কালাইয়ে প্রতিযোগিতা করে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল শতাধিক দোকানঘর। দিনের পর দিন দখলের মহোৎসব চললেও সওজ বা স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও কোনো উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা হয়নি। যেন সওজের জায়গা দখলে নেই কোনো বাধা।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কালাই পৌর এলাকার পাঁচশিরা বাজার থেকে পূর্বদিকে পুনট বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশে চার কিলোমিটার এবং পশ্চিমে ক্ষেতলাল উপজেলার নিশ্চিন্তা বাজার পর্যন্ত দুই কিলোমিটার মিলে মোট ছয় কিলোমিটারের মধ্যে দুটি জলাশয় ছিল। এক সময় মাছ চাষের পাশাপাশি দুটি জলাশয়ের পানি কৃষিকাজে ব্যবহার হতো। এখন সেখানে কচুরিপানা, ময়লা-আবর্জনা ও পৌরসভার বর্জ্য ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। এ সুযোগে পেছনের জমির মালিকরা কৌশলে জলাশয় দুটিতে মাটি ফেলে প্রথমে ভরাট করে। পরে সেই জায়গায় ভিত বসিয়ে কেউ বসতবাড়ি ও দোকানঘর নির্মাণ করেছে। শুধু বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকরাই নন, এনজিও ব্র্যাক এবং হিমাগার মালিকরাও এ সুযোগ ছাড়েননি। কেউ কেউ রীতিমতো রাস্তা তৈরি করে বাড়ির সংযোগ পথও তৈরি করেছেন। এ কাজে জড়িত আছেন খাইরুল আলম, রঞ্জু মিয়া, শহিদুল ইসলাম, জাহিদুল ইসলাম, আবুল কালাম, আব্দুল হান্নান, মাহমুদুল হাসান, ফজলুর রহমান, মোহাম্মদ হাসান, আসিফ হোসেন, ছানোয়ার হোসেনসহ শতাধিক দখলদার। তারা প্রত্যেকে সওজের ৫-৬ শতাংশ করে জায়গা দখলে নিয়ে এখন নিজেদের সম্পত্তি বলে দাবি করছেন। মহাসড়কের উভয় পাশে তারা ৫০ থেকে ৬০টি পাকা বাড়িও নির্মাণ করেন। গত ১৫ দিনে আরও ১১টি দোকানঘর তোলা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রেজাউল করিম বলেন, ‘সওজের জায়গার পেছনে থাকা জমির মালিকরা নিজেদের স্বার্থে সরকারি জলাশয় দুটি দখল করেছে। শুধু দখলই নয়, সওজের জায়গায় ভিত দিয়ে ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। তাদের দেখাদেখি এনজিও ও হিমাগার মালিকরাও দখল করে সীমানা প্রাচীর তুলেছে। সবার জন্য ব্যবহারের জায়গা তারা দখল করেছে। এদের কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত।
সওজের জায়গা দখল করে বাড়িতে যাওয়ার জন্য রাস্তা করেছেন আব্দুল হান্নান। তিনি বলেন, জলাশয় দুটি ৪০ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। বাড়িটি নির্মাণ করতে গিয়ে কিছু জায়গা মাটি দিয়ে ভরাট করতে হয়েছে যাতায়াতের জন্য। আমি সামান্য একটু জায়গায় রাস্তা করেছি। এতে কারও ক্ষতি হয়নি। অনেকে বাড়িও নির্মাণ করেছেন। তাদের কেউ কিছু বলে না।
মৎস্য কর্মকর্তা তৌহিদা মোহতামিম বলেন, দখলদারদের উচ্ছেদের বিষয়ে আগামী সমন্বয় সভায় আলোচনা করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামিমা আক্তার জাহান বলেন, ‘সরকারের কোটি টাকার সম্পদ অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। উন্মুক্ত জলাশয় দুটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতাধীন, তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে হবে। এর পর জলাশয় দুটি মৎস্য চাষের আওতায় আনা হবে। সরকারি সম্পত্তি কারও ব্যক্তিগত মালিকানায় ছেড়ে দেওয়া হবে না।’
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান বলেন, জলাশয় দুটি রক্ষায় আমাদের সোচ্চার হওয়া দরকার ছিল। স্বীকার করছি, এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে খুব অল্প সময়ের মধ্যে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সওজ ন র ম ণ কর র ম ল কর দখলদ র
এছাড়াও পড়ুন:
‘দ্য প্যালেস্টাইন ল্যাবরেটরি’ আসছে বাংলা ভাষায়
খ্যাতিমান অস্ট্রেলীয় সাংবাদিক অ্যান্টনি লোয়েনস্টাইনের বিশ্বজুড়ে আলোচিত বই দ্য প্যালেস্টাইন ল্যাবরেটরি এবার আসছে বাংলা ভাষায়। আগামী ২৫ অক্টোবর অ্যানভিল পাবলিকেশনস বইটির বাংলা সংস্করণ প্রকাশ করবে।
বইটির অনুবাদ করেছেন বাধন অধিকারী, সাঈদ হাসান, তাসনিয়া ইসলাম, মুস্তাকিম বিল্লাহ মাসুম এবং জাহিদুল ইসলাম জন। ইতোমধ্যে বহু ভাষায় অনূদিত হয়েছে বইটি। বিশ্বে বেস্টসেলার বইটি এবার বাংলা ভাষার পাঠকদের হাতে পৌঁছাবে একটি নির্ভরযোগ্য ও স্বত্বাধিকার-সংরক্ষিত সংস্করণে।
বাংলা সংস্করণের জন্য আনভিল পাবলিকেশনস বইটির প্রকাশনা সংস্থা জাইটগাইস্ট এজেন্সির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করেছে। বইটির নির্ধারিত মূল্য রাখা হয়েছে ৫০০ টাকা। তবে প্রি-অর্ডারে ৩০ শতাংশ ছাড়ে মাত্র ৩৫০ টাকায় পাওয়া যাবে বইটি। ১ সেপ্টেম্বর থেকে প্রি-অর্ডার শুরু হবে।
আরো পড়ুন:
খালেকের বই বিক্রির ৬০ বছর
‘কাঁচামিঠে ফলের ছড়া’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন
দ্য প্যালেস্টাইন ল্যাবরেটরি বইটিতে লোয়েনস্টাইন দেখিয়েছেন, কীভাবে ইসরায়েল দশকের পর দশক ধরে অধিকৃত ফিলিস্তিন ভূখণ্ডকে নজরদারি ও সামরিক প্রযুক্তির পরীক্ষাগার হিসেবে ব্যবহার করেছে। বইটিকে বলা যায় একটি বৈশ্বিক তদন্ত প্রতিবেদন, যেখানে উন্মোচিত গোপন নথি, সাক্ষাৎকার আর সরেজমিন প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে লেখক দেখিয়েছেন, ২১ শতকে ক্রমবর্ধমান গোষ্ঠী-জাতীয়তাবাদের (এথনো ন্যাশনালিজম) পরিসরে কীভাবে ইসরায়েল একইসঙ্গে স্বৈরাচার ও সাম্রাজ্যবাদীদের দখলদারি ও নিয়ন্ত্রণের বন্দোবস্ত পাকাপোক্ত করার প্রযুক্তি সরবরাহ করছে।
নজরদারি পুঁজিবাদের এই নয়া দখলদারিত্বের জামানায় গুপ্তচরবৃত্তির প্রযুক্তি সরবরাহের বিনিময়ে ইসরায়েল কীভাবে দুনিয়াজুড়ে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের কূটনীতি জারি রেখেছে; সেটি এই বইয়ে বলা হয়েছে। সেই অর্থে জায়নবাদের বৈশ্বিক বিস্তৃতিরও ইশারা পাওয়া যায় বইটিতে।
আনভিল পাবলিকেশনসের স্বত্বাধিকারী ও বইটির অনুবাদক বাধন অধিকারী বলেন, “বাংলাদেশের বিরাজমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় নজরদারি ও দমন-পীড়নমুক্ত স্বাধীন নাগরিক পরিসর এবং ইন্টারনেট দুনিয়ার প্রশ্নকে বুঝতে গেলে ‘ফিলিস্তিন ল্যাবরেটরি’ প্রকল্পকে বুঝে নেওয়ার বিকল্প নেই। প্রায় এক বছর ধরে আমরা এই প্রকল্পে সর্বোচ্চ নিষ্ঠা নিয়ে কাজ করেছি। আমাদের লক্ষ্য ছিল অনুবাদটিকে যতটা সম্ভব সহজ, প্রাঞ্জল ও মূল বইয়ের প্রতি বিশ্বস্ত রাখা। পাঠকের সঙ্গে যদি এই বইয়ের সংযোগ ঘটে, সেটিই হবে আমাদের সবচেয়ে বড় সাফল্য।”
প্রি-অর্ডারের বিস্তারিত:
প্রি-অর্ডার শুরু: ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
প্রি-অর্ডারের জন্য ভিজিট করুন: আনভিল পাবলিকেশনসের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ
প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২৫
মূল্য: ৫০০ টাকা (প্রি-অর্ডারে ৩০% ছাড়ে ৩৫০ টাকা)
ঢাকা/লিপি