রংপুরে বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে ফসলের ক্ষেত, শঙ্কায় চাষি
Published: 21st, May 2025 GMT
রংপুরে গত তিনদিনের বৃষ্টি এবং তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফসলের অনেক ক্ষেত তলিয়ে গেছে। ফলে ফসল নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন চাষিরা। কৃষি বিভাগের দাবি, পানি দ্রুত নেমে গেলে ক্ষতির আশঙ্কা কমবে।
বুধবার (২১ মে) সকাল ১০টা পর্যন্ত রংপুরে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগের দুই দিনে প্রায় ২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। এতে নগরীর অলি-গলি, রাস্তাঘাট ও প্রায় ২০-২৫টি গ্রাম হাঁটু পানির নিচে ডুবে যায়।
চাষিরা জানান, রংপুরের অনেক এলাকায় এখনো ধান মাড়াই শেষ হয়নি। ধান কেটেও তা ঘরে তুলতে পারেননি অনেক কৃষক। বৃষ্টির কারণে জমিতে জমে থাকা পানি কয়েক দিনের মধ্যে না কমলে ধান ঘরে তোলা সম্ভব নয় বলে জানান চাষিরা।
আরো পড়ুন:
অতিবৃষ্টিতে পানির নিচে ভারতের ‘সিলিকন ভ্যালি’, নিহত ৩
দিনাজপুরে আমের বাম্পার ফলন স্বপ্ন দেখাচ্ছে
সবজির শহরখ্যাত মিঠাপুকুরের রানীপুকুরে এখন শুধু পানি আর দীর্ঘশ্বাস। নয়াপাড়া, তাজনগর, আফজালপুর, ভক্তিপুর, বলদীপুকুরসহ অধিকাংশ এলাকার ক্ষেত এখন পানিতে নিমজ্জিত। ধান, আদা, শাক-সবজি সবই পানির নিচে।
পূর্বপাড়া গ্রামের কৃষক মোস্তফা মিয়া বলেন, “ঋণ নিয়ে জমিতে সবজি আবাদ করেছি। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সব শেষ। এক একরের কাঁকরোল, করলা, শসার সব গাছই পানির নিচে। পানি না কমলে সব গাছ মরে যাবে।”
কৃষক আমিন আলী বলেন, “গত বছরের সুদের টাকা এখনো শোধ হয়নি। এবারো ঋণে জমি আবাদ করেছি। ফসল ঘরে তোলার আগেই সব ডুবে গেল। এখন কান্না ছাড়া উপায় নেই।”
মিঠাপুকুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ সাইফুল আবেদীন বলেন, “কয়েক হেক্টর জমির ফসল পানিতে ডুবে গেছে। পানি নামা শুরু করায় ক্ষতির আশঙ্কা কম। প্রায় তিন হেক্টর জমি ঝুঁকিতে রয়েছে।”
রংপুরের কাউনিয়ায় তিস্তা নদীর পানি হঠাৎ বৃদ্ধিতে ভেসে গেছে কৃষকদের স্বপ্ন। নদীতে জেগে ওঠা চরে স্বপ্ন নিয়ে বাদাম চাষ করেছিলেন কৃষকরা, কিন্তু পানির স্রোতে ১৭টি চরের অধিকাংশ বাদাম ক্ষেত তলিয়ে গেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, তিস্তার পানি বৃদ্ধি ও বৃষ্টির কারণে বাদাম ক্ষেতগুলো তলিয়ে গেছে। ক্ষেতে অনেক কৃষকের তুলে রাখা বাদাম ভেসে গেছে নদীর স্রোতে। চাষিরা জানান, যদি পানি দ্রুত নেমে যায় তবে ক্ষতি কিছুটা কম হতে পারে। পানি বেশিদিন থাকলে ফসল পচে যাবে এবং বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে তাদের।
আলু চাষে লোকসান পুষিয়ে নিতে অনেকেই বাদাম চাষ করেছিলেন। বাদাম পাকতে না পারায় তারা বাধ্য হয়ে পানি থেকে অসময়ে বাদাম তুলে নিচ্ছেন। পুরো কাউনিয়া উপজেলার প্রায় সব চরেই বাদাম চাষ হয়েছে; যার অধিকাংশই এখন পানিতে ডুবে রয়েছে।
পাঞ্জরভাঙ্গা গ্রামের কৃষক সোনামিয়া জানান, তিনি ৪ দোন (প্রায় ১০০ শতক) জমিতে বাদাম চাষ করেছিলেন। সমস্ত ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি থেকে কিছু বাদাম তুললেও বাজারে তার ভালো দাম পাওয়া যাবে না, খরচই উঠবে না।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মাহমুদা খাতুন বলেন, “গত তিনদিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে রংপুরে। এতে তিস্তার তীরবর্তী নিম্ন অঞ্চলগুলোর কিছু উঠতি ফসল যেমন বাদাম এবং কাঁচা মরিচের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। উঁচু সমতল জমিগুলোতে তেমন ক্ষতি হয়নি। নিমজ্জিত ফসলি জমির পানি দ্রুতই নেমে গেছে।”
ঢাকা/আমিরুল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।
দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।
ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।
৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।
ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট