ধর্ষণের হুমকির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেটের সদস্যসচিবসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা
Published: 15th, May 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেট জেলার আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব নুরুল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের হুমকির অভিযোগে মামলা করেছেন একই সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক সুমাইয়া আক্তার।
গতকাল বুধবার সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতে মামলাটি করা হয়। মামলার অন্য তিন আসামি হলেন জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সালমান আহমদ ওরফে খুরশেদ (২৭), যুগ্ম সদস্যসচিব ফখরুল হাসান (২৫) ও রেদোয়ার মুনসি (২৬)।
মামলার বাদী সুমাইয়া আক্তার অভিযোগ করেন, ৭ মে আসামিরা তাঁকে অপহরণ, খুন ও ধর্ষণের হুমকি দেন। পরে ১০ মে তাঁর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিনি সিলেট মহানগরের কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে তিনি আদালতে মামলা করেন।
বাদীর আইনজীবী ওয়াহিদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শককে (তদন্ত) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেট জেলার আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব নুরুল ইসলাম বলেন, ‘মামলায় যে চারজনকে আসামি করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রেদোয়ার মুনসি আমাদের কমিটির কেউ নন। আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। মামলা যে কেউ করতে পারেন, কিন্তু প্রমাণ তো করতে হবে। এ অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। সামাজিকভাবে হেনস্তা করতেই বাদী এমনটি করেছেন।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নাফ নদী থেকে তিন বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেল আরাকান আর্মি
কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলার লেদা এলাকায় নাফ নদী থেকে তিন বাংলাদেশিকে নৌকাসহ ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। তাঁরা হলেন সিদ্দিক হোসেন (২৭), রবিউল আলম (২৭) ও মাহমুদ হোসেন (৩০)। তাঁরা তিনজনই টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের পূর্ব লেদার লামারপাড়ার বাসিন্দা।
আজ সোমবার দুপুরে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলার লেদা–সংলগ্ন নাফ নদী থেকে তাঁদের ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হ্নীলা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে টানা ১১ মাস সরকারি জান্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতের পর গত ৮ ডিসেম্বর মংডু টাউন দখল করে নেয় আরাকান আর্মি। এরপর নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন পয়েন্টে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির তৎপরতা বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে নাফ নদী থেকে বাংলাদেশি জেলেদের ট্রলারসহ অপহরণের ঘটনাও। জেলেরা এসব ঘটনার জন্য আরাকান আর্মিকে দায়ী করেছেন।
হ্নীলা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, আজ দুপুরের দিকে যে তিনজনকে আরাকান আর্মি ধরে নিয়ে গেছে, তাঁরা জেলে নন। কেন তাঁরা নাফ নদীতে গেছেন, তা নিশ্চিত হতে পারেননি তিনি। তবে স্থানীয় লোকজনকে জানিয়ে ওই তিনজন নৌকা নিয়ে নেমেছিলেন। আরাকান আর্মি তাঁদের দেখতে পেয়ে গুলি চালায়। পরে তাঁদের ধাওয়া করে আটক করে নিয়ে যায়। বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছেন তিনি।
মোহাম্মদ আলী ছাড়াও স্থানীয় জেলেরা অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নুরুল হুদা স্থানীয় জেলেদের বরাত দিয়ে বলেন, নাফ নদী থেকে তিনজনকে অস্ত্রের মুখে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘গত ডিসেম্বরে রাখাইন রাজ্য দখলের পর আরাকান আর্মি নাফ নদীতে মাছ আহরণসহ নৌকা চলাচলের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছে। এর মধ্যে নাফ নদী থেকে নৌকাসহ তিনজনকে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। তবে তাঁরা জেলে, নাকি মাদক কারবারি, সেটি পরিষ্কার নয়। কারণ, ওই এলাকা দিয়ে প্রচুর পরিমাণে মাদকের বড় বড় চালান জব্দের ঘটনা ঘটেছে।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে আরাকান আর্মি ২০৪ বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। এর মধ্যে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় কয়েক দফায় ১৮৯ জনকে ফেরত আনা হয়েছে।