অতিরিক্ত গরমে প্লাস্টিকের বোতলে পানি বহন করা কি নিরাপদ
Published: 12th, May 2025 GMT
প্রচণ্ড গরমে শরীর যখন পানিশূন্য, তখন গাড়িতে উঠে এক চুমুক পানি খেলে শরীর জুড়ায়। ভাবতে পারেন, পানিই তো, এতে ক্ষতির কী আছে? কিন্তু অতিরিক্ত গরম শুধু আপনার শরীরে নয়, ছড়িয়ে পড়েছে পুরো গাড়িতে। গাড়ির সঙ্গে সঙ্গে উত্তপ্ত হয় প্লাস্টিকের বোতলও। গবেষণা বলছে, উত্তপ্ত পানির বোতল থেকে ন্যানোপ্লাস্টিক ছড়িয়ে পড়তে পারে পানিতে; সৃষ্টি হতে পারে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা।
‘সায়েন্স অব দ্য টোটাল এনভায়রনমেন্ট’ নামক এক জার্নালের গবেষণামতে, প্লাস্টিকের বোতল যখন অতিরিক্ত গরম থাকে, তখন বোতল থেকে বিভিন্ন মাত্রার ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরিত হয়। সাধারণত অতিরিক্ত গরমে পানির ক্ষুদ্র কণাগুলো দ্রুত ছোটাছুটি শুরু করে। সেখান থেকে প্লাস্টিকের বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ পানিতে মিশে যেতে পারে। এই রাসায়নিক পদার্থের বড় অংশজুড়ে আছে ন্যানোপ্লাস্টিক।
আরও পড়ুনশিশুর জন্য প্লাস্টিকের ফ্লাস্ক কতটা নিরাপদ, একটা ফ্লাস্ক কত দিন ব্যবহার করা যাবে১৮ এপ্রিল ২০২৫তবে সব ধরনের প্লাস্টিক থেকে এ–জাতীয় ন্যানোপ্লাস্টিক নিঃসরিত হয় না। বিপিএ সার্টিফিকেটধারী প্লাস্টিক থেকে সাধারণত ন্যানোপ্লাস্টিক ছড়ায় না। তবে সব ধরনের প্লাস্টিক থেকে সাবধানতা অবলম্বন জরুরি।
এ ছাড়া গরম প্লাস্টিকের বোতল থেকে হতে পারে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ। প্লাস্টিকের বোতলে যখন মুখ লাগিয়ে পানি খাই আমরা, তখন কিছু ব্যাকটেরিয়া বোতলে লেগে যায়। অতিরিক্ত গরমে এই ব্যাকটেরিয়া বিস্তারের সুযোগ পায়। ফলে লম্বা সময় ধরে পানি উত্তপ্ত হলে ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধতে পারে খোদ বোতলেই, যা পরবর্তী সময়ে শরীরের ক্ষতি করতে পারে।
আরও পড়ুনপানির বোতলে কেন মেয়াদের তারিখ থাকে?২৫ জুন ২০১৭গরম প্লাস্টিকের বোতল থেকে এক দিন পানি খেলেই যে শরীর খারাপ করবে, ব্যাপারটা এমন নয়; বরং দীর্ঘদিন একই বোতল থেকে পানি খেলে তা শারীরিক সমস্যার তৈরি করতে পারে। বড় কোনো রোগ এক দিনে শরীরে বাসা বাঁধতে পারে না; বরং সময়ের সঙ্গে, নিয়মিত সংস্পর্শে রোগ বাসা বাঁধতে শুরু করে। তবে সাধারণ কিছু নিয়ম মেনে চললে এই ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।
১.
২. গাড়ি যেখানে রাখবেন, লক্ষ রাখবেন, যাতে রোদ সরাসরি পানির বোতলে না পড়ে। প্রয়োজনে পানির বোতল সরিয়ে রেখে যান, যাতে সরাসরি রোদের আলো পানির বোতলে না পড়ে।
৩. নিয়মিত বোতল পরিবর্তন করুন। বেশি দিন একই প্লাস্টিকের বোতল থেকে পানি খাবেন না। বোতল নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন।
৪. একাধিক মানুষ একই পানির বোতল ব্যবহার করলে চেষ্টা করবেন মুখ না লাগিয়ে পানি খেতে। এতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি কমবে।
৫. খুব ভালো হয় গাড়িতে প্লাস্টিকের বদলে অন্য কোনো বোতলে পানি রাখলে। কাচ, অ্যালুমিনিয়াম অথবা স্টেইনলেস স্টিলের বোতল ব্যবহারে স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক কম।
৬. প্লাস্টিকের বোতলে পানি খাওয়া তেমন ক্ষতিকর নয়। কিন্তু সেই বোতল যখন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, তখনই তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই কেবল গাড়ি নয়, যেখানেই রাখুন না কেন, বোতল যেন সরাসরি সূর্যালোক না পায়।
সূত্র: ইটিং ওয়েল
আরও পড়ুনকোন রঙের প্লাস্টিক সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর, যা ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায় ৩০০ শতাংশ পর্যন্ত০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া
রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর-সংলগ্ন মিরপুর সড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
আজ সোমবার বিকেলে সাড়ে তিনটার দিকে এই চিত্র দেখা যায়। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
দুপুরের দিকে দুটি এক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙতে গিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। পরে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এরপর বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করে আসছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আছেন র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা। তাঁরা শক্ত অবস্থানে আছেন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আজ দুপুরের দিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনের মিরপুর সড়কে দুটি এক্সকাভেটর দেখা যায়।
পরে বিক্ষোভকারীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে এক্সকাভেটর ঢোকানোর চেষ্টা করেন। তাঁদের বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাঠিপেটা করে।
কিছুটা ছত্রভঙ্গ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় পুলিশের অন্তত এক সদস্য আহত হন।
আরও পড়ুনএক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যাওয়া বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ৪ ঘণ্টা আগেপরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড মেরে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গের চেষ্টা করে। এ সময় দফায় দফায় সাউন্ড গ্রেনেডের বিকট শব্দ শোনা যায়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
বেলা পৌনে ২টার দিকে দুই ভাগে ভাগ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আবার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে তাঁদের আবার ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ।
বিক্ষোভকারীদের ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার জন্য দফায় দফায় চেষ্টা এবং তাঁদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। নিউমার্কেট থেকে মিরপুরমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুনরায়কে কেন্দ্র করে ঢাকায় নিরাপত্তা জোরদার, ১৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন৫ ঘণ্টা আগেবিক্ষোভকারীরা পুরোপুরি সরে না যাওয়ায়, বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে আসার চেষ্টা করায় এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়। এখন এলাকায় সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ধানমন্ডি অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার জিসানুল হক দুপুরে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘আমরা কোনোমতে কাউকে আইন হাতে তুলে নিতে দেব না।’
গত ফেব্রুয়ারিতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িটির অর্ধেকের বেশি অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ৩২ নম্বরের বাড়িটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুনআড়াই ঘণ্টা ধরে পড়া হলো রায়, এরপর এল মৃত্যুদণ্ডের আদেশ২ ঘণ্টা আগে