বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, “১৯৭১ সালে পিন্ডির গোলামির জিঞ্জির ছিন্ন করা হয়েছে দিল্লির দাসত্ব করার জন্য নয়। তেমনি ৫ আগস্ট দেশের মানুষ দিল্লির গোলামি এবং দাসত্ব থেকে মুক্ত হয়েছে ওয়াশিংটনের গোলামি করতে নয়। বাংলাদেশ তার স্বাধীনতার স্বকীয়তা নিয়ে নিজের পায়ে স্বনির্ভর হয়ে মাথা উঁচু করবে। কোনো ভিন দেশীদের স্বার্থে এ দেশের মাটি ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।”

শনিবার (১৭ মে) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পৌর মুক্তমঞ্চে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস জেলা শাখা আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। 

মামুনুল হক বলেন, “১৯৭২ এর সংবিধান এর মধ্যদিয়ে দেশের স্বাধীনতার ইতিহাসকে কলঙ্কিত করে প্রকৃত চেতনাকে ছিনতাই করা হয়েছে। মূলত ৭২ এর চেতনাকে ৭১ এর চেতনার নাম দিয়ে ভারতীয় দালালির চেতনাকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলে মার্কেটিং করেছে ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগ।” 

আরো পড়ুন:

প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর নির্বাচন: মামুনুল হক

বিচার হলে আ.

লীগ চালানোর কেউ থাকবে না: মামুনুল হক

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আলেম ওলামাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানান খেলাফত মজলিসের আমির। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারী দেন তিনি। 

জুলাই গণহত্যা, শাপলা চত্বর গণহত্যাসহ সব গুম, খুন ও হত্যাকাণ্ডের বিচার দৃশ্যমান অগ্রগতি ছাড়া নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হবে না বলে জানান তিনি। মামুনুল হক বাংলাদেশকে রক্ষায় ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন রুখে দেওয়ার জন্য জাতীয় ঐক্যমতকে রক্ষা করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।

সভায় জেলা খলাফত মজলিসের সভাপতি মাওলানা আব্দুল আজিজ খন্দকারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলটির কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা রেজাউল করীম জালালী, মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।  

ঢাকা/মনিরুজ্জামান/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ম ন ল হক

এছাড়াও পড়ুন:

গাজার ২০ শতাংশের বেশি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে: ইউএনআরডব্লিউএ

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, গাজার ২০ শতাংশেরও বেশি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে, ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধ ও অবরোধের ফলে পানিশূন্যতা বেড়ে চলেছে। খবর প্রেস টিভির।

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) ইউএনআরডব্লিউএ এক বিবৃতিতে সতর্ক করে বলেছে, গাজায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে গেছে। সীমিত পানি সরবরাহের কারণে পানিশূন্যতা বেড়ে চলেছে।

জাতিসংঘের সংস্থাটি তাদের সর্বশেষ মিড-আপার আর্ম সার্কামফারেন্স (এমইউএসি)-ভিত্তিক গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, গাজা সিটিতে শিশুদের অপুষ্টির হার ২১.৫ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ বর্তমানে প্রায় প্রতি পাঁচজন ছোট শিশুর মধ্যে একজন অপুষ্টিতে ভুগছে।

আরো পড়ুন:

গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে ১,৭৬০ ফিলিস্তিনি নিহত: জাতিসংঘ

ইসরায়েলে সাবমেরিন সরবরাহের অনুমোদন দিল জার্মানি

তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছেন এমন শিশুদের শনাক্ত করার জন্য এমইউএসি একটি বহুল ব্যবহৃত নৃতাত্ত্বিক পরিমাপ।

সংস্থাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ জানায়, ইউএনআরডব্লিউএ’র কর্মীরা ‘অত্যন্ত ক্লান্ত, মানসিকভাবে চাপে আছেন এবং অনেক ক্ষেত্রে নিজেরাই তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মুখোমুখি হচ্ছেন।’

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় এই অঞ্চলে কমপক্ষে একজন শিশু অনাহারে মারা গেছে, যার ফলে ক্ষুধাজনিত মৃত্যুর মোট সংখ্যা ২৪০ জনে দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে ১০৭ জন শিশু রয়েছে।

ইউএনআরডব্লিউএ বলছে, গাজা উপত্যকায় স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলো গুরুতর অপারেশনাল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যসেবা সুবিধার ব্যাপক ক্ষতি, নিরাপদ চলাচলে বাধা এবং চিকিৎসা সরবরাহ ও জ্বালানি প্রবেশের উপর ইসরায়েলি বিধিনিষেধ।

জাতিসংঘের সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরবরাহের অভাব স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে সংকটের মধ্যে ফেলেছে, যার ফলে দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত ও সংক্রামক রোগে ভুগছেন এমন রোগীরা প্রয়োজনীয় জীবন রক্ষাকারী সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এতে করে ব্যাপকভাবে জনস্বাস্থ্য সংকটের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। 

ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের কয়েক দশক ধরে আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধারা (হামাস) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর অপারেশন আল-আকসা স্টর্ম পরিচালনা করে। এর জবাবে ওই দিন থেকেই গাজায় গণহত্যামূলক যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। 

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, গাজায় ইসরায়েলি নির্বিচার হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৬১ হাজার ৮২৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৫৫ হাজার ২৭৫ জন আহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল হামাস ও ইসরায়েল। তবে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় ফের তীব্র হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তার আগে গত ২ মার্চ থেকে ফিলিস্তিনের গাজায় সব ধরনের মানবিক ত্রাণের প্রবেশ বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। এতে  গাজায় মানবিক সংকটকে আরো ভয়াবহ হয়ে পড়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজার ২০ শতাংশের বেশি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে: ইউএনআরডব্লিউএ
  • গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়াল