ঢাবি ছাত্র শাহরিয়ার হত্যার ঘটনায় ঢাকা ইউনিভার্সিটি হিউম্যান রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্বেগ
Published: 14th, May 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার ঘটনায় শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা ইউনিভার্সিটি হিউম্যান রাইটস অ্যাসোসিয়েশন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনাসহ ছয়টি দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
বুধবার এক বিবৃতিতে এসব দাবি জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইতিপূর্বে ফজলুল হক হলে তোফাজ্জল হত্যাসহ সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে মানবিক মর্যাদা ও জীবনের অধিকার ক্ষুণ্ন হওয়ার জ্বলন্ত প্রমাণ। আমরা দৃঢ়ভাবে মনে করি, এই ধরনের সহিংসতা ও প্রাণঘাতী ঘটনা প্রতিরোধে দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত কিছু কাঠামোগত সমস্যার অবসান ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বাধ্যতামূলক জবাবদিহি প্রয়োজন।’
আরও পড়ুনশাহরিয়ার ও তাঁর দুই বন্ধুর ওপর হামলা চালায় ১০–১২ জনের একটি দল৪ ঘণ্টা আগেঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হিউম্যান রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের অন্য দাবিগুলো হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসনের অধীনে প্রক্টরিয়াল টিমে একটি ‘কুইক রেসপন্স টিম’ গঠন করে প্রয়োজনে প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যসংখ্যা বাড়ানো, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে মাদক ব্যবসা ও অপরাধী চক্রের অভয়াশ্রম থেকে মুক্ত করে একটি সুস্থ ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ভারী যান চলাচল ও হর্ন বাজানো সীমিত করা, নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে মাদকাসক্ত ও মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং সব ধরনের মব ভায়োলেন্সের (উচ্ছৃঙ্খল জনতার সহিংসতা) পরিবর্তে আইনের শাসন নিশ্চিত করা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শওকত ওসমানের সাহিত্য শিল্পই নয়, মানবিক বিবৃতি
শওকত ওসমান ছিলেন একজন সংস্কারক। তাঁর সাহিত্যের রাজনৈতিক গভীরতা ও নৈতিক প্রতিবাদ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শিক্ষা হয়ে থাকবে। এ সাহিত্য কেবল শৈল্পিক রচনাই নয়, মানবিক বিবৃতিও।
গতকাল বুধবার অমর কথাশিল্পী শওকত ওসমানের ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া। প্রধান আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও আমার দেশ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ এবং প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান সময় প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফরিদ আহমেদ। সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন রয়েল ইউনিভার্সিটির ডিন অধ্যাপক ড. দীপু সিদ্দিকী।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া বলেন, শওকত ওসমান শুধু কথাশিল্পী নন, তিনি ছিলেন একজন সংস্কারক, আধুনিকতা-সচেতন অন্তর্দর্শী। আমাদের দরকার তাঁকে চেতনার আলোয় নতুনভাবে পড়া, গবেষণার মাধ্যমে তাঁর হারিয়ে যাওয়া রচনাবলি উদ্ধার করা। তিনি বাংলা একাডেমিকে শওকত ওসমানের রচনাসমগ্র পুনঃপ্রকাশ, তাঁর নামে একটি সড়কের নামকরণ ও ‘শওকত ওসমান ইনস্টিটিউট’ গঠনের আহ্বান জানান।
প্রধান আলোচক সৈয়দ আবদাল আহমদ বলেন, শওকত ওসমানের সাহিত্য মানুষের মুক্তি ও মানবিক বোধের মুক্তচিন্তা নিয়ে। তার লেখা আজকের সমাজ-রাষ্ট্রের সংকটে আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।
প্রকাশক ফরিদ আহমেদ বলেন, শওকত ওসমানকে বোঝার জন্য আমাদের কেবল পাঠক নয়, চিন্তক হয়ে উঠতে হবে। তাঁর ভাষা ও বক্তব্যে যে রাজনৈতিক গভীরতা ও নৈতিক প্রতিবাদ, তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শিক্ষা হয়ে থাকবে। অনুষ্ঠানে শওকত ওসমানের ছেলে লেখক জাঁ-নেসার ওসমান আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেন।
অধ্যাপক ড. দীপু সিদ্দিকী বলেন, শওকত ওসমানের সাহিত্য কেবল শৈল্পিক রচনাই নয়, বরং এক মানবিক বিবৃতিও। সেখানে রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন, রাজনৈতিক বন্দিত্ব, চিন্তার সংকট ও মানবিক প্রতিরোধ– সবই উঠে এসেছে সাহসের সঙ্গে। যখন লেখালেখি হয়ে ওঠে ক্ষমতার মুখোশ, তখন শওকত ওসমানের লেখনী হয়ে ওঠে বিবেকের ভাষা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে শওকত ওসমানের জীবন ও সাহিত্যকর্ম নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এরপর কবিতা আবৃত্তি করেন কবি রিমা চিশতী, আনিসুর রহমান, রফিক চৌধুরী ও অধ্যাপক দীপু সিদ্দিকী। সমাপনী পর্বে শওকত ওসমানের কালজয়ী উপন্যাস ‘ক্রীতদাসের হাসি’ থেকে নির্বাচিত অংশ পাঠ করেন বাচিক শিল্পী আনিসুর রহমান, রিমা চিশতীসহ অনেকে।