এক দিনে তাপমাত্রা কমলো ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ঠান্ডা বাতাসে স্বস্তি জনজীবনে
Published: 13th, May 2025 GMT
টানা ছয় দিন ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় তাপপ্রবাহের পর সোমবার সকাল থেকে স্বস্তির বৃষ্টির দেখা পেতে শুরু করেছেন দেশবাসী। এতে এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে গেছে। ফলে মুক্তি মিলেছে তীব্র তাপদাহ থেকে। ঠান্ডা বাতাস বইতে থাকায় কিছুটা স্বস্তি এসেছে জনজীবনে।
এদিকে তাপপ্রবাহ থেকে মুক্তি মিললেও ঢাকাসহ ২১ জেলায় বজ্রপাতের আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বজ্রপাত হলে ঘরের মধ্যে থাকা, ভ্রমণ এড়িয়ে চলা ও গাছের নিচে আশ্রয় না নেওয়াসহ বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে যেসব এলাকায় হঠাৎ তাপমাত্রা কমে গেছে, সেখানকার মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রহমান জানান, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গতকাল বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টিপাত হয়েছে। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় তাপমাত্রা নামতে শুরু করেছে। আজ মঙ্গলবারও বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, খুলনা বিভাগ বাদ দিয়ে দেশের প্রায় সর্বত্র ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমে গেছে। রাজশাহীতে এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীতে কমেছে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ২১ জেলায় বজ্রপাতের আভাস রয়েছে। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে পরবর্তী ৪ ঘণ্টার মধ্যে বিভিন্ন জেলায় অস্থায়ীভাবে প্রতি ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বা তার বেশি বেগে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি এবং বজ্রপাত হতে পারে। জেলাগুলো হলো– রাজশাহী, নাটোর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, ঢাকা, নরসিংদী, রংপুর, গাইবান্ধা, শেরপুর, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট, রাঙামাটি ও বান্দরবান।
বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু
বরগুনার আমতলীতে মাঠে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে কহিনুর নামে এক গৃহবধূ প্রাণ হারিয়েছেন। উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ ডালাচারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এদিন দক্ষিণ গুলিশাখালী গ্রামে বজ্রপাতে শামীম চৌকিদার নামে একজন আহত হয়েছেন। সকালে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ক্ষেতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে মোহাম্মদ ফিরোজ নামে এক কৃষক মারা গেছেন। এ ছাড়া গতকাল হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার সুজনপুর গ্রামে বজ্রপাতে আজগর আলী নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স লস য় স
এছাড়াও পড়ুন:
মালয়েশিয়ায় আরো বাংলাদেশি কাজ করার সুযোগ পাবেন: আশা প্রধান উপদেষ্টার
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে আরো অধিকসংখ্যক বাংলাদেশি কাজ করার সুযোগ পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
মালয়েশিয়া সফরের দ্বিতীয় দিনে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ আশা প্রকাশ করেন তিনি। এর আগে কুয়ালালামপুরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন। এরপর দুই দেশের মধ্যে ৫টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং তিনটি সহযোগিতামূলক নোট বিনিময় স্বাক্ষর করা হয়।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি কর্মী মালয়েশিয়ায় কাজ করছে। তারা উপার্জিত অর্থ দেশে পাঠান, যা তাদের পরিবারের সদস্যদের জীবনযাপন, সন্তানের লেখাপড়া এবং ভালো শিক্ষা গ্রহণে সহায়তা করছে। আমরা আশা করি, বাংলাদেশের জন্য এই দরজা খোলা থাকবে এবং আমাদের দেশের আরো অধিকসংখ্যক তরুণ-তরুণী এখানে কাজ করার সুযোগ পাবেন।”
বাংলাদেশের কর্মীদের মালয়েশিয়ায় কাজ করার সুযোগ দেওয়ায় দেশটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, “মালয়েশিয়ার জনগণ তাদের সঙ্গে পরিবারের একজন সদস্য এবং বন্ধুর মত আচরণ করে। এতে তারা খুব খুশি। তারা অর্থ উপার্জনের পাশাপাশি এখান থেকে অনেক কিছু শেখে, যা দেশে ফিরে যাওয়ার পর নিজের ব্যবসা দাঁড় করাতে সহায়ক হয়।”
মালয়েশিয়ার ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “আমরা বাংলাদেশকে একটা উৎপাদনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আপনারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন এবং প্রযুক্তি নিয়ে আসুন। আমাদের মানবসম্পদকে কাজে লাগিয়ে আপনারা পণ্য উৎপাদন করে বিদেশে রপ্তানি করতে পারেন।”
একটা টেকসই অর্থনীতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাংলাদেশকে বিনিয়োগ ও ব্যবসার জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
গত বছরের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গত বছর ছাত্র-জনতা রাস্তায় নেমেছিল। আন্দোলনের মুখে স্বৈরশাসক বিদায় নিয়েছে। এরপর নতুন সরকারের দায়িত্ব নিয়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত দেশে স্থিতিশীলতা ফেরাতে আমরা সহযোগিতা খুঁজছিলাম, আর তখন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বন্ধুর মত আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি আমাদের শক্তি জুগিয়েছিলেন। ”
বাংলাদেশে সঠিক পথ নিশ্চিত করতে দৃঢ় সংকল্পের কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “আমরা দেশে শৃঙ্খলা ফেরাতে পেরেছি। অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করেছি।”
“ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে আবারও কার্যকর করা গেছে। যে কারণে এক বছরের মাথায় এসে আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে পারছি।” আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথাও জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা সংকট নিরসন এবং আসিয়ানের সদস্যপদ প্রাপ্তির জন্য মালয়েশিয়ার জোরালো সমর্থন চান।
সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম আশা প্রকাশ করে বলেন, “দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার সম্পর্ক উভয় দেশের জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে সহায়ক হবে।”
তথ্যসূত্র: বাসস
ঢাকা/ইভা