বীরগঞ্জে ট্রাক-মাইক্রোবাস মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৩, আহত ৪
Published: 19th, May 2025 GMT
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ট্রাক ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। সোমবার সকাল সাতটার দিকে দিনাজপুর-ঠাকুরগাঁও মহাসড়কের বীরগঞ্জ উপজেলার বাবলু ফার্মের সামনে এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন।
নিহতরা হলেন- মাইক্রোবাস চালক ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সদর রোড কলোনি পাড়ার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মানিক হোসেন (৩৪) ও মাইক্রোবাসের যাত্রী একই উপজেলার হাজীপাড়ার মৃত হাফিজুর রহমানের ছেলে দেলোয়ার হোসেন (৩৫)। গুরুতর আহত পাঁচ জনকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মাইক্রোবাসের আরেক যাত্রী মারা যান। তবে এখন পর্যন্ত তার পরিচয় জানা যায়নি।
বীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল গফুর ও উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ মোসলেম উদ্দিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল ৭টার দিকে বৃষ্টির মধ্যে ঠাকুরগাঁও থেকে একটি মাইক্রোবাস দিনাজপুরের দিকে আসছিল। অপরদিকে একটি ট্রাক ঠাকুরগাঁয়ের দিকে যাচ্ছিল। পথে ঘটনাস্থলে মাইক্রোবাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেন। সেখানে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে গুরুতর আহত পাঁচজনকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মাইক্রোবাসের এক যাত্রী মারা যান।
বীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল গফুর জানান, এই ঘটনায় যান চলাচল স্বাভাবিক আছে। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন ন হত ব রগঞ জ ঠ ক রগ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
তাহলে কি অ্যাপলের কারখানা আর চীন থেকে ভারতে যাচ্ছে না
ভারতের ‘বিশ্ব কারখানা’ হয়ে ওঠার স্বপ্ন বহুদিনের। এই স্বপ্ন পূরণের পথে যখন অগ্রগতির অল্পস্বল্প ইঙ্গিত মিলছিল, ঠিক তখনই ওয়াশিংটন ও বেইজিং নিজেদের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনর্গঠনের ঘোষণা দিল। তাদের এই ঘোষণা চীনকে সরিয়ে ভারতের বৈশ্বিক উৎপাদনকেন্দ্রে পরিণত হওয়ার স্বপ্ন পূরণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
চীনের ওপর বিশাল আকারের শুল্কারোপ থেকে সরে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত সপ্তাহে দুই দেশের প্রতিনিধিরা সুইজারল্যান্ডে একটি চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করার পর রাতারাতি চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক ১৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে। ভারতের ওপর ২৭ শতাংশ শুল্কারোপ করেছেন ট্রাম্প।
দিল্লিভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অজয় শ্রীবাস্তব মনে করেন, ওয়াশিংটন-বেইজিং বাণিজ্যিক সমঝোতার ফলে যেসব উৎপাদনবিষয়ক বিনিয়োগ উদ্যোগ চীন থেকে ভারতে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল, এখন সেগুলো হয় থেমে যাবে অথবা আবার চীনে চলে যাবে।
অজয় আরও বলেন, ভারতের কম খরচে পণ্য উৎপাদনব্যবস্থা হয়তো টিকে যাবে, কিন্তু মানগত বৃদ্ধি ঝুঁকির মুখে পড়ে যাবে।
গত মাসে মার্কিন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান অ্যাপল তাদের আইফোন তৈরির বেশির ভাগ কারখানা চীন থেকে সরিয়ে ভারতে নিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিল। দিল্লিতে তখন যে উৎসাহ ও আশাবাদ দেখা গিয়েছিল, সাম্প্রতিক মনোভাব তার পুরো বিপরীত চিত্র তুলে ধরছে।
যদিও অ্যাপলের আইফোন তৈরির কারখানা চীন থেকে ভারতে স্থানান্তরের সম্ভাবনা এখনো পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। অ্যাপল এ বিষয়ে এখনো মুখ খোলেনি।
যদিও অ্যাপলের আইফোন তৈরির কারখানা চীন থেকে ভারতে স্থানান্তরের সম্ভাবনা এখনো পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। অ্যাপল এ বিষয়ে এখনো মুখ খোলেনি।যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবশ্য নিজেই চান না, অ্যাপল ভারতে তাদের কারখানা নির্মাণ করুক। এ বিষয়ে ট্রাম্প একবার বলেছিলেন, তিনি অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টিম কুককে ভারতে কারখানা নির্মাণ না করার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর যুক্তি, উচ্চ শুল্ক আরোপ করা দেশগুলোর একটি ভারত।
এ বিষয়ে ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের অর্থনীতিবিদ শিলান শাহ বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য পণ্য সরবরাহে ভারত খুব ভালোভাবে চীনের বিকল্প দেশ হয়ে উঠতে পারে। যদিও এ কথা তিনি সুইজারল্যান্ডে ওয়াশিংটন-বেইজিং বৈঠকের আগে বলেছিলেন।
সে সময় শিলান শাহ আরও বলেছিলেন, ভারত যুক্তরাষ্ট্রে সেসব পণ্য রপ্তানি করে, তার ৪০ শতাংশ পণ্য চীন যেসব পণ্য রপ্তানি করে, তার সঙ্গে মেলে।
শুল্কারোপের কারণে চীনের পণ্য সরবরাহে যে শূন্যতা তৈরি হচ্ছিল, তা পূরণে ভারতীয় রপ্তানিকারকেরা আগেভাগেই প্রস্তুত হয়ে আছেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, ভারতে নতুন রপ্তানি আদেশ ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
এখন ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনর্গঠনের যে ঘোষণ আসতে চলেছে, তাতে নয়াদিল্লির স্বপ্ন ভাঙতে যাচ্ছে।
কয়েকজন বিশ্লেষক অবশ্য এখনো তেমনটা মনে করছেন না। বরং তাঁরা বিশ্বাস করেন, কৌশলগত দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে যে বিশাল দূরত্ব এখনো রয়ে গেছে, তাতে ভারত দীর্ঘ মেয়াদে লাভবান হবে।
শুল্কারোপের কারণে চীনের পণ্যসরবরাহে যে শূন্যতা তৈরি হচ্ছিল, তা পূরণে ভারতীয় রপ্তানিকারকেরা আগেভাগেই প্রস্তুত হয়ে আছেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে যে ভারতে নতুন রপ্তানি আদেশ ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।একটি সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে ভারতও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করছে। এর মধ্যে চীন ত্যাগের যে প্রবণতা তৈরি হয়েছে, তা এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ভারতকে সুবিধাজনক অবস্থানে নিয়ে যেতে পারে। বৈশ্বিক কোম্পানিগুলো তাদের পণ্য সরবরাহব্যবস্থা বৈচিত্র্যময় করতে তাদের কার্যক্রম অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে।
আরও পড়ুনআইফোনের কারখানা সরালে কার বেশি ক্ষতি হবে ভারত নাকি যুক্তরাষ্ট্রের১৬ মে ২০২৫ভারতের বৈশ্বিক কারখানা হয়ে ওঠার আশা ভেস্তে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হওয়ার কারণ শুধু চীন একা নয়, বরং এশিয়ার অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী দেশও এই প্রতিযোগিতায় রয়েছে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ সোনাল ভার্মা ও অরুদিপ নন্দী।
জাপানের বৃহৎ আর্থিক সেবা ও বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান নমুরার এই দুই অর্থনীতিবিদ বলেন, বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো ভিয়েতনামের মতো দেশের ওপর থেকে তাদের নজর পুরোপুরি সরিয়ে নেয়নি।
এ মাসের শুরুতে এই দুই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, সুতরাং, ভারতের জন্য এই সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগাতে হলে শুধু শুল্কভিত্তিক সুবিধা নিলেই হবে না, বরং ব্যবসা সহজীকরণে বাস্তব ও কার্যকর সংস্কার নিশ্চিত করাও জরুরি।
আরও পড়ুনঅ্যাপল ভারতে নয়, যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য উৎপাদন করুক: চান ট্রাম্প১৫ মে ২০২৫