‘ম’ আর ‘আ’ দুইটি বর্ণ। এই দুইটি বর্ণের সমন্বয়ে তৈরি একটি শব্দ মা। মা শব্দটি উচ্চারণেই এক ধরনের প্রশান্তি মিলে। আর এই শব্দটির মধ্যে লুকিয়ে আছে পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্রতা, মমতা এবং নিঃস্বার্থ এক অনুভূতি।

নিঃস্বার্থভাবে যিনি পরম মমতা দিয়ে আকাশ সমান ভালোবাসা ঢেলে দেন, তিনি আমার মা। আমার জন্মের পর থেকে শুরু করে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে আমার সবচেয়ে নিরাপদ নির্ভরযোগ্য আশ্রয়স্থল হচ্ছে মা। তিনিই আমার জীবনের প্রেরণা।

আমার মা সেই ছোটবেলা থেকে যেভাবে লালন-পালন করেছেন, তা কী ভোলা যায়! কতবার যে তার কোল নোংরা করেছি। মা বিরক্ত না হয়ে ততবারই আমাকে পরিষ্কার করে দিয়েছেন। শুধু কি মায়ের কোল! রাতে ঘুমাতে গিয়ে সারারাত বিছানাও নোংরা করে দিয়েছি। সেসব পরিষ্কারের জন্য মা খুব ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে নিয়ে যেতেন ওয়াশ রুমে। সেখানে সেসব ওয়াশ করে শুকাতে দিতেন রৌদ্দুরে।

আরো পড়ুন:

অন্যের বাড়িতে কাজ করে মা খাবার নিয়ে আসতেন

আমার একজন সংগ্রামী মা

সেই সকালেই মা পুরো পরিবারের জন্য রান্না-বান্না শুরু করে দিতেন। দিনভর কাজের মাঝেও আমার খোঁজ রাখতেন অনবরত। কাজের চাপে থেকেও কখনো ক্লান্তি প্রকাশ করতেন না। আমার মা কখনোই নিজের প্রয়োজনকে গুরত্ব দেননি। তিনি পরিবারকে আগলে রেখেছেন সবসময়। আমাকেও আগলে রেখেছেন আকাশ সমান ভালোবাসা দিয়ে।

আমার মা আমার জীবনের প্রথম শিক্ষক। তিনিই আমাকে প্রথম বইয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। বইয়ের বর্ণমালার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। বাসায় বসিয়ে আদরের সঙ্গে পড়িয়েছেন। এরপর স্কুলে নিয়ে যাওয়া-আসা করেছেন। স্কুলে পরীক্ষা শুরু হলে তারই টেনশন বেড়ে যেত অনেকগুণ। যে কারণে পরীক্ষার আগের রাতগুলোতে নির্ঘুম থেকে আমার পাশে বসে থেকেছেন, যাতে আমি মনোযোগ দিয়ে পড়তে পারি। আবার সকাল হতেই পরীক্ষার হলের বসিয়ে দিয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতেন। বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষার খবর নিয়ে ফেলতেন স্বস্তির নিশ্বাস।

আমার মা আমাকে পড়াশুনার পাশাপাশি নৈতিকতা, মূল্যবোধ, আদর্শ এবং সহানুভূতির বিষয়গুলোও শিখিয়েছেন। আমার মা আমাকে শুধু জীবন দেননি, জীবনের মানেও বুঝিয়েছেন। তিনিই আমাকে শিখিয়েছেন কিভাবে মানুষ হতে হয়। তিনি শুধু আমার মা নন, তিনি আমার জীবনের অনুপ্রেরণা আর সবচেয়ে বড় আশীর্বাদও।

তিনি সারাজীবন আমাকে ভালোবেসে গেছেন। তার ভালবাসা কখনো আদরে, কখনো বকুনিতে। তিনি কখনো ভালোবেসেছেন প্রকাশ্যে, কখনো গোপনে। নিঃস্বার্থভাবে ভালোবেসে আমার জীবনে আলো হয়ে জ্বলেছেন সবসময়। জীবনকে আলোকিত করে তুলেছেন আমার মা। আমি মনে করি নিঃস্বার্থ ভালোবাসার আর এক নাম মা।

নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসা এবং আমার জীবনে সেই আলো ছড়িয়ে দেওয়া ব্যক্তিটিকে আমি আমার জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসি। প্রিয় মা, আমার মা।

(লেখক: চাকরিজীবী, হারাগাছ, রংপুর)

ঢাকা/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম দ বস আম র ম পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধ না থামালে ‘কঠোর পরিণতির’ হুমকি ট্রাম্পের

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে আলোচনার জন্য আগামীকাল শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় বৈঠকে বসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ওই বৈঠকের পর পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাজি না হলে রাশিয়াকে ‘খুব কঠোর পরিণতি’ ভোগ করতে হবে বলে সতর্ক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। খবর সিএনএনের।

বুধবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিসহ ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল বৈঠকের পর ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আসন্ন যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া শীর্ষ বৈঠকে তিনি যুদ্ধবিরতি চাইছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, পুতিনের সঙ্গে এর আগে তার ‘ভালো আলোচনা’ হয়েছিল। তবে বাড়ি ফেরার পর খবর পান- ‘একটি রকেট কোনো নার্সিং হোমে গিয়ে পড়েছে বা কোনো অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে আঘাত করেছে, আর রাস্তায় পড়ে আছে মৃত মানুষ।’ এই বাস্তবতা তার অবস্থানকে আরও কঠোর করেছে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি।

আরো পড়ুন:

শান্তি আলোচনায় ইউক্রেনকে রাখতে হবে: ইউরোপ

ইউক্রেনের সু-২৭ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত

এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কোর্টের নথি ব্যবস্থাপনা করা কম্পিউটার সিস্টেম রাশিয়া হ্যাক করেছে বলে যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, তা নিয়েও শুক্রবারের বৈঠকে পুতিনকে প্রশ্ন করার ইঙ্গিত দেন ট্রাম্প। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তাদের হ্যাক করা নিয়ে আপনি কি অবাক হচ্ছেন?”

পুতিনের সঙ্গে ভবিষ্যতে আরেক দফা বৈঠকের সম্ভাবনাও উত্থাপন করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, যদি প্রথম বৈঠকটি ইতিবাচক হয়, তবে দ্রুতই দ্বিতীয় বৈঠক আয়োজন করা হবে, যেখানে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও থাকতে পারেন। “আমি প্রায় তাৎক্ষণিকভাবেই এই বৈঠক করতে চাইব, যদি তারা আমাকে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়,” যোগ করেন তিনি।

তবে ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেন, প্রথম বৈঠকে যদি তিনি প্রত্যাশিত বক্তব্য না শোনেন, তাহলে দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে না।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ