রংপুরে গত তিনদিনের বৃষ্টি এবং তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফসলের অনেক ক্ষেত তলিয়ে গেছে। ফলে ফসল নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন চাষিরা। কৃষি বিভাগের দাবি, পানি দ্রুত নেমে গেলে ক্ষতির আশঙ্কা কমবে।

বুধবার (২১ মে) সকাল ১০টা পর্যন্ত রংপুরে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগের দুই দিনে প্রায় ২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। এতে নগরীর অলি-গলি, রাস্তাঘাট ও প্রায় ২০-২৫টি গ্রাম হাঁটু পানির নিচে ডুবে যায়। 

চাষিরা জানান, রংপুরের অনেক এলাকায় এখনো ধান মাড়াই শেষ হয়নি। ধান কেটেও তা ঘরে তুলতে পারেননি অনেক কৃষক। বৃষ্টির কারণে জমিতে জমে থাকা পানি কয়েক দিনের মধ্যে না কমলে ধান ঘরে তোলা সম্ভব নয় বলে জানান চাষিরা।

আরো পড়ুন:

অতিবৃষ্টিতে পানির নিচে ভারতের ‘সিলিকন ভ্যালি’, নিহত ৩

দিনাজপুরে আমের বাম্পার ফলন স্বপ্ন দেখাচ্ছে

সবজির শহরখ্যাত মিঠাপুকুরের রানীপুকুরে এখন শুধু পানি আর দীর্ঘশ্বাস। নয়াপাড়া, তাজনগর, আফজালপুর, ভক্তিপুর, বলদীপুকুরসহ অধিকাংশ এলাকার ক্ষেত এখন পানিতে নিমজ্জিত। ধান, আদা, শাক-সবজি সবই পানির নিচে। 

পূর্বপাড়া গ্রামের কৃষক মোস্তফা মিয়া বলেন, “ঋণ নিয়ে জমিতে সবজি আবাদ করেছি। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সব শেষ। এক একরের কাঁকরোল, করলা, শসার সব গাছই পানির নিচে। পানি না কমলে সব গাছ মরে যাবে।”

কৃষক আমিন আলী বলেন, “গত বছরের সুদের টাকা এখনো শোধ হয়নি। এবারো ঋণে জমি আবাদ করেছি। ফসল ঘরে তোলার আগেই সব ডুবে গেল। এখন কান্না ছাড়া উপায় নেই।”

মিঠাপুকুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ সাইফুল আবেদীন বলেন, “কয়েক হেক্টর জমির ফসল পানিতে ডুবে গেছে। পানি নামা শুরু করায় ক্ষতির আশঙ্কা কম। প্রায় তিন হেক্টর জমি ঝুঁকিতে রয়েছে।”

রংপুরের কাউনিয়ায় তিস্তা নদীর পানি হঠাৎ বৃদ্ধিতে ভেসে গেছে কৃষকদের স্বপ্ন। নদীতে জেগে ওঠা চরে স্বপ্ন নিয়ে বাদাম চাষ করেছিলেন কৃষকরা, কিন্তু পানির স্রোতে ১৭টি চরের অধিকাংশ বাদাম ক্ষেত তলিয়ে গেছে।

সরেজমিন দেখা যায়, তিস্তার পানি বৃদ্ধি ও বৃষ্টির কারণে বাদাম ক্ষেতগুলো তলিয়ে গেছে। ক্ষেতে অনেক কৃষকের তুলে রাখা বাদাম ভেসে গেছে নদীর স্রোতে। চাষিরা জানান, যদি পানি দ্রুত নেমে যায় তবে ক্ষতি কিছুটা কম হতে পারে। পানি বেশিদিন থাকলে ফসল পচে যাবে এবং বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে তাদের।

আলু চাষে লোকসান পুষিয়ে নিতে অনেকেই বাদাম চাষ করেছিলেন। বাদাম পাকতে না পারায় তারা বাধ্য হয়ে পানি থেকে অসময়ে বাদাম তুলে নিচ্ছেন। পুরো কাউনিয়া উপজেলার প্রায় সব চরেই বাদাম চাষ হয়েছে; যার অধিকাংশই এখন পানিতে ডুবে রয়েছে।

পাঞ্জরভাঙ্গা গ্রামের কৃষক সোনামিয়া জানান, তিনি ৪ দোন (প্রায় ১০০ শতক) জমিতে বাদাম চাষ করেছিলেন। সমস্ত ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি থেকে কিছু বাদাম তুললেও বাজারে তার ভালো দাম পাওয়া যাবে না, খরচই উঠবে না।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মাহমুদা খাতুন বলেন, “গত তিনদিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে রংপুরে। এতে তিস্তার তীরবর্তী নিম্ন অঞ্চলগুলোর কিছু উঠতি ফসল যেমন বাদাম এবং কাঁচা মরিচের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। উঁচু সমতল জমিগুলোতে তেমন ক্ষতি হয়নি। নিমজ্জিত ফসলি জমির পানি দ্রুতই নেমে গেছে।”

ঢাকা/আমিরুল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফসল

এছাড়াও পড়ুন:

উৎসব ঘুরে প্রেক্ষাগৃহে ‘বাড়ির নাম শাহানা’

কৈশোর পেরোনোর আগেই শাহানাবাড়ির মেয়ে দীপার বিয়ে হয়ে যায়। স্বামীর নির্যাতনের জাল ছিঁড়ে নিজের মতো করে বাঁচতে চেয়েছেন তিনি। নব্বইয়ের দশকের পটভূমিতে দীপার বেঁচে থাকার লড়াইয়ের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে বাড়ির নাম শাহানা।

সত্য কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত বাড়ির নাম শাহানায় দীপা চরিত্রে অভিনয় করেছেন আনান সিদ্দিকা। ছবিটি যৌথভাবে প্রযোজনা করেছে কমলা কালেক্টিভ ও গুপী বাঘা প্রোডাকশন্স লিমিটেড।

নির্মাণের বাইরে লীসা গাজী লেখক, নাট্যকর্মী হিসেবে পরিচিত

সম্পর্কিত নিবন্ধ