নোয়াখালীতে সাম্যবাদী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা, আহত ৫
Published: 12th, May 2025 GMT
নোয়াখালীতে সাম্যবাদী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ সোমবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় সাম্যবাদী আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা তারেকেশ্বর দেবনাথ ওরফে নান্টুসহ কমপক্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
গত ৩০ এপ্রিল শহরের টাউন হল মোড় এলাকার সমবায় বিপণিকেন্দ্রের নিচতলায় সাম্যবাদী আন্দোলনের জেলা কার্যালয়ে তালা দেওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে আজ সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল দলটি। ওই কর্মসূচি পালন করতে যাওয়ার পথে হামলার ঘটনা ঘটে বলে দলের নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন।
সাম্যবাদী আন্দোলনের পক্ষ থেকে ঘটনার জন্য জেলা বিএনপির সদস্য আবদুল মোতালেব ওরফে আপেলের লোকজনকে দায়ী করা হয়েছে। তবে আবদুল মোতালেব এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। আজ দুপুরে নোয়াখালী প্রেসক্লাবে নোয়াখালী সমবায় ব্যাংকের সদস্যদের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাম্যবাদী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলায় তাঁর কোনো লোক জড়িত নন বলে আবদুল মোতালেব দাবি করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১০টার দিকে সাম্যবাদী আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সামনে থেকে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করার উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দিকে যাচ্ছিলেন। তাঁরা জেলা শিল্পকলা একাডেমির দক্ষিণ-পশ্চিম পাশের সড়ক অতিক্রম করার সময় ১০-১২ জন তরুণ অতর্কিতে লাঠিসোঁটা নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালান। হামলায় সাম্যবাদী আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন।
সেখানে উপস্থিত লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হামলাকারীদের হামলা ও ধাওয়ার শিকার হয়ে সাম্যবাদী আন্দোলনের নেতা-কর্মী ও সংবাদ সংগ্রহের দায়িত্বরত বেসরকারি একাধিক টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যান দৌড়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিচতলায় আশ্রয় নেন। তখন হামলাকারীরা সেখানে গিয়েও হামলার চেষ্টা চালান। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনবাহিনীর সদস্যরা সেখানে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান।
হামলার শিকার মুক্তিযোদ্ধা তারেকেশ্বর দেবনাথ প্রথম আলোকে বলেন, সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে আবদুল মোতালেবের লোকজন গত ৩০ এপ্রিল তাঁদের দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। ওই ঘটনার প্রতিবাদে আজ সকালে মানববন্ধন করার জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাওয়ার পথে অতর্কিতে তাঁদের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলায় তিনিসহ দলের পাঁচজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
হামলার অভিযোগ প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা আবদুল মোতালেব প্রথম আলোকে বলেন, তারেকেশ্বর দেবনাথের সঙ্গে কিংবা তাঁদের সংগঠনের সঙ্গে তাঁর কোনো বিরোধ নেই। তাঁরা যে কক্ষে দলের কার্যালয় করেছেন, সেটি সমবায় ব্যাংকের। কক্ষের ভাড়া না পেয়ে ব্যাংকের লোকজন ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। এর সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই।
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সাম্যবাদী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ গিয়ে হামলাকারীদের কাউকে পায়নি। পরে হামলার শিকার মুক্তিযোদ্ধা তারেকেশ্বর দেবনাথসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা থানায় এসে তাঁকে ঘটনা জানিয়ে গেছেন। তবে লিখিত কোনো অভিযোগ দেননি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ ল ম ত ল ব কর ম দ র ওপর কর ম র র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
অন্তঃসত্ত্বা নারীকে মারধরের অভিযোগ, নওগাঁয় ইউএনওর অপসারণ চেয়ে মানববন্ধন
নওগাঁর ধামুইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহরিয়ার রহমান ও ধামুইরহাট পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুস সালামের বিরুদ্ধে অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ দুজনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আজ বুধবার দুপুরে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের শাস্তি ও ইউএনওর অপসারণের দাবিতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, উপজেলার মঙ্গলকোঠা আবাসিক এলাকায় ধামুইরহাট পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলা নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সকালে পৌরসভার লোকজনের সঙ্গে এলাকাবাসীর বাগ্বিতণ্ডা হয়। ময়লা ফেলতে বাধা দেওয়ার খবর পেয়ে ইউএনও শাহরিয়ার রহমান ও পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুস সালাম ঘটনাস্থলে যান। এ সময় ওই দুই কর্মকর্তা প্রকাশ্যে মঙ্গলকোঠা এলাকার এক অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ দুই নারীকে মারধর করেন।
গৃহবধূ সামিরন খাতুন বলেন, ‘পৌরসভার লোকজন গাড়িতে করে আমাদের এলাকায় ময়লা ফেলতে এলে এলাকার সবাই মিলে বাধা দিই। বসতবাড়ির আশপাশে ময়লা ফেললে সমস্যা হবে বলে ইউএনওকে ময়লা না ফেলতে এলাকাবাসী অনুরোধ করেন। কিন্তু ইউএনও আমাদের কথা না শুনে আমাকেসহ মিতুকে (অন্তঃসত্ত্বা নারী) নিজেই লাঠি দিয়ে মারধর করেন। আমরা ইউএনওর অপসারণসহ তাঁর কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
মানববন্ধনে স্থানীয় আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘ইউএনও আমার গর্ভবতী স্ত্রীর গায়ে তুলেছে সবার সামনে। একজন ইউএনওর আচরণ এমন হলে আমরা বিচার কার কাছে পাব?’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও শাহরিয়ার রহমান বলেন, পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা একটি খাস জমিতে ময়লা ফেলতে গেলে স্থানীয় কয়েকজন বাধা দেন এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের গালমন্দ করে তাড়িয়ে দেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য তিনি ওই এলাকায় গেলে এলাকার কিছু লোক তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। সেখানে কয়েকজন অবৈধ দখলদার নারী-পুরুষ বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেন। একপর্যায়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও আনসারদের গায়ে হাত তোলেন। নারীদের মারধরের অভিযোগের বিষয়ে তিনি দাবি করেন, ‘সেখানে কারও গায়ে হাত তোলা হয়নি। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।’
জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল প্রথম আলোকে বলেন, আজ মানববন্ধন করে কিছু লোক ইউএনওর বিরুদ্ধে নারীকে মারধরের অভিযোগ করেন। উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও জেলা প্রশাসনের মধ্যস্থতায় বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক।