পবিত্র কাবাঘরের গিলাফ, কিসওয়া, একসময় হজ কাফেলার সঙ্গে বিশেষভাবে পরিবহন করা হতো। এই উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত রেশম কাপড়ে তৈরি গম্বুজ আকৃতির পালকিকে বলা হতো মাহমাল। মাহমাল কেবল কিসওয়া পরিবহনের মাধ্যমই ছিল না, বরং এটি খেলাফত বা সালতানাতের প্রশাসনিক প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত হতো।
মাহমাল ছিল উন্নত মানের রেশম কাপড়ে তৈরি একটি পালকি, যার গায়ে স্বর্ণ ও রুপার প্রলেপ দেওয়া সুতা দিয়ে কোরআনের আয়াত এবং খলিফা বা সুলতানের নাম খোদিত থাকত। এর অভ্যন্তরে কিসওয়া ছাড়াও বিভিন্ন মূল্যবান উপহারসামগ্রী থাকত। মাহমাল মক্কার শরিফের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হতো। হজ কাফেলার সঙ্গে মাহমাল প্রেরণ ছিল প্রশাসনের মর্যাদা ও পবিত্রতার প্রতীক।
সৌদি আরব ও অন্যান্য রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পূর্বে আরব উপদ্বীপ বিভিন্ন খেলাফত ও সালতানাতের অধীনে ছিল। তারা মক্কা ও মদিনার পবিত্র মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ এবং হজ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করত। খলিফা বা সুলতানের তত্ত্বাবধানে হজ কাফেলার সঙ্গে নতুন কিসওয়া মক্কায় পাঠানো হতো এবং পুরোনো কিসওয়া ফেরত আনা হতো। মাহমাল এই পরিবহন–প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল।
আরও পড়ুন মসজিদে নববি ভ্রমণ করা যাবে ঘরে বসেই৩০ জানুয়ারি ২০২৩কায়রোর মধ্য দিয়ে যাওয়া মাহমাল: ১৭৯১ সালের চিত্র, ইংরেজ খোদাইকারী রিচার্ড ডাল্টন।.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়ন্ত্রণ কোনোভাবেই বিদেশি সংস্থার হাতে দেওয়া যাবে না
চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়ার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে হেফাজতে ইসলাম। আজ সোমবার সংগঠনের আমির শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব সাজেদুর রহমানের গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগের কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, বন্দরের নিয়ন্ত্রণ কোনোভাবেই বিদেশি সংস্থার হাতে দেওয়া যাবে না।
বিবৃতি পাঠানোর বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাবাদী। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, অর্থনৈতিক শক্তির প্রাণকেন্দ্র বন্দর। দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দর বিদেশি প্রতিষ্ঠান বা শক্তির হাতে ব্যবস্থাপনাগতভাবে স্থানান্তর করার যেকোনো উদ্যোগ রাষ্ট্রের স্বার্থের বিরুদ্ধে স্পষ্ট হুমকি এবং জাতীয় নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিতে পারে। এ ধরনের পদক্ষেপ দেশের ভবিষ্যৎ, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। কৌশলগত স্থাপনা পরিচালনার নামে কোনো বিদেশি আধিপত্য, বিশেষ সুবিধা বা গোপন চুক্তি জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সম্পূর্ণ অসংগত ও অগ্রহণযোগ্য।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘জনগণের অগণিত ত্যাগ ও শ্রমে গড়ে ওঠা চট্টগ্রাম বন্দর–সম্পর্কিত যেকোনো সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা, জন আস্থার প্রতি সম্মান এবং রাষ্ট্রীয় কঠোর নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করে গ্রহণ করতে হবে। জনগণের অজান্তে বা গোপন আলোচনা ও চুক্তির মাধ্যমে দেশের সম্পদ হস্তান্তরের চেষ্টা আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করি। জাতীয় সম্পদ রক্ষার প্রশ্নে কোনো শিথিলতা, সমঝোতা বা বিদেশি চাপ গ্রহণযোগ্য নয়। চট্টগ্রাম বন্দর দেশের, দেশেরই থাকবে। এটি রক্ষায় প্রয়োজন হলে সর্বোচ্চ নাগরিক সতর্কতা ও গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে প্রস্তুত রয়েছি।’