিল উন্মুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে আরএসএফ প্রোগ্রামের অধীনে ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মার্চ মাসে আইএমএফ এই নতুন জলবায়ু অর্থায়ন ব্যবস্থার বিষয়ে পাকিস্তানের সাথে একটি কর্মী-স্তরের চুক্তিতে পৌঁছায়। পাশাপাশি ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে অনুমোদিত ৩৭ মাসের ৭ বিলিয়ন ডলারের ইএফএফ প্রোগ্রামের প্রথম পর্যালোচনাও করা হয়েছিল।
শুক্রবারের আইএমএফের নির্বাহী বোর্ডের সভায় ভারত ভোটদানে বিরত ছিল। সিদ্ধান্তের আগে, ভারতীয় কর্মকর্তারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আপত্তি তুলেছিলেন। তারা অভিযোগ করেছিলেন যে, বৈশ্বিক তহবিলের অপব্যবহার করা হচ্ছে।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বৃহস্পতিবার জানিয়েছিলেন, নয়াদিল্লি আন্তর্জাতিক অর্থায়নের জন্য পাকিস্তানের যোগ্যতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করার জন্য আইএমএফ-এ তার প্রতিনিধিকে নির্দেশ দিয়েছে। তিনি বিশ্বব্যাংক এবং ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সসহ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পাকিস্তানের অবস্থান পুনর্মূল্যায়ন করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে শেষ পর্যন্ত ভারতের এই প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে।
বোর্ড আলোচনার পরে ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর নাইজেল ক্লার্ক এক বিবৃতিতে বলেছেন, চ্যালেঞ্জিং পরিবেশ সত্ত্বেও পাকিস্তান সমষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করেছে।
ঢাকা/শাহেদ