অবরুদ্ধ ব্যাংক হিসাবগুলো ডিজিএফআইয়ের, সাবেক ডিজি হামিদুলের নয়: দুদক
Published: 8th, July 2025 GMT
দুর্নীতির অনুসন্ধান চলমান থাকায় প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হকের চারটি ব্যাংক হিসাব সোমবার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।
আজ মঙ্গলবার দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অবরুদ্ধ হওয়া ব্যাংক হিসাবগুলো ডিজিএফআইয়ের, সংস্থাটির সাবেক মহাপরিচালক হামিদুল হকের নয়।
দুদক জানিয়েছে, ডিজিএফআইয়ের চারটি প্রাতিষ্ঠানিক হিসাব প্রতিষ্ঠানের নামে না হয়ে ধারাবাহিকভাবে প্রতিষ্ঠান প্রধানের নামে হয়েছে। এ কারণে করণিক ত্রুটির কারণে ওই ব্যাংক হিসাবগুলো ব্যক্তিগত হিসেবে অবরুদ্ধ হয়েছে। এটি একটি তথ্যসূত্রগত ত্রুটি, যা সংশোধন করা হবে।
দুদক সোমবার লিখিতভাবে আদালতকে জানিয়েছিল, হামিদুল হকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। তিনি তার ব্যাংক হিসাবের টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করছেন। হিসাবগুলো অবরুদ্ধ করার আদেশ চায় দুদক। দুদকের পক্ষে সহকারী পরিচালক নওশাদ আলী এ আবেদন করেন।
এর আগে গত ২১ এপ্রিল হামিদুল ও তার স্ত্রী নুছরাত জাহান মুক্তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অপরাধী কোন বাহিনীর তা যেন দেখা না হয়: নাহিদ ইসলাম
অন্তর্বর্তী সরকার, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও অন্যান্য আদালতের কাছে আবেদন জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, যে অপরাধী, তাঁকে যেন আইনের আওতায় আনা হয়। সে কোন বাহিনীর, সেটা যাতে দেখা না হয়।
আজ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলায় ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়ে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।
নাহিদ সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য বাহিনীর যাঁরা জুলাই গণ–অভ্যুত্থানসহ গুমের ঘটনায় যুক্ত, তাঁদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। কোনো বাহিনীর কেউ যাতে পার পেয়ে না যায়। কারণ, তাঁরা দেখেছেন, গুমের ঘটনায় অনেক অভিযোগ এসেছে। তিনি নিজে অভিযোগ দিয়েছেন ডিজিএফআইয়ের যে অফিসাররা তাঁকে তুলে নিয়ে গেছেন, হেনস্থা করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া সেনাবাহিনীর বিভিন্ন কর্মকর্তা, র্যাবে যাঁরা ছিলেন, ডিজিএফআইয়ে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা গুমের ঘটনায় এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে ঘটনায় নেতিবাচক ভূমিকা পালন করেছেন। রামপুরা, বাড্ডার ঘটনায় বিজিবিতে একজন সেনা কর্মকর্তাকে দেখা গেছে। তাঁদের কিন্তু এখনো গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।
ফলে সরকার, ট্রাইব্যুনাল ও আদালতের কাছে আবেদন জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, যে অপরাধী, তাঁকে যেন আইনের আওতায় আনা হয়। তিনি কোন বাহিনীর, সেটা যাতে দেখা না হয়। যাঁরা জনগণের ওপরে এই (জুলাই) হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন, গুম করেছেন, নির্যাতন করেছেন এবং সরকারকে ফ্যাসিবাদী হতে সহায়তা করেছেন, ক্ষমতায় থাকতে সহায়তা করেছেন, তাঁদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
ট্রাইব্যুনালের কাছে কী প্রত্যাশা, তা উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, এত মানুষ, এত ভাইবোনেরা শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন। সবাই ন্যায়বিচার পাবেন। আওয়ামী লীগ, পুলিশসহ এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বিচারের আওতায় আসবেন, তাঁদের শাস্তি হবে। এই ন্যায়বিচার একটা নির্দশন হয়ে থাকবে—শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, পৃথিবীর জন্য। যে কেউ যদি স্বৈরশাসন কায়েম করতে চায়, জনগণের ওপর আক্রমণ চালায়, জনগণকে হত্যা করে, তার পরিণতি আসলে কী হয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার কার্যক্রমে সন্তোষ্টি প্রকাশ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, এটা (শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনের বিরুদ্ধে মামলা) কিন্তু একটি মামলা। এ মামলার একটা রাজনৈতিক দিক যে শেখ হাসিনাকে বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে। এ ছাড়া ট্রাইব্যুনালেই অনেক মামলা রয়েছে এবং সাধারণ আদালতে আরও অনেক মামলা রয়েছে। গুমের মামলা রয়েছে। ফলে বিচারটাকে সার্বিকভাবে দেখতে হবে। কারণ, সাধারণ আদালতে যেসব মামলা, সেগুলো সম্পর্কে ইতিবাচক কথা শুনতে পাচ্ছেন না। অনেকে জামিন নিয়ে বের হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা কী, সেটা তাঁরা জানতে পারছেন না। ফলে সেই মামলাগুলো যাতে যথাযথ গুরুত্বসহকারে দেখা হয়, এই আবেদন তাঁদের থাকবে।