বেড়েছে টিসিবির পণ্যের দাম, হতাশ নিম্নআয়ের মানুষ
Published: 22nd, May 2025 GMT
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে সারা দেশের মতো রাজশাহীতেও ট্রাকে করে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ মে) শুরু হওয়া এ কার্যক্রম চলবে আগামী ৩ জুন পর্যন্ত।
টিসিবির ট্রাক থেকে বিক্রি করা হচ্ছে—চিনি, সয়াবিন তেল ও ডাল। এবার প্রতিটি পণ্যের দামই আগের তুলনায় বেড়েছে। এতে হতাশ হয়েছেন নিম্নআয়ের মানুষরা।
টিসিবি দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গতবার চিনি বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৭০ টাকায়, এবার সেটি দাঁড়িয়েছে ৮০ টাকায়। মসুরের ডালের দাম ছিল ৬০ টাকা, এবার বেড়ে হয়েছে ৮০ টাকা। সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা লিটার দরে, আগে তা ছিল ১০০ টাকা।
মূল্যবৃদ্ধির কারণে ভোক্তাদের মধ্যে দেখা গেছে ক্ষোভ ও হতাশা। অনেকেই বলছেন, বাজারমূল্যের সঙ্গে টিসিবির পণ্যের দামের ব্যবধান খুব একটা না থাকলে এ পণ্য আর নিম্নআয়ের মানুষের কোনো উপকারে আসবে না।
বৃহস্পতিবার রাজশাহীর হজরত শাহ মখদুম (রহ.
আরেক ক্রেতা ফারুক হোসেন বলেন, “সরকার তো আমাদের সঙ্গে ব্যবসা করছে না। টিসিবির মাল বিক্রির উদ্দেশ্যই হচ্ছে সাধারণ মানুষকে একটু স্বস্তি দেওয়া। তাহলে এই দাম বাড়ানোর যৌক্তিকতা কোথায়? আমরা এটা আশা করিনি।”
টিসিবির রাজশাহী আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আতিকুর রহমান বলেছেন, “বাজারে সব পণ্যের দামই বেড়েছে। তাই, আগের দামে পণ্য দেওয়া সম্ভব হয়নি। কিছুটা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে, তারপরও প্রচণ্ড ভিড়। আমরা সবাইকে ধৈর্য্য ধরে পণ্য নিতে বলছি।”
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ৩০টি ওয়ার্ডের নির্ধারিত ১০টি পয়েন্টে প্রতিদিন (শুক্রবার ও শনিবারসহ) এই ট্রাকসেল চলবে আগামী ৩ জুন পর্যন্ত। প্রতিটি পয়েন্ট থেকে ৪০ জন করে মোট ৪ হাজার পরিবার ৫১৫ টাকার প্যাকেজে টিসিবির পণ্য সংগ্রহ করতে পারবেন। ঈদ উপলক্ষে এ বিশেষ ট্রাকসেলের পাশাপাশি প্রতি মাসে টিসিবি কার্ডধারীদের মাঝেও নিয়মিতভাবে পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
ঢাকা/কেয়া/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শত্রুতার জেরে সাত গরুকে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ, মারা গেছে ৩টি
গোপালগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তিনটি গরু হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আরো চারটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ফলে দুই কৃষক পরিবারের অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। গত শনিবার (১ নভেম্বর) মধ্যরাতে সদর উপজেলার সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কীভাবে গরুগুলো মারা গেছে তা খতিয়ে দেখতে নমুনা সংগ্রহ করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। পুলিশ বলছে, তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।
আরো পড়ুন:
নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত
গাইবান্ধায় ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা: মামলা দায়ের
এলাকাসাসী জানান, সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামের দুই ভাই মো. রাসুল গাজী ও হাসিব গাজী কৃষি কাজ করে সংসার চালান। তারা খামার করে কয়েকটি গরু লালন-পালন করছেন। শনিবার মধ্যরাত সাড়ে ১২টার দিকে গরুর গোঙানির শব্দ শুনে পাশের বাড়ির এক আত্মীয় ছুটে গিয়ে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন দুই ভাইকে। তারা স্থানীয় পশু চিকিৎসককে খবর দেন। সকাল হওয়ার আগেই তিনটি গরু মারা যায়। একই গোয়াল ঘরে থাকা একটি বড় ষাঁড়, একটি বাছুর ও অপর গোয়ালে থাকা দুটি ষাঁড় এখনো অসুস্থ।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মো. রাসুল গাজী জানান, শত্রুতা করেই খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তাদের গরুগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। রাতেই টের পেয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেও বাঁচানো যায়নি গরুগুলো। দুই ভাইয়ের আরো চারটি গরু অসুস্থ রয়েছে। এতে তাদের অন্তত ৫-৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তিনি জানান, এ ঘটনায় সদর থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
কারা তাদের গরু হত্যা করেছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাসুল গাজী বলেন, “ঘর থেকে বের হয়ে কয়েকজনকে দৌঁড়ে যেতে দেখেছি। তাদের চেহারা দেখতে পারিনি। ফলে কাউকে চিনতে পারিনি।”
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হাসিব গাজী বলেন, “কারো সঙ্গে আমাদের শত্রুতা থাকতেই পারে। এই অবলা পশুগুলো কার কী ক্ষতি করেছে। কোন অপরাধে এদের হত্যা করা হলো। আমরা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
এলাকাবাসী মো. ইমদাদ শেখ বলেন, “গত শনিবার রাতে বৃষ্টি হয়। এই সুযোগে গরুগুলোকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।”
গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোবিন্দ চন্দ্র সর্দার বলেন, “সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে কয়েকটি গরুকে বিষ খাওয়ানো হয় এমন খবর পেয়ে সকালে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যান। তিনি অসুস্থ গরুগুলোকে চিকিৎসা দেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পয়জনজনিত কারণেই গরুগুলো মারা গেছে। মারা যাওয়া গরুর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই গরু তিনটির মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।”
গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে তদন্ত শুরু করি। মারা যাওয়া গোরুগুলোর নমুনা সংগ্রহ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/বাদল/মাসুদ